ইমাম জাফর সাদেক (রহ.)
মুহাম্মদ জহিরুল আলম
দয়াময় রাব্বুল আলামিন এই বিশ্বব্রহ্মান্ডের সৃষ্টিকর্তা। সকল প্রশংসা তাঁরই। মানুষ তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। প্রতিনিধিত্বের গুণাবলি সম্পন্ন এই মানুষ স্রষ্টার পরিচয় ও মহিমা সর্বদা প্রকাশ ও প্রচার করবে, এছাড়া মানুষের লক্ষ্য হবে প্রভুর দাসত্ব করা। মহান আল্লাহ্, লক্ষ্যভ্রষ্ট মানব জাতিকে সঠিক পথনির্দেশনা দানের জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবি-রাসুল, অলী-আল্লাহ্ প্রেরণ করেন। সকলেই সমকালীন যুগের মানুষের মাঝে মহান প্রভুর পরিচয় তুলে ধরেছেন। সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মোহাম্মদ (সা.) মানব জাতির মুক্তির লক্ষ্যে ‘মোহাম্মদী ইসলাম’ তথা এক শান্তির ধর্ম দান করেছেন। বিদায় হজের খুৎবায় হযরত রাসুল (সা.) বলেন, “হে লোকসকল! আমি তোমাদের নিকট ঐ বস্তু রেখে যাচ্ছি, যা আঁকড়ে ধরলে তোমরা পথভ্রষ্ট (ধ্বংস) হবে না। এর মধ্যে একটি আরেকটি অপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। একটি হলো আল্লাহর কিতাব, এটি একটি লম্বা রশি সদৃশ। যা আকাশ থেকে জমিন পর্যন্ত বিস্তৃত। আর দ্বিতীয়টি হলো আমার আহলে বাইত।” (মেশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৫৬৯) মহান সংস্কারক, মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী, সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) বলেন, “হযরত রাসুল (সা.) ও আহলে বাইতকে ভালোবাসার নামই ইমান। তাঁদের ভালোবাসা যার মাঝে যতটুকু আছে, তিনি ততটুকু ইমানদার। আর মোহাম্মদী ইসলাম বলতে হযরত রাসুল (সা.) এবং আহলে বাইতকে ভালোবাসা এবং তাঁদের অনুসরণ করাকে বুঝায়।” (তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১২১২)
দয়াল রাসুল (সা.)-এর ওফাতের পর হতেই আহলে বাইতের উপর নেমে আসে একের পর এক আঘাত, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পালাবদলের গোলক ধাঁধার মোহে মুসলমানগণ আহলে বাইতের পরশময় স্পর্শ ভুলে গিয়ে নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে হযরত রাসুল (সা.)-এর ওফাতের ৫০ বছরের মধ্যেই ইসলামের চরম শত্রুরা মুসলমানের বেশ ধারণ করে, খলিফার আসনে বসে মোহাম্মদী ইসলামের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত হয়। তারা ক্ষমতার মসনদ হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে আহলে বাইত ও তাঁদের অনুসারীদের নির্মমভাবে হত্যা, নির্যাতন, কুৎসা রটনা, হত্যার পর দেহ মোবারক দীর্ঘ দিন নগরে ঝুলিয়ে রাখাসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যে করেনি। যা পৃথিবীর ইতিহাসকে কলংকিত করেছে।
আহলে বাইতের সদস্যগণ সকল প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে নিজেদেরকে উৎসর্গ করেছেন। কারবালার মর্র্মান্তিক ঘটনার পর ইমাম হোসাইন (রা.)-এর পুত্র ইমাম জয়নাল আবেদিন (রহ.) ইমামতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ইমাম জয়নাল আবেদিন (রহ.) তাঁর পিতার শাহাদতের পর প্রায় ৩৪ বছর জীবিত ছিলেন এবং সমগ্র জীবনকাল নিবেদিতচিত্তে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি ও শহিদ পিতার স্মরণের মধ্যে অতিবাহিত করেন। তিনি পিতামহ ইমাম আলী ইবনে আবু তালিব (কা.)-এর মতো রাতে নিজের পিঠে আটার বস্তা ও রুটি বহন করে মদীনার গরিব ও অভাবী পরিবারগুলোকে পৌঁছে দিতেন। তিনি শত্রুদের প্রতিও অতিথিপরায়ণ ছিলেন। পরবর্তীতে তাঁর পুত্র ইমাম বাকের (রহ.) ইসলামের শিক্ষা, সংস্কৃতির সংরক্ষণ, ক্রমবিকাশ এবং নেতৃত্ব দান করেন। সেসময় এমন কোনো ব্যক্তি ছিল না যে মদীনায় আসার পর ইমাম বাকের (রহ.)-এর সাক্ষাতের গৌরব না নিয়ে ফিরেছেন। ইমাম বাকের (রহ.)-এর সুযোগ্য পুত্র ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) নবি পরিবার এবং পূর্ব পুরুষের সকল গৌরব নিয়েই পৃথিবীতে আগমন করেন। আলোচ্য প্রবন্ধে আহলে বাইতের অন্যতম সদস্য ইমাম হযরত জাফর সাদেক বিন বাকের (রহ.) ও তাঁর গৌরবময় জীবনের কিছু দিক আলোচিত হয়েছে।
ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) আনুমানিক ৮৩ হিজরির ১৭ই রবিউল আউয়াল মদীনায় জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ইমাম বাকের (রহ.) এবং মাতা মহীয়সী রমণী হযরত উম্মে ফারওয়া (রহ.)। তাঁর দাদা ইমাম জয়নাল আবেদিন (রহ.)। তাঁর নানা কাসিম বিন মুহাম্মদ বিন আবু বকর একজন ‘ফকিহ’ ছিলেন। ইসলামের পরম মর্যাদার অধিকারী দুই মহামানবের নিকট হতে তিনি সরাসরি জ্ঞানার্জন করেন।
ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) নবি পরিবারের পবিত্র পরিবেশে বড় হয়ে উঠেন। শৈশব হতেই তিনি জ্ঞানার্জনে আত্মনিয়োগ করেন। ইমাম জাফর সাদেক (রহ.)-এর বয়স যখন ১৪ বছর, তখন তাঁর মহান দাদা ইমাম জয়নাল আবেদিন (রহ.) ওফাত লাভ করেন। যৌবনে তাঁর দৈহিক গঠন ছিল মধ্যমাকৃতি, মুখমণ্ডল ফর্সা ও উজ্জ্বল, অন্ধকার রাতে প্রজ্বলিত দীপের ন্যায় উজ্জ্বল দেখাতো, ছিলো কালো চুল ও সুঢৌল নাক। গালে কৃষ্ণ বর্ণের একটি তিলক ছিল। তিনি মূল্যবান ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোষাক পরিধান করতে পছন্দ করতেন। তিনি ছিলেন দৃঢ় দৃষ্টি সম্পন্ন ও গভীর জ্ঞানের অধিকারী। যখন তাঁর বয়স ৩৪ কিংবা ৩৫ বছর, তখন তাঁর পিতা ইমাম বাকের (রহ.) ওফাত লাভ করেন। তৎকালীন সময়ে ইমাম জাফর সাদেক (রহ.)-এর অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব, জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় সবাই মোহিত হয়ে তাঁর নিকট ছুটে যেতেন। তিনিই ছিলেন জ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দু। ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে উদার মনোভাব পোষণ করতেন। পবিত্র কুরআন, হাদিস ও ফিকাহ শাস্ত্রে তিনি পূর্ণতা অর্জন করেন। সমস্যার সমাধান দেওয়া এবং সমাধান নির্ণয় করার নিখুঁত জ্ঞান তাঁকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। তিনি তাঁর সততার জন্য সাদেক (সত্যবাদী) উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন। ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) প্রকৃতি বিদ্যায় অভিজ্ঞ ছিলেন। একই সাথে তিনি রসায়ন বিদ্যা ও চিকিৎসা বিদ্যায় সুদক্ষ ছিলেন। তাঁর সুযোগ্য ছাত্র জাবের ইবনে হাইয়্যান রসায়ন শাস্ত্রের জনক হিসেবে ভূষিত হয়েছেন। জাবের ইবনে হাইয়্যান, ইমাম জাফর সাদেক (রহ.)-এর অসংখ্য গ্রন্থ সংকলন করেন। (ইমাম জাফর সাদেক; ড. আবু যোহরা, অনুবাদ আবদুল জলীল, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, পৃষ্ঠা ৪৩)। ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) তাঁর ‘আততাওহীদ’ গ্রন্থে দিন-রাত, আলো-অন্ধকার, সূর্য সম্পর্কে চমৎকার বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। এ সময়টি ছিল দর্শন শাস্ত্রের প্রারম্ভিক যুগ।
ইমাম মালিক (রহ.) ইমাম জাফর সাদেক (রহ.)-এর নিকট জ্ঞানার্জন করেন। ইমাম আবু হানিফা (রহ.) ইমাম জাফর সাদেক (রহ.)-এর দরবারে অবস্থান করে আল্লাহ্কে পাওয়ার বিদ্যা লাভ করেন। ইমাম আবু হানিফা (রহ.) দুই বৎসর ইমাম জাফর সাদেক (রহ.)-এর দরবারে অবস্থান করেন এবং বলেন, “যদি ঐ দুই বছর না থাকত তাহলে নো’মান (আবু হানিফা) ধ্বংস হয়ে যেত।” (চৌদ্দ মাসুম (আ.)-এর জীবনী; সম্পাদনা, আবুল কাশেম আরিফ এবং মোহাম্মদ আশিফুর রহমান; পৃষ্ঠা ২৫৩)।
ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) মদীনায় অবস্থান করতেন। উমাইয়ারা ইরাকে হযরত আলী (কা.)-এর রওজা মোবারক নিশ্চিহ্ন করার জন্য জঘণ্য চক্রান্ত চালায়, মানুষ যাতে হযরত আলী (কা.)-এর রওজা জিয়ারত করতে না পারে সেজন্য উমাইয়া শাসকগোষ্ঠী রওজার চিহ্নও মুছে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) সাফ্ফার শাসনামলে সর্বপ্রথম ইরাক যান এবং হযরত আলী (কা.)-এর রওজা শরীফ চিহ্নিত করেন।
ইমাম জাফর সাদেক (রহ.)-এর যুগ হলো ইসলামের ইতিহাসে প্রশংসনীয় চিন্তা ধারার যুগ। এ সময় মদীনাই ছিল জ্ঞানের কেন্দ্র বিন্দু। ইমাম জাফর সাদেক (রহ.)-এর যুগে পবিত্র কুরআন, হাদিস ও ফিকাহ্ গবেষণা প্রধান্য পায়। ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর চল্লিশটি জটিল প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি কোনো প্রকার ইতস্ততা বোধ করেননি, বরং সাথে সাথে কোন মাজহাবের কোন মত তাও বলে দিয়েছেন। এমনকি কাদের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন তাও ব্যক্ত করেছেন। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার প্রতি তিনি একেবারেই বিমুখ ছিলেন। তিনি ছিলেন হেদায়েতকারী মহামানব।
ইমাম জাফর সাদেক (রহ.)-এর জন্ম হতে ১৩২ হিজরি পর্যন্ত ছিল উমাইয়া শাসন, এরপরই আব্বাসিয়ারা ক্ষমতা দখল করে। তাদের শাসনামল উমাইয়াদের সাথে কোনোরূপ পার্থক্য ছিল না। উমাইয়া ও আব্বাসিয় শাসনামলের অন্ধকার যুগের শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশে ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) দয়াল রাসুল (সা.)-এর প্রতিষ্ঠিত মোহাম্মদী ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শ প্রচার করেন। হাজার হাজার লোক দূর-দূরান্ত হতে মদীনায় এসে তাঁর কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করত। শেখ তুসী তাঁর ‘রেজাল’ গ্রন্থে প্রায় চার হাজার ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন যাঁরা ইমাম জাফর সাদেক (রহ.)-এর কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন অথবা তাঁর কাছ থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন। তাঁর বক্তব্যগুলো স্থান, কাল, পাত্র ভেদে বা প্রশ্নকারীর ধারণক্ষমতা অনুযায়ী হতো। ইমাম জাফর সাদেক (রহ.)-এর অনুমতি নিয়ে, তাঁর আলোচনাগুলোকে একত্রিত করে মুফায্যালের তাওহিদ সম্পর্কিত গ্রন্থ রচিত হয়। ইমাম জাফর সাদেক (রহ.)-এর অনেক অলৌকিক ঘটনা রয়েছে। তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী প্রতিটিই বাস্তবরূপে দেখা দিয়েছে।
ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) বলেন, “মানুষের (জন্যে উপকারী) সকল জ্ঞানকে চারটি বিষয়ের মধ্যে আমি পেয়েছি। প্রথমত, তুমি তোমার প্রভুকে জানবে। দ্বিতীয়ত, তোমার প্রতি তিনি কিরূপ অনুগ্রহ করেছেন, তা জানবে। তৃতীয়ত, তুমি জানবে তিনি তোমার কাছে কী চান। চতুর্থত, তুমি জানবে কী তোমাকে তোমার দ্বিন থেকে বের করে দেয়।” তিনি বলেন, “তিনটি বিষয়ে তিনটি ক্ষেত্র ছাড়া পরিচয় পাওয়া যায় না: রাগের মুহূর্তে ধৈর্যের পরিচয়, যুদ্ধের সময় বীরত্বের পরিচয়, প্রয়োজনে ভাইয়ের পরিচয়।” (তুহাফুল উকুল, পৃষ্ঠা ৩৭৫ ও ৩১৬)। ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) তাঁর পুত্র ইমাম মুসা কাজেম (রহ.)-কে অছিয়ত করে যে উপদেশ দান করেন তা ‘হুলিয়াতুল আউলিয়া’ নামক গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে।
মহান ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) ১৪৮ হিজরির শাওয়াল মাসে ৬৫ বৎসর বয়সে মহান প্রভুর সান্নিধ্য লাভ করেন। আব্বাসিয় খলিফা মনসুর দাওয়ানেকীর চক্রান্তে বিষ প্রয়োগে তিনি শাহাদত লাভ করেন।
উল্লেখ্য আব্বাসিয় খলিফা মানসুর দাওয়ানেকী বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে যখন ইমাম সাদিক (রহ.)-এর জনপ্রিয়তা কমাতে ব্যর্থ হয় তখন সে এই মহান ইমামকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। কেননা খলিফা তার হুকুমতের সম্মুখে ইমাম জাফর সাদিক (রহ.)-কে একমাত্র হুমকি হিসেবে মনে করতো। আর তাই তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করলো এবং হত্যা করলো। তাঁর পবিত্র দেহ মোবারক জান্নাতুল বাকীতে তাঁর পিতার পাশে সমাহিত করা হয়। ইমাম জাফর সাদেক (রহ.)-এর ওফাতে বিশ্ববাসী মহামূল্যবান সম্পদকে হারায়।
প্রকৃতপক্ষে আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা ও তাঁদের প্রতি আনুগত্য ছাড়া আল্লাহ্ সম্বন্ধে জানার কোনো উপায় নেই। আর আল্লাহ্ সম্বন্ধে যিনি জানেন একমাত্র তিনিইতো আল্লাহর ইবাদত করেন। যার আল্লাহর পরিচয় জ্ঞান নেই সে গোমরাহির সাথে ইবাদত বন্দেগি করে থাকে। তাই সমকালীন যুগের আধ্যাত্মিক নেতাকে চিনতে হবে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ্ বলেন, “হে মু’মিনগণ! তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর, আনুগত্য করো রাসুলের এবং আনুগত্য করো তাঁদের, যাঁরা তোমাদের মধ্যে (আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করে) ফয়সালা দিতে পারেন।” (সূরা আন নিসা ৪: আয়াত ৫৯) এখানে ফয়সালাকারী হলো সমকালীন যুগের হুকুমদাতা তথা আধ্যাত্মিক নেতা। মুক্তি পেতে হলে সমকালীন যুগের ইমামকে চিনতে হবে। আল্লাহর রাসুল (সা.) ফরমান, “যে ব্যক্তি তার জামানার ইমামকে চিনতে পারে না এবং এ অবস্থায় যদি মৃত্যু ঘটে, তবে তার মৃত্যু অন্ধকারে নিমজ্জিত ও নিপতিত হবে।” (মুসনাদে ইমাম জাফর সাদেক ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫১৯ ও ৫৩৩) তাই পরম করুণাময়ের নিকট প্রার্থনা, আমরা যেন দয়াল রাসুল (সা.) ও তাঁর আহলে বাইতকে সর্বোচ্চ ভালোবাসতে পারি এবং যুগের ইমামের কদম মোবারকে থাকতে পারি।
ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) যে অগাধ জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তা ছিল নবুয়তি জ্ঞানেরই উত্তরাধিকার। তাই ইমাম জাফর সাদিক (রহ.) বলতেন, “আমার বক্তব্য আমার বাবা ইমাম বাকের (রহ.)-এর বক্তব্য, তাঁর বক্তব্য আমার দাদা ইমাম জয়নুল আবেদিন (রহ.)-এর বক্তব্য, আমার দাদার কথা আমিরুল মু’মিনিন হযরত আলী র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহুর কথা এবং তাঁর বক্তব্য হচ্ছে হযরত রাসুল (সা.)-এরই বক্তব্য, আর রাসুলে খোদা (সা.)-এর বক্তব্য হচ্ছে মহান আল্লাহরই বক্তব্য।”
[লেখক: পিএইচ.ডি গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]