পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপিত তাৎপর্য
ড. পিয়ার মোহাম্মদ
হিজরিপূর্ব ৫৩ সাল, ১২ই রবিউল আউয়াল, সোমবার সুব্হে সাদেকের সময় বিশ্বজাহানের সর্বত্রই ঢেউ খেলে গেল আনন্দের জোয়ার। বিশ্ব প্রকৃতিতে বয়ে গেল এক অজানা আনন্দের হিল্লোল। মৃদু মন্দ বাতাসে বেজে উঠল উল্লাসের ঝংকার। ঘটে গেল অনেক অলৌকিক ঘটনা। এতো সব কিছুই যেন এক মহান অতিথিকে বরণ করার জন্য। কে সেই মহান অতিথি। সেই মহান অতিথি হলেন মক্কার সম্ভ্রান্ত কোরাইশ বংশে মা আমিনা (আ.)-এর কোলে জন্ম গ্রহণকারী পৃথিবীর শে্রষ্ঠ মহামানব এবং সর্বশেষ নবি ও রাসুল হযরত মোহাম্মদ (সা.)। তিনি সেদিন ধুলির ধরায় আগমন করেছিলেন কুল কায়েনাতের রহমত হিসেবে।
হযরত রাসুল (সা.) সর্বশেষ নবি হিসেবে পৃথিবীতে আগমন করলেও প্রকৃতপক্ষে তাঁর নুরময় সত্তা সৃষ্টি হয়েছিল সবার আগে। সেই নুরময় সত্তা সৃষ্টির মধ্য দিয়েই আল্লাহ্ পাক সৃষ্টি লীলা সূচনা করেছিলেন। হযরত রাসুল (সা.)-এর সেই নুরময় সত্তা থেকেই সমস্ত সৃষ্টি সৃজিত হয়েছে। তাঁকে সৃষ্টি করা না হলে জগতের কিছুই সৃষ্টি করা হতো না। সৃষ্টি হতো না এ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃষ্টিরাজি। সেই হিসেবে এ দিনটি শুধু হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্মদিন নয়। এ যেন আঠার হাজার মাখলুকাত ও সমগ্র বিশ্বজাহানের শুভ জন্মদিন। সেজন্য হযরত রাসুল (সা.)-কে পেয়ে সমগ্র বিশ্ব প্রকৃতি সেদিন আনন্দে বিভোর হয়ে উঠেছিল। হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্মের সেই আনন্দ প্লাবনে উদ্ভাসিত ঊষালগ্নটি বুকে ধারণ করে এ দিবসটি হয়েছে সমগ্র সৃষ্টিজগতের জন্য এক মহিমান্বিত ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন, যা ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) নামে পরিচিত।
হযরত রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্মের বরকতেই যেহেতু এ পৃথিবীর সব কিছু সৃষ্টি হয়েছে আর তিনিই যেহেতু সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশে্রষ্ঠ মহামানব এবং তাঁর আবির্ভাব না হলে আমরা যেহেতু কোনো কিছুই পেতাম না, সেহেতু তাঁর জন্মদিনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কী হতে পারে। ইমানদার হওয়ার প্রথম শর্ত-হযরত রাসুল (সা.)-কে পার্থিব জীবনের সব কিছুর চেয়ে অধিক ভালোবাসা। পবিত্র হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসুল (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি নিজের পিতা মাতা. সন্তান সন্ততি ও অন্য সকল মানুষ অপেক্ষা আমাকে বেশি ভালো না বাসবে, সে মু’মিন হতে পারবে না।” (বুখারী শরীফ ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৭, মুসলিম শরীফ ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৭) তাহলে হযরত রাসুল (সা.)-কে ভালোবেসে মু’মিন হতে হলে আমাদের অবশ্যই সবার জন্মদিনের চেয়ে হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্মদিন বেশি গুরুত্ব দিয়ে পালন করতে হবে। হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রতি যার প্রেম রয়েছে এমন দিনে তার অন্তরে এমনিতেই আনন্দের জোয়ার আসবে। ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) একজন মু’মিনের জন্য এতটাই তাৎপর্যপূর্ণ যে আমাদের মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান এই ঈদকে সৃষ্টিকুলের শে্রষ্ঠ ঈদ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
রাহ্মাতুল্লিল আলামিনের জন্মদিনে মানব জাতির মাঝে খুশিতে আনন্দিত হওয়ার ধারা মহানবি (সা.)-এর জীবদ্দশায়ই শুরু হয়েছিল। সাহাবি আবু আমের আনসারি (রা.) এমনই একদিনে তার পরিবার পরিজন ও আত্নীয় স্বজনদের নিয়ে হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্ম বৃত্তান্তের আলোচনা ও আনন্দ করছিলেন। এতে আল্লাহ্র রাসুল (সা.) অত্যন্ত খুশি হয়ে বলেছিলেন- “হে আমের! নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তায়ালা তোমাদের জন্য রহমতের দরজা খুলে দিয়েছেন এবং ফেরেশতারা তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন।” (হযরত আল্লামা ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রহ.) প্রণীত সাবীলুল হুদা ফি মাওলিদিল মুস্তফা সূত্রে মুক্তি কোন পথে? পৃষ্ঠা ২৫-২৬) আরেক হাদিস থেকে পাওয়া যায় হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রা.) কতৃর্ক হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্মদিনের ইতিবৃত্ত প্রতিবেশিদের নিয়ে আলোচনাকালে হযরত রাসুল (সা.) তাকে বলেন“তোমাদের সাফায়াত করা আমার জন্য ওয়াজিব হয়ে গেছে। অন্যান্য যারা এরূপ কাজ করবে তারাও সাফায়াত পাবে।” এই হাদিসটি বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থে এসেছে। (আদ দুররুল মুনাজ্বজ্বাম সূত্রে মুক্তি কোন পথে? পৃষ্ঠা ২৬)
আল কুরআনে বলা হয়েছে হযরত রাসুল (সা.)-এর সাফায়াত ছাড়া কারো মুক্তি হবে না। পক্ষান্তরে, হযরত রাসুল (সা.) বলেছেন- যারা তাঁর জন্মদিনে আলোচনা ও আনন্দ করবে তাদের সাফায়াত দেওয়া হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্য ওয়াজিব হয়ে যাবে। কাজেই ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) পালন করা এবং এ দিনে আনন্দ করা অতি তাৎপর্যপূর্ণ এবং এটি মানব জীবনের মুক্তির সোপান। আল্লাহ্ পাক বলেছেন- “[হে রাসুল (সা.)!] আমি তো আপনাকে জগতসমূহের প্রতি কেবল রহমতস্বরূপই প্রেরণ করেছি।” (সূরা আম্বিয়া ২১: আয়াত ১০৭) সুতরাং রাসুল (সা.)-এর জন্মদিন আল্লাহ্ পাকের এক বিশেষ নিয়ামত প্রাপ্তির দিন। আল্লাহ্ পাক আরো বলেছেন- “আপনি বলে দিন, তারা যেন আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও রহমত প্রাপ্তিতে খুশি উদ্যাপন করে। এ খুশি ও আনন্দ উদ্যাপন সমুদয় সঞ্চয় থেকে উত্তম।” (সূরা ইউনুস ১০: আয়াত ৫৮) মহান আল্লাহ্ ঘোষিত সেই দিনে আমরা যদি খুশি হতে না পারি তাহলে সেটা আমাদের দুর্ভাগ্য ছাড়া আর কিছু নয়। এ আনন্দ কারো একার নয়, বরং সৃষ্টিকুলের সবার। ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) সৃষ্টিকুলের সবার। সবার মুক্তির অসিলা হিসেবে এসেছে এই মহিমান্বিত দিন। এ দিন উদ্যাপন করে লাভবান হতে পারা এক বিশেষ সুযোগ।
মৃত্যুর পর কাফের আবু লাহাব স্বপ্নে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রা.)-কে বলেন- “প্রতি সোমবার আমার আজাব লাঘব করা হয়।” আবু লাহাব ছিলেন হযরত রাসুল (সা.) বিদ্বেষী মানুষ। স্বয়ং আল্লাহ্ পাক পবিত্র কুরআনে আবু লাহাবকে অভিসম্পাত করেছেন। মহান আল্লাহ্ বলেন, “ধ্বংস হোক, আবু লাহাবের দুই হাত, আর সে নিজেও ধ্বংস হোক।” (সুরা লাহাব ১১১: আয়াত ১) তাহলে কেন সোমবার আবু লাহাবের আজাব লাঘব করা হয়। তিনি এমন কী ভালো করেছিলেন? তিনি শুধুমাত্র নবি করিম (সা.)-এর জন্মের খবর শুনে খুশি হয়েছিলেন। এতটাই খুশি হয়েছিলেন যে, তাকে যে দাসী সুয়াইবা এ সংবাদ দিয়েছিল তাকে খুশিতে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। সেই অসিলায় তিনি সপ্তাহের ঐ দিনের আজাব মাফ পেয়ে থাকেন। (সহিহ বুখারী ২য় খণ্ড, কিতাবুন নিকাহ ৪৭৩৪নং হাদিস) হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্মের সংবাদ শুনে খুশি হয়ে তার ফজিলত পাচ্ছেন আবু লাহাবের মতো একজন রাসুল (সা.) বিরোধী মানুষ। তাহলে আমরা হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্মদিন খুশিতে উদ্যাপন করে এবং খুশি হয়ে লাভবান হওয়ার আশা না করলে তা হবে নিতান্তই অযেৌক্তিক।
আল্লাহ্ পাক স্বয়ং নিজে হযরত রাসুল (সা.)-কে পৃথিবীতে পাঠানোর প্রাক্কালে অত্যন্ত খুশি হয়েছিলেন এবং তাঁর ফেরেশতাদের নিয়ে রাসুল (স.) এর প্রতি দরুদ পাঠ করেছিলেন। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে- “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ ও তাঁর ফেরেশতারা নবির উপর দরূদ পাঠ করেন। হে মু’মিনগণ! তোমরাও তাঁর উপরে দরূদ পড়ো এবং শ্রদ্ধার সাথে সালাম পেশ করো।” (সূরা আহযাব ৩৩: আয়াত ৫৬) এতে বুঝা যায় ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) উদ্যাপন করা স্বয়ং আল্লাহ্ পাকের নির্দেশ। সকল ইমানদারকে আল্লাহ্ পাক এ নির্দেশ দিয়েছেন। তাহলে আমরা যদি ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) পালন না করি তাহলে কীভাবে বলতে পারি আল্লাহ্র নির্দেশ মেনে চলছি। আল্লাহ্র নির্দেশ না মানলে ইমানদার থাকারইবা সুযোগ কোথায়। মহান আল্লাহ্ যেহেতু দয়াল রাসুল (সা.)-এর জন্মদিনে খুশি থাকেন, সেহেতু কেউ ধুমধামের সাথে ঈদে মিলাদুন্নবি (সঃ) পালন করলে স্বয়ং আল্লাহ্ পাক অত্যন্ত খুশি হন। আল্লাহ্ পাক কারো উপর খুশি হলে তার আর চিন্তা কী? মহান আল্লাহ্ দয়াল রাসুল (সা.)-এর শানে তাঁর জন্মদিনে যেমন দরূদ পাঠ করেছিলেন এখনও করেন। এটিই ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.)-এর হাকিকত। মহান আল্লাহ্ তাঁর প্রিয় হাবিবকে ভালোবাসেন এবং তিনি চান সৃষ্টিকুল তাঁকে ভালোবাসুক। সেজন্য হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্মদিনে খুশি হওয়া অর্থ আল্লাহ্র ইচ্ছা বাস্তবায়ন করা। মহান আল্লাহ্র খুশির সাথে আমাদেরও খুশি হওয়া। এ দিনটি উদ্যাপন এমনই গুরুত্বপূর্ণ।
মহান রাব্বুল আলামিনের সাথে হযরত রাসুল (সা.)-এর সম্পর্ক খুবই নিবিড়। সেজন্য দয়াল রাসুল (সা.)-এর আগমনের উপযুক্ত ক্ষেত্র প্রস্তত করতে মহান প্রভু হাজার হাজার অবাধ্য জনপদ ধ্বংস করেছেন। পৃথিবীতে যত নবি ও রাসুল এসেছেন, সবাই নুরে মোহাম্মদীর ধারক ও বাহক হিসেবেই এসেছেন। হযরত রাসুল (সা.)-এর শুভাগমনের দাওয়াত সবার কাছে পৌঁছানোর জন্য আল্লাহ্ সকল নবি-রাসুলের প্রতিশ্রম্নতি গ্রহণ করেছিলেন। যার জন্য বলা হয়ে থাকে হযরত রাসুল (সা.) শুধু উম্মতদের রাসুল নন, সকল নবি-রাসুলেরও রাসুল। সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান বলেন, “মহামানবদের জন্মদিন রহমতে পরিপূর্ণ।” আমাদের রাসুল (সা.) মহামানবদের সেরা। তাহলে নিঃন্দেহে তাঁর জন্মদিন আনন্দের সাথে পালন করে আমরা সবচেয়ে বেশি ফজিলত হাসিল করতে পারব।
প্রকৃতিতে হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্মদিনের আনন্দ জোয়ার সব সময়ই বয়ে গেছে, কিন্তু মানব জাতির মধ্যে হযরত রাসুল (সা.)-এর ওফাতের তারিখ নিয়ে সারা বিশ্বে চরম বিভ্রান্তি ছিল। সর্বত্রই প্রচলিত ছিল হযরত রাসুল (স.) ১২ই রবিউল আউয়াল সোমবার জন্ম গ্রহণ করেন আবার ৬৩ বছর পর আরেক ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার ওফাত লাভ করেছিলেন। এ বিশ্বাসের কারণে মুসলিম জাহান এক দ্বিধা দ্বন্বের দোলা চলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারত না যে, এ দিনে কি রাসুল (সা.)-এর জন্মের জন্য আনন্দ করা উচিত, নাকি তাঁর ওফাতের কারণে শোক প্রকাশ করা শে্রয়। এ কারণে হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্মদিন অপরিসীম রহমত ও বরকতের হওয়া সত্ত্বেও মুসলিম জাহান ঐ দিবসে আনন্দ না করতে পেরে রহমত থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিল। এ প্রেক্ষাপটে সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান ১২ই রবিউল আউয়াল প্রকৃতপক্ষে হযরত রাসুল (সা.)-এর ওফাত দিবস কিনা তা নির্ধারণ করতে উদগ্রীব হয়ে উঠেন। অতঃপর তিনি আধ্যাত্নিক সাধনা ও অভিজ্ঞতার আলোকে কুরআন ও হাদিসের মর্মানুসারে ঐতিহাসিক তথ্য ও তত্ত্ব দিয়ে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন যে, হযরত রাসুল (স.)-এর ওফাত দিবস ১২ই রবিউল আউয়াল নয়, বরং ১ রবিউল আউয়াল। এর ফলে সারা বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, ১২ই রবিউল আউয়াল হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্ম দিন এবং ১লা রবিউল আউয়াল ওফাত দিবস। তিনি সবাইকে সেজন্য ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) সকল মানুষকে ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) পালন করার আহ্বানের পাশাপাশি সরকারি পর্যায়ে দিবসটি পালনের জন্য যুক্তি উপস্থাপন করেন। তৎপ্রেক্ষিতে সরকার এ দিবসটি জাতীয় পর্যায়ে ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই মোতাবেক দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালিত হচ্ছে। দিনটিকে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করা হয়। সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান বলেন- “এ দিনটি অন্য দুটি ঈদের দিনের মতো করেই পালন করা আবশ্যক।” বিধর্মীদের চক্রান্ত ও স্বধর্মীদের অজ্ঞতার কারণে এ দিনটির উৎসব আমরা হারিয়ে ফেলেছিলাম। এখন সুযোগ এসেছে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদ্যাপন করতে থাকলে ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) অনুষ্ঠানটি আবারো সুপ্রতিষ্ঠিত হবে ঘরে ঘরে।
যারা প্রকৃত ইমানদার এবং হযরত রাসুল (সা.)-এর পুর্ণাঙ্গ মহব্বত যাদের অন্তরে তারাই ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) সঠিকভাবে উপলদ্ধি করতে পারেন এবং অনাবিল আনন্দ উপভোগ করেন। এখনো যারা এ দিনটিকে হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস হিসেবেই জানে তাদের ভুল ভাঙ্গানোর চেষ্টা করতে হবে। অন্য দুটি ঈদ যেমন আমরা সর্বস্তরে পালন করি সেভাবে এ দিনটিও পালন করতে সবার সচেষ্ট হতে হবে। এ দিনের ফজিলত সম্পর্কে সাধ্যমত প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রাখলে একদিন সব মানুষ এ দিনের তাৎপর্য উপলদ্ধি করতে পারবে। আমরা হযরত রাসুল (সা.)-এর উম্মত হিসেবে দাবী করলেও অনেকেই তাঁর জন্মদিন পালন করি না। বুঝতে পারি না এটা গুরুত্বের দিক দিয়ে কত বড়ো দিন।
আসুন আমরা আমাদের প্রিয় রাসুল হযরত (সা.)-এর জন্মদিনের গুরুত্ব উপলদ্ধি করার চেষ্টা করি। এ তাৎপর্যপূর্ণ দিবসটি জাকজমকপূর্ণভাবে উদ্যাপন করি এবং অন্যদের উদ্যাপন করতে উৎসাহিত করি। এ দিনের আনন্দ উৎসবই হতে পারে আমাদের মুক্তির অসিলা। আমিন।
[লেখক: অতিরিক্ত সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার]