Cancel Preloader

নামাজ: মহান প্রভুর দেওয়া সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত


ড. মোবারক হোসেন

অসংখ্য মাখলুকাতের মধ্যে জ্ঞান বুদ্ধি, বিবেক বিবেচনার দিক থেকে মানুষ শ্রেষ্ঠ বলেই মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে পরিগণিত। বিশ্বজাহানের স্রষ্টা ও প্রতিপালক মহান রাব্বুল আলামিন মানবজাতিকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করে তাঁর প্রতিনিধির মর্যাদা দিয়ে এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন।
মহান রাব্বুল আলামিন এ সৃষ্টিজগত সৃজন করেছেন প্রেমের কারণে এবং মানুষকে সৃষ্টি করে তাঁর হৃদয়ে অবস্থান করে আশেক মাশুকের খেলা তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন। মানবজাতিকে সঠিক পথের সন্ধান দেওয়ার জন্য মহান রাব্বুল আলামিন জগতে অসংখ্য নবি-রাসুল পাঠিয়েছিলেন এবং বর্তমানে অলী-আল্লাহগণকে প্রেরণ করছেন। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের প্রিয় রাসুল হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে মানবজাতিকে পরিপূর্ণ ধর্ম মোহাম্মদী ইসলাম দিয়েছেন। ইসলাম অর্থ শান্তি। স্রষ্টার প্রতি বিনীতভাবে অনুগত হয়ে মহান প্রভুর নিকট আত্মসমর্পণ করে সৃষ্টির সাথে একাত্মতা স্থাপন করার নাম ইসলাম।
ইসলাম ধর্ম পাঁচটি স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত যথা- কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত। ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের মধ্যে কালেমার পরেই নামাজের স্থান। সুস্থ প্রাপ্ত বয়স্ক প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর নামাজ ফরজ। সালাত আরবি শব্দ, ফারসিতে নামাজ বলা হয়। নামাজের আভিধানিক অর্থ- দোয়া, রহমত ও প্রার্থনা। বাংলা অর্থ স্মরণ এবং সংযোগ স্থাপন। পবিত্র কুরআনে ৮২ বার নামাজ কায়েমের কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ্র সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধু সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত রাসুল (সা.) ৬২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে রজব মি‘রাজের রাত্রিতে আল্লাহর পক্ষ থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার নির্দেশ লাভ করেন। ইসলাম ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হচ্ছে নামাজ। একজন মানুষের আদর্শ পরিচয় বহন করে তার নামাজ আদায়ের মাধ্যমে। নামাজের মূল উদ্দেশ্য হলো নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে বান্দার কথোপকথন।


হযরত রাসুল (সা.) মি‘রাজে গেলে মহান রাব্বুল আলামিন জিজ্ঞেস করলেন- “হে আমার হাবিব! আমি আপনাকে দাওয়াত করে এনেছি, আপনি আমার জন্য কী এনেছেন? হযরত রাসুল (সা.) বললেন, “সমস্ত তাজিম, সমস্ত ভক্তি, গুণকীর্তন ইবাদত বন্দেগি আপনার জন্য।” হযরত রাসুল (সা.)-এর কথা শুনে মহান রাব্বুল আলামিন অত্যন্ত খুশি হয়ে তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধুকে মোবারকবাদ জানিয়ে বলেন- “হে নবি (সা.)! আপনাকে সালাম এবং আপনার উপর আল্লাহর অসীম রহমত ও বরকত।” হযরত রাসুল (সা.) তাঁর উম্মতের কথা স্মরণ করে বলেন- “আমাদের উপর এবং আল্লাহর সমস্ত নেক বান্দার উপর আল্লাহর পক্ষ হতে শান্তিবর্ষিত হোক।” অতঃপর আল্লাহ তায়ালা উম্মতে মোহাম্মাদীর উপর তাঁর সন্তুষ্ট ও দিদার লাভের মাধ্যম হিসেবে নামাজের বিধান প্রবর্তন করেন। নামাজের মাধ্যমে মু’মিন ব্যক্তিকে মহান প্রভুর সাথে সাক্ষাৎ লাভ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। আল্লাহ্ এবং মু’মিন ব্যক্তির কথোপকথনকে নামাজ বলা হয়।


মহান আল্লাহর সাথে বান্দার নৈকট্য লাভের মাধ্যম হলো নামাজ। মানুষ তার সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, লালনকর্তা, জীবনদাতা মহান মালিকের সামনে বিনীতভাবে দণ্ডায়মান হয় নামাজের সময়। পবিত্র কুরআনে মহান রাব্বুল আলামিন বলেন, “তোমরা সাহায্য প্রার্থনা করো ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে।” (সূরা বাকারা ২: আয়াত ৪৫) মহান প্রভু তাঁর বান্দাদেরকে তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনার জন্য উত্তম পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছেন নামাজের মাধ্যমে। মু’মিন ব্যক্তি তাঁর প্রভুর আনুগত্য ও আত্মসমর্পণের শপথ গ্রহণ করে নামাজের মাধ্যমে। অন্তরের সকল ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ঐশী প্রেমের একাগ্রতা নিয়ে মনের সমস্ত আকুতি নিয়ে প্রভুর দরবারে হাজির হন নামাজের সময়। নামাজের এমন গভীর মাহাত্ম্য আছে বলেই পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ্ নামাজের বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেছেন। নামাজের গুরুত্ব আলোচনা করতে গিয়ে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন- “সালাত হচ্ছে এমন একটি ইবাদত, যা বান্দাকে দিনে পাঁচবার মহান প্রভুর সামনে হাজির করে স্বীয় কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করায়।” হাদিস শরীফে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন-“তোমাদের কেউ যখন নামাজে দণ্ডায়মান হয়, তখন সে তার প্রভুর সাথে গোপনে কথা বলে।” (বোখারী শরীফ ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৭৬) উম্মতে মোহাম্মদীকে অশেষ দয়াময় আল্লাহর দিদার দিয়ে তাঁর নুরের আলো দ্বারা আলোকিত করার জন্য হযরত রাসুল (সা.)-এর মাধ্যমে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ দয়াময় আল্লাহ্ উপহার হিসেবে দিয়েছেন।


আল্লাহর মহান বন্ধু সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজান বলেন- “মহান রাব্বুল আলামিন তাঁর প্রেমিকবান্দাদের প্রতিদিন পাঁচবার সাক্ষাতের সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এ পাঁচবার সাক্ষাতের সময়কে নামাজ বলে। আয়নার সামনে দাঁড়ালে যেমন নিজের চেহারা ভেসে উঠে তেমনি মু’মিন ব্যক্তি সালাতে দাঁড়ালে মহান প্রভুকে সামনে দেখতে পায়। প্রত্যেকে দেখে তাঁর পবিত্র কদমে সেজদায় অবনত হয়ে সালাত আদায় করে।” নামাজের গুরুত্ব আলোচনা করতে গিয়ে হযরত রাসুল (সা.) বলেছেন- “তোমাদের কারও বাড়ির সামনে দিয়ে যদি কোনো প্রবাহমান নদী থাকে, আর সে নদীতে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তার শরীরে কোনো ময়লা থাকবে? সাহবায়ে কেরাম উত্তর দিলেন- ইয়া রাসুলাল্লাহ্! না, তখন তিনি বললেন- কেউ যদি দিনে পাঁচবার পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে তাহলে তার সমস্ত পাপ ধুয়ে মুছে পরিষ্কার হয়ে যায়।” (মুসলিম শরীফের সূত্রে তাফসীরে ইবনে কাছীর) মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্বপ্রদানকারী ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর আমাদেরকে সালাত আদায়ের জন্য তাগিদ দিচ্ছেন। মহান মালিকের হুকুম আমরা যেন সবাই পালন করি। কীভাবে সালাত আদায় করতে হয়, সে বিষয়ে তিনি প্রতিনিয়ত আমাদের তালিম দিয়ে যাচ্ছেন।


নামাজে হুজুরির প্রয়োজনীয়তা
মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে বলেন- “বলুন, আমার রব নির্দেশ দিয়েছেন ন্যায়বিচারের। আর প্রত্যেক নামাজের সময় তোমাদের মুখমণ্ডল সোজা রাখবে এবং তাঁকে ডাকবে তাঁরই আনুগত্যে একনিষ্ঠভাবে। তিনি যেভাবে তোমাদের প্রথমে সৃষ্টি করেছেন সেভাবে তোমরা ফিরে আসবে।” নামাজ কবুলের পূর্ব শর্ত হলো দিল থেকে শয়তানকে বিতাড়িত করা। যে দিলে শয়তান বাস করে সেই দিলে কোনো ইবাদত শুদ্ধভাবে করা সম্ভব হয় না। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে- “অবশ্যই সফলকাম হয়েছে সে ব্যক্তি, যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করেছে। আর ব্যর্থ হয়েছে সে ব্যক্তি, যে নিজেকে পাপাচারে কলুষিত করেছে।” (সূরা শামস ৯১: আয়াত ৯-১০) আমরা নামাজ পড়ি, কিন্তু পরকে ঠকানো, পরনিন্দা করা এবং ব্যভিচার করতেও দ্বিধাবোধ করি না। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে যেভাবে নামাজ আদায় করতে বলেছেন আমরা সেভাবে নামাজ আদায় করতে পারছি না। একজন মু’মিন ব্যক্তি নামাজে দাঁড়িয়ে একাগ্রচিত্তে নিজেকে আল্লাহর দিকে নিমগ্ন রাখতে হয় এবং মহান প্রভুর সাথে কথোপকথনের মাধ্যমে নামাজ সম্পূর্ণ করতে হয়।


আল্লাহর প্রিয় বান্দারা নামাজ কীভাবে আদায় করতেন
আমাদের প্রিয়নবি হযরত রাসুল (সা.)-এর নামাজের বিবরণ দিতে গিয়ে হযরত আয়েশা (রা.) বলেন- “আমি ও হযরত রাসুল (সা.) আলাপরত অবস্থায় থাকতাম, এমন অবস্থায় যদি নামাজের সময় আসতো, তিনি আমাকে চিনতে পারতেন না। নামাজের ডাক এলে সর্বশক্তিমান আল্লাহর দরবারে হাজির হওয়ার মুহূর্ত এলে সেই মহান প্রভুর সান্নিধ্য লাভের আকাঙ্খায় মুগ্ধ ও মাতোয়ারা হয়ে পড়তেন। তখন ইহলৌকিক কোনো বিষয় তাঁর হৃদয়কে স্পর্শ করতে পারত না।” পরম করুণাময় মহান প্রভুর অধিকতর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভ হয় নামাজের মাধ্যমে। কোনো এক যুদ্ধে হযরত মাওলা আলী (কা.)-এর কদম মোবারকে তির বিদ্ধ হয়। কোনো অবস্থাতে তাঁর কদম মোবারক থেকে তির বের করে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। তখন হযরত রাসুল (সা.) বললেন, “হযরত আলী (কা.) যখন নামাজরত অবস্থায় থাকবেন, তখন তিরটি বের করে আনবে।” বাস্তবে ঘটেছিল তাই। হযরত আলী (কা.) নামাজে দণ্ডায়মান হলেন, তখন সাহাবিগণ তাঁর কদম মোবারক থেকে তিরটি বের করে আনলেন। তিনি এতটা হুজুরি দিলে নামাজ আদায় করছিলেন যে, নামাজের মধ্যে কদম মোবারকের তির বের করার পরও বুঝতে পারেননি। এই নামাজ হলো হাকিকতে সালাত। যে সালাত মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের কায়েম করতে বলেছেন।


বিশিষ্ট সাহাবি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রা.)-এর অবস্থা এমন ছিল যে, যখন নামাজে দাঁড়াতেন তখন মনে হতো যেন একটা প্রাণহীন কাষ্ঠখণ্ড দাঁড়িয়ে আছে। আল্লাহর প্রেমে পাগল ও মাতোয়ারা হওয়ার কারণে তাঁদের এমন অবস্থা হতো। এ নামাজকে হাকিকতে সালাত বা প্রকৃত নামাজ বলা হয়। যারা হাকিকতে সালাত আদায় করতে পারবে তারা অবশ্যই পাপ কাজ থেকে বিরত থাকবে। পবিত্র কুরআনে নামাজ সম্পর্কে বলা হয়েছে- “তোমরা নামাজ কায়েম করো, নিশ্চয় নামাজ মানুষকে যাবতীয় অশ্লীলতা ও পাপ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে।” (সূরা আনকাবুত ২৯: আয়াত ৪৫)


মহান সংস্কারক সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজান বলেন- “শয়তানের হাত থেকে মুক্ত হয়ে একাগ্রতার সাথে নামাজ আদায় করতে না পারলে সেই নামাজে কোনো সুফল লাভ করা সম্ভব হয় না। তিনি বলেন- প্রেমহীন ইবাদত নিষ্ফল। মানুষের মনে প্রভুর প্রেম না থাকায় ইবাদত করে চরিত্রের কোনো পরিবর্তন হয় না।” নামাজ কবুলের পূর্বশর্ত হলো দিল থেকে শয়তানকে বিতাড়িত করা, যে দিলে শয়তান বাস করে সে দিলে কোনো ইবাদত শুদ্ধভাবে করা সম্ভব হয় না। দিল থেকে শয়তানকে বিতাড়িত করে সেই দিলে আল্লাহ্ নামের জ্বিকির জারি করতে পারলে শয়তান দূর হবে। শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্ত হয়ে এক আল্লাহর প্রতি নিমগ্ন জ্বিকিরকারির দিলই হলো হুজুরি দিল। হযরত রাসুল (সা.) বলেন- “হুজুরি দিল হলো সেই অবস্থা, যখন নামাজে দাঁড়ালে আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোনো চিন্তা বা কল্পনা আসে না।” মনকে সর্বদা আল্লাহর প্রেমে বা ধ্যানে নিমগ্ন রাখা এবং প্রেম ও মহব্বতে ডুবে থাকা ব্যতীত নামাজ শুদ্ধভাবে আদায় করা সম্ভব হয় না।


হুজুরি দিল অর্জনের উপায়
নামাজে হুজুরি অর্জন করতে হলে আল্লাহর প্রেরিত কোনো না কোনো মহামানবের সংস্পর্শে গিয়ে এ পদ্ধতি শিখতে হবে। একা একা সাধনা করে এ পদ্ধতি শিক্ষা অর্জন করা সম্ভব নয়। হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে আমাদের মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হয়ে বর্তমানে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর এ সুমহান শিক্ষা দিচ্ছেন। সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) বলেন- “নামাজ কায়েমের পদ্ধতি যিনি জানেন এমন একজন মহামানবের সান্নিধ্যে গিয়ে হাকিকতে সালাত বা হুজুরি দিলে নামাজ আদায় করার পদ্ধতি শিখতে হয়। মহামানবগণ পাপীতাপী মানুষকে আত্মশুদ্ধি, দিলজিন্দা, নামাজে হুজুরির শিক্ষা দিয়ে থাকেন। তাঁদের সান্নিধ্যে গিয়ে ক্বালবে আল্লাহ নামের জিকির জারি করে, দিলকে পবিত্র করে হুজুরি দিলে নামাজ আদায় করা সম্ভব হয়। নামাজ পড়ার কোনো বস্তু নয়, আমল করার পদ্ধতি। নিজের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দিয়ে দেহ ও মন একত্রিত করে নামাজ আদায় করতে পারলে সেই নামাজে আহম্মদি চরিত্র ফুটে উঠে। নামাজ মানুষকে আহম্মদি চরিত্রের শিক্ষা দেয়। আহম্মদি চরিত্র অর্জন করার জন্য মুসলমানদের উপর নামাজ ফরজ করা হয়েছে। আহম্মদি চরিত্র অর্জনের জন্য প্রয়োজন হুজুরি দিলে নামাজ আদায় করা।” একজন মানুষ দুনিয়ার চিন্তা মুক্ত হয়ে একাগ্রতার সাথে আল্লাহ্কে হাজির নাজির জেনে যেন নামাজ আদায় করতে পারে, সেই পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছেন আমাদের মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজান। তিনি হযরত রাসুল (সা.)-এর জীবন দর্শন অনুযায়ী মানুষকে এলমে শরিয়ত, তরিকত, হাকিকত ও মারফতের আলোকে মোহাম্মদী ইসলামের পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা এবং দিকনির্দেশনা দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতের জীবনকে সুন্দর ও শান্তিময় করেছেন।

সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজানের আদর্শ ও শিক্ষা এখনও চলমান। তিনি দয়া করে তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরি রেখে গিয়েছেন। তিনি হলেন মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর। তিনি প্রতিনিয়ত মানুষকে সুপরিবর্তনের এবং আত্মশুদ্ধি, দিলজিন্দা, নামাজে হুজুরি এবং আশেকে রাসুল হওয়ার শিক্ষা দিচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষকে আদর্শ চরিত্রবান হওয়ার ডাক দিয়েছেন৷ কীভাবে ইবাদত করলে একজন মানুষ সহি শুদ্ধ নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, মোরাকাবা করতে পারবে সেই পরামর্শ তিনি প্রতিনিয়ত দিচ্ছেন। এইভাবে তিনি পাপীতাপী মানুষদেরকে মোহাম্মদী ইসলামের সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে মোহাম্মদী ইসলামকে সারাবিশ্বে তুলে ধরার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুরের মহানুভবতা, উদারতা, চিন্তা-চেতনা, কর্মদক্ষতা ও ন্যায়পরায়ণতায় মুগ্ধ হয়ে মানুষ মোহাম্মদী ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে এসে মোহাম্মদী ইসলামের সুমহান শিক্ষা গ্রহণ করছে। তিনি বলেন- “ধর্মের মূলমন্ত্র নিজেকে পরিবর্তন করা।” তিনি বলেন- “আপনি যদি শাহ দেওয়ানবাগীর আদর্শ মানেন, তাহলে আমার নির্দেশমতো আমল করেন, আপনার কবর আলোকিত হবে।” আমাদের মোর্শেদ কেবলাজানের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি হলেন প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর। আমরা সবাই এ মহামানবের আর্দশকে অনুসরণ করে, তাঁর নির্দেশ মেনে যদি ধর্ম কর্ম পালন করি, তাহলে আমাদের মহান মোর্শেদের আদর্শ, শিক্ষা আমাদের মাঝে থাকবে। এর ফলে আমরা পাবো দয়াময় আল্লাহর দয়া ও সন্তুষ্টি।
আমাদের মহান আল্লাহর কদম মোবারকে প্রার্থনা, তিনি যেভাবে সালাত কায়েম করতে বলেছেন, আমরা যেন সেভাবে সালাত আদায় করতে পারি। তাঁর বন্ধুদের অনুসরণের মাধ্যমে যেন হুজুরি দিলে নামাজ আদায় করার শিক্ষা অর্জন করতে পারি, মহান প্রভুর দরবারে এই প্রার্থনা জানাই। আমিন।
[লেখক: ইসলামি গবেষক]

সম্পর্কিত পোস্ট