অলৌকিক কারামত: সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড থেকে মুরিদকে উদ্ধার করলেন
রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত রাসুল (সা.)-কে অনুসরণের মাধ্যমে যেমনি মহান আল্লাহ্কে ভালোবাসতে হয়, তেমনি হযরত রাসুল (সা.)-এর মাধ্যমেই আল্লাহর দয়া ও সাহায্য পেতে হয়। নবুয়তের যুগে মু’মিনগণ সমকালীন যুগের নবি ও রাসুলের অনুসরণের মাধ্যমেই আল্লাহর সাহায্য পেয়েছেন। একইভাবে নবুয়ত পরবর্তী বেলায়েতের যুগে হযরত রাসুল (সা.)-এর সীরাজুম মুনিরার ধারক ও বাহক ‘মোজাদ্দেদে জামান’ বা যুগের ইমামের মাধ্যমেই আশেকে রাসুল মু’মিনগণ আল্লাহর দয়া ও অলৌকিক সাহায্য লাভ করে থাকেন। এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ্ প্রমাণ করেছেন, মোজাদ্দেদ বা যুগের ইমামের প্রচারিত মোহাম্মদী ইসলাম হযরত রাসুল (সা.)-এর ইসলাম।
নিন্মে এমনই একজন আশেকে রাসুলের ঘটনা উপস্থাপন করা হলো, যিনি মহাবিপদে পড়ে আল্লাহর অপার দয়া লাভ করেছেন। অতঃপর বিপদ থেকে পরিত্রাণ পান। বিষয়টি ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট আশেকে রাসুলের নিজের ভাষা ও বর্ণনায় উপস্থাপন করা হলো। বর্ণণাকারী বলেন- “আমি আশেকে রাসুল সিমজল হোসেন, রাজধানী ঢাকার কাওরান বাজারের বিএসইসি ভবনে ব্রাদারহুড সিকিউরিটিজ লিমিটেডে চাকুরি করি। আমি নিজের আত্মার মুক্তি এবং আল্লাহ্ তায়ালা ও হযরত রাসুল (সা.)-এর পরিচয় লাভ করার জন্য মহান সংস্কারক, মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী, যুগের ইমাম সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজানের কাছে তরিকা গ্রহণ করি। আমি এই মহামানবের প্রচারিত মোহাম্মদী ইসলামের শিক্ষা-দীক্ষা নেওয়ার পর থেকেই আমার জীবনে এক আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়। আমি বিভিন্নভাবে মহান আল্লাহর সাহায্য পেতে শুরু করি। যে ঘটনাটি আমি এখন উল্লেখ করব, তা ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ ফেব্রুয়ারির। সেদিন কাওরান বাজার বিএসইসি ভবনে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। আমার কর্মস্থল ছিল উক্ত ভবনের ৪র্থ তলায়। এই ভবনেই ছিল ইলেকট্রনিক মিডিয়া এনটিভি এবং আরটিভি চ্যানেলের সম্প্রচার কার্যালয়। ফলে আগুন লাগার সংবাদ মুহূর্তেই মিডিয়ায় সম্প্রচার হতে থাকে। এদিকে অগ্নিকাণ্ডের পর সময় যত গড়াচ্ছে, আগুনের বিস্তৃতি, তীব্রতা ও ভয়াবহতা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই কঠিন অবস্থায় আমি-সহ আটজন ৪র্থ তলায় আটকা পড়ি। অগ্নিকাণ্ড সিঁড়ির গোড়া থেকে সূত্রপাত হওয়ায় আমরা কেউ সিঁড়ি বেয়ে নামা তো দূরের কথা, সিঁড়ির কাছেই যেতে পারছিলাম না।
এদিকে আগুন সিঁড়ি থেকে এসি ডাক্ট দিয়ে বিভিন্ন ফ্লোরের ফলস সিলিং ফোম পুড়তে থাকে। সর্বত্র ধোঁয়ার তীব্রতায় নিকষ কালো অন্ধকার নেমে আসে। আমাদের আটজনের মানসিক অবস্থা তখন এতটাই বিপর্যস্ত যে, আমরা তখন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুণছি।
এদিকে আমার সাথে থাকা সাতজনই তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাহিরে লাফিয়ে পড়ল। তখন আমি ধোঁয়ায় এমনভাবে আচ্ছন্ন যে, দু’চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। প্রচণ্ড কাশিতে শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল। এর পূর্বে মোবাইলে কয়েকজনের সাথে কথা বলে বিদায় নিয়ে নিশ্চিত মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম। তারাও আমাকে বাঁচানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসে খবর দিয়েছে বলে সংবাদ জানায়। সমস্ত ভবনে তখন আমার মতো শত শত লোকের আহাজারি চলছে। এসময় আমি নিজেকে সবচাইতে বেশি অসহায় ভাবছিলাম। ঠিক ঐ মুহূর্তে স্মরণে আসে- আমার মহান মোর্শেদ দয়াল বাবাজান সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজানের কথা। আমি তখন অঝোর নয়নে কেঁদে কেঁদে বাবাজানকে ডাকতে থাকি। আরজ করি- বাবাজান! আমি আপনার একজন পাপী মুরিদ সন্তান। আজ ভয়াল অগ্নিকাণ্ডে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছি। জগতে আপনি ছাড়া আর কেউ নেই যে, আমাকে বাঁচাতে পারে। ওগো দয়াল বাবাজান! আমাকে দয়া করুন। এভাবে আজিজি করে যখন আমি কাঁদছিলাম, ঠিক তখনই অলৌকিকভাবে আমি আমার মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট বাবা দেওয়ানবাগীর সুমধুর কণ্ঠের আওয়াজ শুনতে পেলাম। তিনি তখন পরম মমতা মাখা কণ্ঠে আমাকে ডাকলেন- ‘সিমজল মিয়া! এদিকে আসুন।’ সেই মুহূর্তে বাবাজানের কণ্ঠ শুনে প্রচণ্ড ধোঁয়ার মাঝে অনুমান করে আমি দয়াল বাবাজানের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করি। অতঃপর সামনে এগুতেই দেখতে পাই, আমার মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) দয়াল বাবাজান দয়া করে মই লাগিয়ে ৪র্থ তলায় আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। তারপর বাবাজান নিজ হাতে আমাকে ধরে মইয়ে তুলে দেন এবং তৎক্ষণাৎ অন্ধকার ধোঁয়ার মাঝে অদৃশ্য হয়ে যান। তখন আমি মই বেয়ে নিচে নেমে আসি। তারপর ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা আমাকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু আমি তখন সম্পূর্ণ সুস্থ। আমাকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত পেয়ে আত্মীয়-স্বজন ও সহকর্মীরা আনন্দ করতে থাকে, অথচ তখন আমার বুক ফেটে কানড়বা আসছিল। সেই কান্না ছিল শুকরিয়ার কান্না। মহান মোর্শেদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও প্রেমের কান্না। দয়াল বাবাজানের দয়া ও সাহায্যে সেদিন আমি ভয়ানক অগ্নিকাণ্ড থেকে নবজীবন লাভ করি।”
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের সহবতে এসে তাঁর সুমহান শিক্ষা ও আদর্শ হৃদয়ে ধারণ অসংখ্য মানুষ ‘আশেকে রাসুল’ হওয়ার পাশাপাশি আপদ, বিপদ, বালা মুসিবত থেকে মহান আল্লাহর অলৌকিক দয়া ও সাহায্য লাভ করছেন। আমিন।
[তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৩১ থেকে সংকলিত]