Cancel Preloader

আশেকে রাসুলদের প্রাণের অনুষ্ঠান বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন – ড. পিয়ার মোহাম্মদ

‘আশেক’ শব্দের অর্থ প্রেমিক। সেই হিসেবে যিনি হযরত রাসুল (সা.)-কে ভালোবাসেন, তিনিই আশেকে রাসুল। রাসুলকে নিজের জান, মাল, পিতা-মাতা ও স্ত্রী-সন্তানের চেয়ে বেশি ভালোবেসে তাঁর দেখানো পথে ধ্যানমগ্ন হয়েই আশেকে রাসুল হওয়ার দিকে এগোতে হয়। তখন তার সাথে হযরত রাসুল (সা.)-এর রুহানি যোগসূত্র স্থাপিত হয় এবং তার পক্ষে দয়াল রাসুল (সা.) ও মহান আল্লাহ্ পাকের রহমত ও বরকত পেয়ে তাঁদের দিদার লাভ করা সম্ভব হয়। আমাদের মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) মোহাম্মদী ইসলামের শিক্ষা দিয়ে অনুসারীদের আশেকে রাসুল হওয়ার সেই সুযোগ করে দিয়েছেন।


দয়াল মোর্শেদ সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান আশেকে রাসুলদের কল্যাণে বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনের সূচনা করেন। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় নিজ মোর্শেদ ইমাম সৈয়দ আবুল ফজল সুলতান আহমদ (রহ.)-এর শুভ জন্মদিন স্মরণে প্রতি বছর বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনের আয়োজন করেছেন। তাঁর ওফাতের পর মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর আমাদের দয়াল মোর্শেদের শুভ জন্মদিন উপলক্ষ্যে একই ধারাবাহিকতায় বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনের আয়োজন করছেন। সময়ের বিবর্তনে বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনের কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন আর ঢাকায় এতো মানুষের সংকুলান না হওয়ায় ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালে অবস্থিত ‘বাবে বরকত’ দেওয়ানবাগ শরীফে ২০২২ সাল থেকে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে। এ বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনে রুহানিতে অসংখ্য মহামানব উপস্থিত হন। এছাড়া মোহাম্মদী ইসলামের অনুসারী সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ আশেকে রাসুল সমবেত হন। রাসুল প্রেমে মোহিত আশেকে রাসুলদের চোখের জলে ভেসে যায় সম্মেলন চত্বর। দয়াল মোর্শেদের স্মরণে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয় আকাশ বাতাস। এ প্রাণের মেলায় আশেকে রাসুলদের ক্বালবে ঢেউ খেলে যায় মহান আল্লাহ্ ও রাসুল (সা.)-এর রহমত ও বরকতের প্রবাহ। রাসুল প্রেমে আশেকে রাসুলদের জজবা হয়ে যায়। এ যেন আল্লাহ্ ও রাসুলের এক প্রেমের বাগান। যেখানে প্রেমের বিনিময়ে মিলে প্রেম। প্রাণের এ অনুষ্ঠানের সওদা শুধু শান্তি আর শান্তি।


হযরত রাসুল (সা.) দীর্ঘ পনের বছর হেরা গুহায় মোরাকাবা করে আল্লাহ্র কাছ থেকে রিসালাত ও ওহির মাধ্যমে শান্তির ধর্ম মোহাম্মদী ইসলাম লাভ করেন। বর্বর আরব জাতির যারা তাঁর মোহাম্মদী ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁকে ভালোবেসে তাঁর শেখানো পথে জীবন পরিচালিত করে আশেকে রাসুল হতে পেরেছিলেন, তারাই সফলকাম হয়েছেন। এখনও যারা দয়াল রাসুলের আদর্শকে আঁকড়ে ধরে তাঁর আশেক হতে পারেন, তারাই সফলকাম হয়ে থাকেন। মানব জীবন সার্থক করতে আশেকে রাসুল হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। সেজন্য মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী আমাদের দয়াল মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) সবাইকে আহম্মদি চরিত্র ধারণ করে আশেকে রাসুল হওয়ার তালিম দিয়েছেন। তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরি মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুরও একইভাবে তাগিদ দিচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয় এ বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন। এ সম্মেলনে দয়াল রাসুল (সা.)-এর আশেকগণ জমায়েত হন। যেখানে এতো আশেকে রাসুল হাজির হন সেখানে দয়াল রাসুল (সা.) প্রেমের টানে রুহানিতে হাজির হয়ে যান। সেজন্যই এ সম্মেলনে বয়ে যায় রহমতের ফল্গুধারা। যাদের অন্তর চক্ষু খোলা আছে, তারা দেখতে পারেন সৃষ্টিকর্তার সেই অপার লীলা। আশেকে রাসুলগণ আনন্দে হয় পাগলপারা। তারা এ সম্মেলনে হাজির হওয়ার জন্য সারা বছরই অপেক্ষায় থাকেন এবং দেশ ও বিদেশ থেকে ছুটে আসেন আধ্যাত্ম প্রেমের টানে। প্রাণের অনুষ্ঠানে আশেকে রাসুলগণ মনে প্রাণে অনুভব করেন রাসুল প্রেমের অনাবিল স্বাদ।


দয়াল রাসুল (সা.)-এর পরে বেলায়েতের যুগে অলী-আল্লাহ্গণ রাসুলের ক্বালবের শিক্ষা দিয়ে মানুষকে আশেকে রাসুল হওয়ার সুযোগ অব্যাহত রেখেছেন। বর্তমান সমস্যা সংকুল পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষের আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে আশেকে রাসুল হওয়া জরুরি। বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনে যোগদান করে আশেকে রাসুলগণ যেমন তাদের মর্যাদা বৃদ্ধির সুযোগ পান, তেমনি মুক্তিকামী অসংখ্য মানুষ নতুনভাবে আশেকে রাসুল হওয়ার পথে এগিয়ে যেতে পারেন। আখেরি জামানায় হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রবর্তিত মোহাম্মদী ইসলামকে জগতে পুনরুজ্জীবিত করার গুরু দায়িত্ব নিয়ে এসেছিলেন, মহান সংস্কারক সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান। তিনি আশেকে রাসুল হওয়ার শিক্ষা দিয়ে বিশ্বময় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস কাজ করে গেছেন। তাঁর প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় তিন কোটি মানুষ আশেকে রাসুল হয়েছেন এবং অনেকেই হযরত রাসুল (স.)-এর দিদার লাভ করেছেন। আশেকে রাসুলদের উত্তরোত্তর আত্মিক উন্নয়নের উদ্দেশ্যেই সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান হযরত রাসুল (সা.)-এর পর প্রথম বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন চালু করেছেন। মোহাম্মদী ইসলামের বর্তমান কাণ্ডারী ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর আরো বড়ো পরিসরে সেই সম্মেলন অব্যাহত রেখে আমাদের মতো নালায়েকদের অসীম রহমত ও বরকত হাসিল করে উপকৃত হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। সেজন্যই এই সম্মেলন আশেকে রাসুলদের প্রাণের অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।


বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনে অসংখ্য অলী-আল্লাহ্ উপস্থিত হন এবং তাঁদের অনেকেই মাজ্জ্বুব শ্রেণির ছদ্মবেশী অলী-আল্লাহ্। অনেকে এ অনুষ্ঠানকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য দায়িত্ব পালন করেন। সেজন্য এ মজলিসে হাজির হলে আল্লাহ্ পাক তাঁর বন্ধুদের ইজ্জতের খাতিরে বিশেষ রহমত দান করেন। এ রহমতের বরকতে মানুষের জীবনের মোড় সম্পুর্ণভাবে সুপরিবর্তিত হতে পারে। জগতের সবকিছুর বিনিময়ে যা অর্জন করা যায় না, তা প্রেম দিয়ে অর্জন করা যায়। সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান সেই সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন চালু করেন। ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) মোর্শেদ প্রেমে বিভোর হয়ে একইভাবে আয়োজন করছেন বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন। এ সম্মেলনের রহমত ও বরকতে পাপী মানুষেরও পাহাড়সম গুনাহ মাফ হয়ে আশেকে রাসুলে পরিণত হতে পারেন। আল্লামা জালালউদ্দিন রুমি (রহ.) বলেছেন- “এক জামানা সোহবতে বা আউলিয়া/বেহেতের আয সাদ সালাতাতে বেরিয়া।” অর্থাৎ- এক মুহূর্ত কোনো অলী-আল্লাহ্র সান্নিধ্যে থাকা এক শত বছর বেরিয়া (নিরহংকার) ইবাদত হতে উত্তম। (মসনবী শরীফ) পবিত্র কুরআনে অলী-আল্লাহ্গণের মর্যাদা সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে- “হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহ্কে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গ লাভ করো। (সূরা আত তাওবাহ ৯: আয়াত ১১৯) মহান আল্লাহ্র এ ঘোষণা থেকে সুষ্পষ্টভাবেই বুঝা যায় যে, সত্যাশ্রয়ী অলী-আল্লাহ্গণের সান্নিধ্য লাভের উদ্দেশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে যোগদান করা অত্যন্ত ফজিলত ও বরকতপুর্ণ কাজ। সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান চেয়েছেন আশেকে রাসুলদের মাঝে আল্লাহ্র বিশ্বাস এবং হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রতি প্রেম আরো বেশি করে জাগ্রত হোক। সেকারণে তিনি প্রতি বছরই বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন। মহান আল্লাহ্র অসীম রহমতে বর্তমান নেতৃত্বদানকারী মহামানবের নেতৃত্বে সেই ধারা চলছে একই পথ ধরে। আরো সম্প্রসারিত হচ্ছে আশেকে রাসুলদের প্রাণের অনুষ্ঠান বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন।


পবিত্র কুরআনের বর্ণনা অনুযায়ী ধর্ম পালনের অন্যতম লক্ষ্য হলো মু’মিন বা আশেকে রাসুল হওয়া। আশেকে রাসুল না হতে পারলে ইমানদার হওয়া যায় না। আশেকে রাসুল হওয়ার জন্য স্কুল, কলেজ বা বিশ্ব বিদ্যালয়ের কোনো ডিগ্রির প্রয়োজন হয় না। এ শুধুই প্রেম ভালোবাসার বিষয়। হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রেম হৃদয়ে ধারণ করতে পারলেই আশেকে রাসুল হওয়া যায়। মহান আল্লাহ্ নিজেও হযরত রাসুল (সা.)-কে ভালোবাসেন। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে- “হে মাহ্বুব (সা.)! আপনি বলে দিন, তোমরা যদি আল্লাহ্কে ভালোবাসতে চাও, তবে আমার অনুসরণ করো। তাহলে আল্লাহ্ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করে দেবেন। অবশ্যই আল্লাহ্ পরম ক্ষমাশীল ও পরম দয়াময়।” (সূরা আলে ইমরান ৩: আয়াত ৩১) সেই মহান রাসুল (সা.)-এর প্রকৃত প্রেমিকদের জন্য এবং প্রেমিক হওয়ার জন্য তাদের প্রাণের অনুষ্ঠান বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন। এ সম্মেলনের মাধ্যমে আশেকে রাসুলগণ আরো এগিয়ে যান সাধনার জগতে এবং অনেক নবাগত মানুষ রহমত ও বরকতের উসিলায় শুরু করেন আশেকে রাসুল হওয়ার নতুন যাত্রা।


মোহাম্মদী ইসলামের বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আশেকে রাসুলগণের মহামিলন ঘটে। অন্তর চক্ষুষ্মান আশেকে রাসুলগণের মতে এ বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনে রুহানিতে অনেক মহামানগণ উপস্থিত থাকে। মোহাম্মদী ইসলাম এখন বিশ্বের শতাধিক দেশে সফলভাবে প্রচারিত হচ্ছে। গত বছর ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘গ্লোবাল আশেকে রাসুল কনফারেন্স’ যা সারা বিশ্বের মানুষের মোহাম্মদী ইসলামের প্রতি আকর্ষণেরই বহিঃপ্রকাশ। বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে মুক্তিকামী মানুষের উচিত নিজেদেরকে খেদমতে নিয়োজিত রেখে প্রকৃত আশেকে রাসুল হওয়ার জন্য রহমত ও বরকতে সম্পৃক্ত হওয়া। আল্লাহ্ যেন আমাদের সকলকে এ সম্মেলনের খাতিরে দয়া করে সত্যিকার আশেকে রাসুল হওয়ার সুযোগ করে দেন। প্রাণের এ অনুষ্ঠানে আমাদের সবার অন্তরে যেন লাগে রাসুল প্রেমের সর্বোচ্চ দোলা সেটাই কামনা।
বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনে যেহেতু স্বয়ং রাসুল (সা.) তাঁর প্রিয় আশেকদের নিয়ে রুহানিতে উপস্থিত থাকেন, সেহেতু বিশ্ব আশেকে রাসুলদের সম্মেলনস্থল যে সেদিন রহমতের বন্যায় ভেসে যায়, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এ ধরনের অনুষ্ঠানে হাজির হতে পারাও সৌভাগ্যের ব্যাপার। এ সম্মেলনে মহামানবগণ রুহানিতে উপস্থিত থাকেন এবং তাঁরা জানেন আমরা সবাই সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজানের অনুসারী আশেকে রাসুল, সেহেতু আমাদের সবার সতর্ক থাকা উচিৎ। আমাদের সবারই এমনভাবে চলা দরকার, যেন আমাদের কোনো ধরনের ভুল বেয়াদবি না হয়, মনে রাখতে হবে আমাদের পাশেই হয়ত বসে আছেন উঁচু মার্গের অলী-আল্লাহ্। সেজন্য কোনো রকমের বেয়াদবি যেন না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আমাদের মতো পাপীতাপী বান্দাদের আল্লাহ্ পাকের অশেষ কৃপায় তাঁর প্রিয় হাবিবের প্রকৃত প্রেমিক বানিয়ে মুক্তির সম্ভাবনা সৃষ্টি করতেই বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনের আয়োজন। আমরা যেন আমাদের আচরণ দিয়ে সেই ফজিলত হাসিল করতে পারি। অন্তরের কালিমা মুছে অন্ধকার ঘরে আলো জ্বালাতেই আশেকে রাসুলদের প্রাণের অনুষ্ঠান বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন।


২০২২ সালের ২৩শে ডিসেম্বর ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলাধীন বাবে বরকত দেওয়ানবাগ শরীফেই মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর আয়োজন করেন বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন। এ সম্মেলনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রেমের টানে যেমন যোগদান করেন আশেকে রাসুলগণ, তেমনি বিশ্বের প্রায় ৩৭টি দেশ থেকে নানা বর্ণের আশেকে রাসুলগণ ছুটে আসেন এ সম্মেলনে। সমাজের কত উঁচু স্তরের মানুষ, বিদেশের কত ধনী ব্যক্তি সেখানে এসে মাটিতে বসেই যেন শান্তি পেয়েছেন। তারা সবকিছু ভুলে গিয়ে হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রেমে কান্নায় দুচোখ ভিজিয়েছেন। নানান দেশের নানান বর্ণের নানান ভাষার মানুষের সেদিন যেন এক ভাষা তা হলো অন্তরে রাসুল প্রেম। সেদিন মনে হয়েছে প্রেমের কোনো ভাষা নেই। এ হলো অন্তরের আকুলতা। তার বহিঃপ্রকাশ আশেকে রাসুলদের এ প্রাণের সম্মেলন।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর আগামী ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪, আবারো বাবে বরকত, দেওয়ানবাগ শরীফে আহ্বান করেছেন বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন। এ সম্মেলনে বাংলাদেশের সকল জেলা থেকে এবং সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ আশেকে রাসুল ও মুক্তিকামী মানুষ এসে যোগ দিবেন। সম্মেলন আবারো হয়ে উঠবে আল্লাহ্র অলীদের সম্মেলন এবং রাসুল প্রেমীদের এক অভাবনীয় মিলন মেলা। সারা পৃথিবীর রাসুল প্রেমীদের সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠান হবে এ বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন। বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন মানুষের মুক্তির অনুষ্ঠান, আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন পৃথিবীর সেরা আয়োজন। মহান আল্লাহ্ হাদিসে কুদসিতে এরশাদ করেন- “আমার বান্দা নফল ইবাদত দ্বারা আমার এত বেশি নিকটবর্তী হয়ে যায় যে, আমি তাকে ভালোবাসতে বাসতে তার কর্ণ হয়ে যাই, যে কর্ণ দ্বারা সে শোনে; চক্ষু হয়ে যাই, যে চক্ষু দ্বারা সে দেখে; হাত হয়ে যাই, যা দ্বারা সে ধরে; পা হয়ে যাই, যা দ্বারা সে হাঁটে। এরূপ ব্যক্তি যখন কোনো বিষয়ে প্রার্থনা করে, তখনই তা দান করে থাকি এবং যখন কোনো বিষয়ে আশ্রয় প্রাথনা করে, তখনই আশ্রয় দিয়ে থাকি। (বোখারী শরীফ ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৯৬৩; তাফসীরে মাজহারী ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫৮; মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক ১০ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৯৮; মেশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ১৯৭) সুতরাং এ বরকতময় অনুষ্ঠানে অলী-আল্লাহ্গণের সাথে মোনাজাতে শরিক হয়ে পরম করুণাময় আল্লাহ্ তায়ালার কাছে প্রার্থনা জানালে তিনি অবশ্যই আমাদের মনের বাসনা পূর্ণ করে প্রকৃত আশেকে রাসুল হওয়ার সুযোগ করে দিবেন।


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুরের আহ্বানে দয়াল মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর শুভ জন্মবার্ষিকী স্মরণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন। এ সম্মেলনে একদিকে যেমন আশেকে রাসুলগণের মহামিলন ঘটবে, অন্যদিকে একজন মহামানবের জন্ম উপলক্ষ্যে বিশেষ রহমত ও বরকত রয়েছে। এ বরকতময় অনুষ্ঠানে সরোয়ারে কায়েনাত, মোফাখ্খারে মওজুদাত হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা আহমদ মোজতবা (সা.) ও তাঁর আহলে বাইত, সাহাবায়ে কেরাম, খোলাফায়ে রাশেদিন, জামে আম্বিয়া, জামে আওলিয়া ও পৃথিবীর সমস্ত আশেকে রাসুল এবং মু’মিন মু’মিনাতের উপর বিশেষভাবে সওয়াব রেছানি হবে। আল্লাহ্ তায়ালার প্রিয় বন্ধুগণের এ অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে যে কারো পক্ষে রহমত বরকত হাসিল করা সম্ভব। মহান আল্লাহ্ পাকের নিকট প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদের এ বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন দয়া করে কবুল করেন। আমিন।


[লেখক: ইসলামি গবেষক; সাবেক অতিরিক্ত সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার]

সম্পর্কিত পোস্ট