Cancel Preloader

বিশ্বময় শান্তি প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (রহ.)

বিশ্বজাহানের প্রতিপালক মহান রাব্বুল আলামিন মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে। এ প্রতিনিধিকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য অসংখ্য নবি-রাসুল ও অলী-আল্লাহ্ প্রেরণ করেছেন। সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর ওফাতের ১৩১৭ বছর পর, তাঁরই সুযোগ্য উত্তরসূরি, নুরে মোহাম্মদীর ধারক-বাহক হয়ে শুভাগমন করেন মহান সংস্কারক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান।

আল্লাহর মহান বন্ধু সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান ১৯৪৯ সালের ১৪ই ডিসেম্বর, বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলাধীন বাহাদুরপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। এই মহামানবের শুভাগমনে বাংলার জমিন ধন্য হয়েছে। অফুরন্ত শান্তি অনাবিল আনন্দের ঝর্ণা ধারা নিয়ে প্রতি বছর আমাদের মাঝে ফিরে আসে আল্লাহর বন্ধুর এই শুভ জন্মদিন। এই মহামানব এমন এক সময় পৃথিবীতে আগমন করেছেন যখন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নৈতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় অবস্থার চরম অবনতি ঘটে। তাছাড়া সমাজে অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা, নারী নির্যাতন, হত্যাসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়েছিল মানুষ। মহান রাব্বুল আলামিন মানবজাতির শান্তি, কল্যাণ ও মুক্তির জন্য আল্লাহর মহান এ বন্ধুকে বাংলার জমিনে পাঠিয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান (রহ.) হযরত রাসুল (সা.)-এর শান্তির ধর্ম মোহাম্মদী ইসলাম প্রচার ও প্রসার করেন। পথহারা মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান এবং পৃথিবীর বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এই মহামানব সমাজের সকল অন্যায়, অবিচার, অত্যাচার, কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস মুলোৎপাটন করে, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছেন। আল্লাহর মহান বন্ধু সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান মহান প্রভুর প্রতি অগাধ বিশ^াস, অফুরন্ত ভালোবাসা অন্তরের পবিত্রতা, ধৈর্য, ক্ষমা, সত্যতা ও উদারতার এক মূর্তপ্রতীক ছিলেন।

আল্লাহর মহান বন্ধু সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান ১৯৪৯ সালের ১৪ই ডিসেম্বর, বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলাধীন বাহাদুরপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। এই মহামানবের শুভাগমনে বাংলার জমিন ধন্য হয়েছে। অফুরন্ত শান্তি অনাবিল আনন্দের ঝর্ণা ধারা নিয়ে প্রতি বছর আমাদের মাঝে ফিরে আসে আল্লাহর বন্ধুর এই শুভ জন্মদিন। এই মহামানব এমন এক সময় পৃথিবীতে আগমন করেছেন যখন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নৈতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় অবস্থার চরম অবনতি ঘটে। তাছাড়া সমাজে অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা, নারী নির্যাতন, হত্যাসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়েছিল মানুষ। মহান রাব্বুল আলামিন মানবজাতির শান্তি, কল্যাণ ও মুক্তির জন্য আল্লাহর মহান এ বন্ধুকে বাংলার জমিনে পাঠিয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান (রহ.) হযরত রাসুল (সা.)-এর শান্তির ধর্ম মোহাম্মদী ইসলাম প্রচার ও প্রসার করেন। পথহারা মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান এবং পৃথিবীর বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এই মহামানব সমাজের সকল অন্যায়, অবিচার, অত্যাচার, কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস মুলোৎপাটন করে, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছেন। আল্লাহর মহান বন্ধু সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান মহান প্রভুর প্রতি অগাধ বিশ্বাস, অফুরন্ত ভালোবাসা অন্তরের পবিত্রতা, ধৈর্য, ক্ষমা, সত্যতা ও উদারতার এক মূর্তপ্রতীক ছিলেন।

যুগশ্রেষ্ঠ এ মহামানব হযরত রাসুল (সা.)-এর রেখে যাওয়া মোহাম্মদী ইসলাম তথা হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর সুমহান শিক্ষা ও আদর্শ জগদ্বাসীর নিকট পুনর্জীবিত করেছেন, যা অনুসরণ করে অগণিত মানুষ আদর্শ চরিত্রবান হয়ে আশেকে রাসুলে পরিণত হয়েছেন। মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে বলেনÑ “হে নবি (সা.)! নিশ্চয় আমি তো আপনাকে প্রেরণ করেছি সকল মানুষের কর্মের সাক্ষ্যরূপে, সুসংবাদদাতারূপে ও সর্তককারী রূপে এবং আল্লাহর আদেশে তাঁর দিকে আহ্বাবানকারীরূপে ও প্রজ্বলিত প্রদীপরূপে।” (সূরা আল আহযাব ৩৩: আয়াত ৪৫ ও ৪৬) নবুয়তের যুগে নবি-রাসুলগণ ও বেলায়েতের যুগে অলী-আল্লাহ্গণ মানুষকে আলোকিত এবং চরিত্রবান বানানোর জন্য ধূলির ধরায় তাশরিফ নেন। বর্তমান যুগে হেদায়েতের কান্ডারী হলেন অলী-আল্লাহ্গণ। আল্লাহর বন্ধু অলী-আল্লাহ্গণের মর্যাদা সম্পর্কে স্বয়ং মহান প্রভু পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেন- “সাবধান! নিশ্চয়ই আল্লাহর অলীগণের কোনো ভয় নেই এবং তাঁরা দুঃখিতও হবে না।” (সূরা ইউনুস ১০: আয়াত ৬২) হযরত রাসুল (সা.) ফরমান, “নিশ্চয়ই মহান পরাক্রমশালী সম্ভ্রান্ত আল্লাহ্ তায়ালা প্রত্যেক শতাব্দীর শিরোভাগে এই উম্মতের জন্যে এমন এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করেন, যিনি ধর্মকে সংস্কার করে সজীব ও সতেজ করে থাকেন।” (আবু দাউদ শরীফ)

আমাদের এ উপমহাদেশে ইসলাম এসেছে অলী-আল্লাহগণের মাধ্যমে। তাঁদের মধ্যে বহুসংখ্যক এসেছেন সুদূর আরব ও পারস্য থেকে। তাঁদের ভাষা ছিল আরবি ও ফারসি। তাঁদের মাধ্যমে মানুষ আরবি এবং ফারসি এ দুটি ভাষার সাথেই পরিচয় লাভ করেছে। এছাড়া মোগল শাসনামলে এ উপমহাদেশে ফারসি ভাষা রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রচলিত ছিল। আমরা নামাজ, রোজা, পির, দরবেশ, ফেরেশতা ইত্যাদি ফারসি শব্দ ব্যবহার করে থাকি। সেজন্য মানুষ মোর্শেদ শব্দের সাথে পরিচিত নয়। মোর্শেদ শব্দের অর্থ হলো পথপ্রদর্শক। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ বলেন, “তোমাদের নিকট এসেছে আল্লাহর কাছ থেকে এক নুর বা জ্যোতি ও সুস্পষ্ট কিতাব। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে চায়, এর দ্বারা তিনি তাদের শান্তির পথে পরিচালিত করেন।” (সূরা আল মায়িদাহ ৫: আয়াত ১৫ ও ১৬)
মোর্শেদ এমন একজন মহামানব যিনি একদিকে যেমন আল্লাহর অলী, অপরদিকে তিনি হযরত রাসুল (সা.)-এর সিরাজুম মুনিরার ধারক ও বাহক। আমাদের মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) কামেল অলী-আল্লাহ্ সম্পর্কে একটি উদাহরণ দিয়ে বলেছেন- “হাসপাতালে রোগী আছে, কিন্তু চিকিৎসক নেই, তবে রোগী ভালো হবে না। এজন্য প্রয়োজন চিকিৎসকের। আল্লাহর বন্ধুগণ আধ্যাত্মিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকতুল্য এবং কলুষিত আত্মার চিকিৎসকতুল্য। তাঁদের সান্নিধ্যে যাওয়া ছাড়া যেমনি এলমে মারেফত হাসিল করা সম্ভব নয়, তেমনি সম্ভব নয় আত্মাকে রোগ মুক্ত করা। কোনো চিকিৎসকের নিকট থেকে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে সেই অনুযায়ী ঔষধ সেবন না করে রোগী যদি ব্যবস্থাপত্র মুখস্থ করে তাহলে যেমন রোগমুক্তির আশা করা যায় না। তদ্রæপ অলী-আল্লাহ্গণের সহবতে গিয়ে তাঁদের দেওয়া শিক্ষা না নিয়ে শুধু কুরআন হাদিস পড়লে তাদ্বারা আল্লাহ্কে পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ আল্লাহ্ নুরের। কালির অক্ষর পড়ে নুরের আল্লাহ্কে পাওয়ার প্রশ্নই উঠে না।” মানুষের কল্যাণ ও মুক্তির জন্য মোর্শেদের আবশ্যকতা অপরিসীম। এ প্রসেেঙ্গ পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ বলেন, “আল্লাহ্ যাকে গোমরাহ করেন, আপনি কখনো তার জন্য কোনো (মোর্শেদ বা) পথপ্রদর্শনকারী অভিভাবক পাবেন না।” (সূরা আল কাহ্ফ ১৮: আয়াত ১৭) এ আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, মোর্শেদের সান্নিধ্য ব্যতীত মানুষের মুক্তির কোনো সম্ভাবনা নেই। একজন ব্যক্তিকে মোর্শেদের সান্নিধ্যে যাওয়ার পর সাধনায় আত্মনিয়োগ করতে হয়। সাধনার পূর্ণতা লাভের জন্য মুরিদকে বেশকিছু বিধিবিধান পালন করতে হয়। লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে হলে আদব, বিশ্বাস, সাহস এবং মহব্বত থাকা একজন মুরিদের জন্য অপরিহার্য। মোর্শেদের প্রতি প্রগাঢ় বিশ্বাস থাকতে হবে। তিনি আল্লাহর মহান বন্ধু এবং তাঁর মাধ্যমেই আল্লাহ্ এবং হযরত রাসুল (সা.)-এর দিদার লাভে ও মঞ্জিলে মকছুদে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।
বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত আমাদের মহান মোর্শেদ। এ মহামানবের চিন্তা-চেতনা ও সুমহান শিক্ষা মহান আল্লাহ্ এবং হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রেমের দীপ্ত পথ ও নাজাতের পথ সুগম করেছেন বলেই অসংখ্য মানুষ তাঁর সহবতে এসেছেন। মানুষের শান্তি, কল্যাণ ও মুক্তি অর্জিত হয় তখনই, যখন মানুষ মহান প্রভুর প্রেরিত মহামানবদের অনুসরণ করে এবং তাঁদের দেওয়া বিধান মতে পরিচালিত হয়।

আল্লাহর বন্ধুগণ স্থান ও কালের ব্যবধানে বিভিন্ন রূপে বিভিন্ন নামে বিভিন্ন স্থানে আগমন করেন। সূফী সম্রাট বলেন, “হযরত রাসুল (সা.) এর রেখে যাওয়া শান্তি মুক্তি ও নাজাতের ধর্ম মোহাম্মদী ইসলাম অনুসরণের মাধ্যমে নবুয়ত পরবর্তী বেলায়েতের যুগেও অলী-আল্লাহ্গণের অনুসরণের মাধ্যমে আদর্শ চরিত্রবান হওয়া সম্ভব।” বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মহামানব আল্লাহর মহান বন্ধু সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজান মানুষকে সত্য ও আদর্শের পথে এবং আলোকিত মানুষ গড়ার জন্য আহ্বাবান করেছেন। আল্লাহর এ বন্ধু বহুগুণের অধিকারী ছিলেন। তিনি তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন অগণিত গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করেছেন এবং হযরত রাসুল (সা.)-এর রেখে যাওয়া মোহাম্মদী ইসলামকে কুসংস্কারমুক্ত করেছেন। মোহাম্মদী ইসলামের আদর্শ বিশ্বময় প্রচারের লক্ষ্যে সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান ১৯৮৫ সালে রাজধানী ঢাকার ১৫৪ আরামবাগে মোহাম্মদী ইসলামের অস্থায়ী কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে নারায়ণগঞ্জের দেওয়ানবাগে ‘বাবে জান্নাত’ দরবার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯২ সালে ঢাকায় ‘বাবে রহমত’, ১৯৮৭ সালে ঢাকায় ‘বাবে মদীনা’, ১৯৯৫ সালে রংপুরে ‘বাবে নাজাত’, ১৯৯৮ সালে ময়মনসিংহের ত্রিশালে ‘বাবে বরকত’, ২০০৬ সালে চুয়াডাঙ্গায় ‘বাবে নিয়ামত’, ২০০৮ সালে তাঁর মাতৃভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘বাবে মোর্শেদ’, ২০০৯ সালে ঢাকায় ‘বাবে ফিরদাউস’, ২০১০ সালে চট্রগ্রামে ‘বাবে মাগফিরাত’ এবং গাজীপুরে ‘বাবে জান্নাতুল মাওয়া’ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলাদেশে ২ শতাধিক খানকাহ শরীফ এবং ৫ শতাধিক আশেকে রাসুল জাকের মজলিস প্রতিষ্ঠা করেছেন। এছাড়াও তিনি বিশ্বের বহু দেশে মোহাম্মদী ইসলামের আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আশেকে রাসুল মজলিশ এবং বিশ্ব আশেকে রাসুল সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।

সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান মোহাম্মদী ইসলামের শিক্ষা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ইসলাম ধর্মের উপর অনেক কিতাব রচনা করেছেন। তাঁর রচিত গবেষণামূলক গ্রন্থসমূহ হচ্ছে- ১) স্রষ্টার স্বরূপ উদ্ঘাটনে সূফী সম্রাট: আল্লাহ্কে কি দেখা যায় না?; ২) বিশ্বনবীর স্বরূপ উদ্ঘাটনে সূফী সম্রাট: রাসূল (সঃ) সত্যিই কি গরীব ছিলেন?; ৩) ইমাম সৈয়দ আবুল ফজল সুলতান আহমদ (রহ.) (জীবনীগ্রন্থ); ৪) এজিদের চক্রান্তে মোহাম্মদী ইসলাম; ৫) সূফী সম্রাটের যুগান্তকারী অবদান: আল্লাহ কোন পথে?; ৬) শান্তি কোন পথে?; ৭) মুক্তি কোন পথে?; ৮) সূফী সম্রাটের ধর্মীয় সংস্কার (১ম ও ২য় খণ্ড); ৯) ঈদ সমস্যার সমাধান; ১০) ফেরকা সমস্যার সমাধান; ১১) সন্তানের প্রতি মায়ের অধিকার; ১২) কবর ও মাজার সম্পর্কে ইসলামের বিধান; ১৩) মোহাম্মদী ইসলামের ওয়াজিফা (দৈনিক আমল); ১৪) আল্লাহর নৈকট্য লাভের সহজ পথ; ১৫) বিশ্ববিখ্যাত তাফসীর কিতাব ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ নামে ৮ খণ্ডের তাফসীর কিতাব রচনা করেন। আমাদের মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজানের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ইসলামি শিক্ষা বিষয়ে এলমে তাসাউফ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ইসলাম ধর্মের গুরুত্ব¡পূর্ণ ইবাদত নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত, কোরবানিসহ সকল ইবাদত সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিয়ে নির্ভুল ইবাদত করে মহান প্রভুর সান্নিধ্য লাভের শিক্ষা দিয়েছেন। সূফী সম্রাটের শিক্ষা, সংস্কার নিয়ে গবেষণা করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহু গবেষক পিএইচ.ডি লাভ করেন। সূফী সম্রাট হুজুর স্বধর্মীদের অজ্ঞতা ও বিধর্মীদের চক্রান্তের ফলে ইসলামের নামে পবিত্র কুরআন ও হাদিস পরিপন্থী যেসব কুসংস্কার সমাজে প্রচলিত রয়েছে তার সংস্কার সাধন করেছেন। মানুষ নিজেকে পরিপূর্ণ জ্ঞানী মনে করার কারণে আল্লাহর উপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজের সীমিত বিচার বুদ্ধির উপর অধিক নির্ভরশীল হওয়ার ফলে মানুষের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনে পাপাচার বৃদ্ধি পেয়েছে। সাহাবায়ে কেরাম সর্বাবস্থায় আল্লাহ্তে আত্মসমর্পিত থেকে হযরত রাসুল (সা.)-এর নির্দেশিত পথে পরিচালিত ছিল বিধায় তারা ব্যক্তি জীবনে ও সমাজ জীবনে শান্তির অধিকারী ছিলেন।

সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান ইসলামের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন- “মানুষ যখন আল্লাহর মনোনীত মহামানবদের বিধান অনুসরণ করে ষড়রিপুর শৃঙ্খলা থেকে মুক্ত হয়ে সকল অন্যায় কর্ম থেকে বিরত থাকে, সাধনার মাধ্যমে আল্লাহর পরিচয় লাভ করে এবং তাঁর উপর পূর্ণ আত্ম সমর্পণের মাধ্যমে নিজেকে সর্বোত্তম পথে পরিচালিত করতে সক্ষম হয়, তখন নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা লাভ করে- মূলত এটিই মোহাম্মদী ইসলাম।” মুসলমান ঐ ব্যক্তি যে নিজে শান্তিতে বসবাস করে এবং অপরকে শান্তিতে বসবাস করতে দেয়। প্রকৃত মুসলমান কখনো কারো জন্য কষ্টের কারণ হয় না। নবুয়তের যুগে নবি-রাসুলগণ ও বেলায়েতের যুগে আউলিয়ায়ে কেরাম মানুষকে আলোকিত মানুষ করার বিধান দিয়ে চরিত্রবান মানুষ বানানোর জন্য ধূলির ধরায় তাশরিফ নিয়েছেন। সৃষ্টি জগতের মাঝে আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করার জন্যই আল্লাহ্ মানুষকে এ শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে পাঠিয়েছেন। মানুষ তার শ্রেষ্ঠত্ব হারিয়ে যখন নিকৃষ্ট জীবের আচরণ করে স্বাভাবিকভাবেই তার জন্য সমাজে দুঃখ ও অশান্তি নেমে আসে। মহান রাব্বুল আলামিন মানুষকে সত্য পথে চলার সুবিধার্থে যুগে যুগে নবি রাসুল এবং অলী-আল্লাহ্ প্রেরণ করে আসছেন। তাঁদের নির্দেশিত পথই শান্তির পথ নাজাতের পথ। মানুষ আল্লাহর বন্ধুদেরকে অস্বীকার করার কারণে নিজেই অশান্তি সৃষ্টি করে। ফলে সমাজে সেই মানুষ অশান্তির কারণ হয়ে যায়।

আত্মশুদ্ধি অর্জন করে নিজের মাঝে প্রভুর রাজত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহর প্রেরিত মহামানবগণের সাহচার্য প্রয়োজন। মহামানবদের আদর্শ ও ধর্মীয় বিধিবিধান অনুশীলনের মাধ্যমে চরিত্র বিশুদ্ধ করে প্রভুর প্রতিনিধিত্বের যোগ্যতা অর্জন করা সম্ভব। আল্লাহর মহান বন্ধু সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান শিক্ষা দিয়েছেন মানুষ যেন সাধনার মাধ্যমে চরিত্র সংশোধন করত প্রভুর ইচ্ছায় নিজেকে পরিচালিত করতে পারে। তিনি মানবতার সর্বোত্তম আদর্শের শিক্ষা দিয়েছেন। মানব প্রেমের এক মূর্ত প্রতীক ছিলেন আমাদের মোর্শেদ কেব্লাজান। একাধারে তিনি মহান মুক্তি সংগ্রামী বীর মুক্তিযোদ্ধা, অন্যদিকে তিনি সমাজ সংস্কারক, ধর্মের সজীবতা ও সতেজতা দানকারী, দয়াল রাসুল (সা.) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী। তিনি মানবতাবাদী একজন মহান দার্শনিক। তিনি সারা জীবন চেয়েছেন মানুষকে পাপমুক্ত, অন্যায়মুক্ত করে, সৎ চরিত্রবান হিসেবে গড়ে তুলে শান্তিময় জীবনদান ও আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জন করাতে। শান্তিময় এক মানব সমাজ গঠনে তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। শত লাঞ্ছনা-গঞ্জনা, মামলা-হুমকি হাসি মুখে মোকাবেলা করে গেছেন শুধু মানুষকে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথ দেখাতে। এই পথ দেখাতে গিয়ে তিনি জুলুম অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান স্বাধীনতা যুদ্ধে প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে ৩নং সেক্টর ও ‘এস’ ফোর্সের প্রধান মেজর জেনারেল কে.এম সফিউল্লাহর ত্বত্তাবধানে বিভিন্ন রণাঙ্গানে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করেছেন। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয় লাভ করেন। সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান স্বাধীন বাংলাদেশে ঢাকার তদানীন্তন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সর্বপ্রথম ঈদুল আজহার জামাতের ইমামতি করেছেন। তিনি মোহাম্মদী ইসলামকে বিশ্বব্যাপী প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে ঘরে ঘরে আশেকে রাসুল সৃষ্টি করেছেন। তিনি মোহাম্মদী দ্বিনকে জগতের বুকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে নিরলস পরিশ্রম করেছেন। তিনি মানবজাতির নৈতিক অবক্ষয় রোধকল্পে নুরে মোহাম্মদীর দীপ শিখা বিশ্ববাসীর মাঝে জ্বালিয়ে প্রমাণ করেছেন যে, মোহাম্মদী ইসলাম প্রকৃতপক্ষেই শান্তির ধর্ম। সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের সুযোগ্য উত্তরসূরি ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর তরুণ বয়স থেকেই সূফী সম্রাটের সাথে বলিষ্ঠভাবে থেকে বিশ্বব্যাপী মোহাম্মদী ইসলাম প্রচারে ভূমিকা রেখেছেন।

আল্লাহর মহান বন্ধু মহান রাব্বুল আলামিনের ডাকে সাড়া দিয়ে ২০২০ সালের ২৮শে ডিসেম্বর দেশ বিদেশের কোটি কোটি মুরিদ সন্তান ও পরিবারের সবাইকে শোক সাগরে ভাসিয়ে দারুল বাকায় তাশরিফ নেন। এ মহামানব পূর্বে তাঁর রেখে যাওয়া মোহাম্মদী ইসলামের আদর্শ, শিক্ষা ও সংস্কার বিশ্বময় প্রচার করার জন্য তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরি নুরে মোহাম্মদীর ধারক ও বাহক ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুরকে নেতৃত্ব প্রদানকারী মহামানবের দায়িত্ব দিয়ে গেছেন।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজানের শুভ জন্মদিন স্মরণে ২০২২ সাল থেকে বিশ^ আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনের আহ্বাবান করেছেন।

পরিশেষে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রার্থনা করছি, তাঁর মহান বন্ধুর পবিত্র জন্মদিনে আমরা তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শ নিজেরা আমল করতে পারি এবং পরিবার পরিজন নিয়ে ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুরের মাধ্যমে মোহাম্মদী ইসলামের গোলামিতে সামিল হয়ে নিজেদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে পারি। আমিন।


সংকলনে- ড. মোবারক হোসেন, ইসলাম বিষয়ক লেখক

সম্পর্কিত পোস্ট