মহান আল্লাহর বাণী মোবারক
নিশ্চয় যে ঘর সর্বপ্রথম মানুষের (ইবাদতের) জন্য স্থাপিত হয়েছিল, তা তো সে ঘর, যা মক্কায় অবস্থিত। যা বরকতময় এবং বিশ্ববাসীর জন্য হিদায়েত, এতে রয়েছে অনেক প্রকাশ্য নির্দশন, মাকামে ইব্রাহীম তার অন্যতম। যে কেউ এ ঘরে প্রবেশ করে সে নিরাপদ হয়ে যায়। মানুষের মধ্যে তার উপর আল্লাহর জন্য এ ঘরের হজ করা ফরজ, যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে।
(সূরা আলে ইমরান ৩ : আয়াত ৯৬ ও ৯৭)
হে ইব্রাহীম (আ.) মানুষের মধ্যে হজের জন্য ঘোষণা করে দিন, তারা আপনার নিকট আসবে পায়ে হেঁটে এবং সব ধরনের দুর্বল উটের পিঠে সওয়ার হয়ে (দূর থেকে আসার কারণে উটগুলো দুর্বল হয়ে পড়বে) তারা আসবে দূর দূরান্তের পথ অতিক্রম করে।
(সূরা আল হাজ্জ ২২ : আয়াত ২৭)
আল্লাহ্র কাছে পৌঁছে না এগুলোর (কোরবানিকৃত পশুর) গোশত এবং না এগুলোর রক্ত, বরং তাঁর নিকট পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া, এভাবেই তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন যেন তোমরা আল্লাহর মহত্ব ঘোষণা করো, যেহেতু তিনি তোমাদেরকে হিদায়েত দান করেছেন। সুতরাং সুসংবাদ দাও নেককার লোকদেরকে।
(সূরা আল হাজ্জ ২২ : আয়াত ৩৭)
হযরত রাসুল (সা.)-এর বাণী মোবারক
হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন আল্লাহর রাসুল (সা.) এরশাদ করেন- “আমার ওফাতের পর যে ব্যক্তি হজ সম্পাদন করে আমার রওজা শরীফ জিয়ারত করল, সে যেন আমার জীবদ্দশায় আমার সাথে সাক্ষাৎ করল।” (বায়হাকী শরীফ ৫ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪০৩)
হযরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন আমি আল্লাহ্র রাসুল (সা.)-কে বিদায় হজের দিন আরাফাতের ময়দানে কাসওয়া নামক উটের পিঠে দেখলাম, আমি তাকে বলতে শুনেছি তিনি বিদায় হজের খুতবা দিয়ে বলেছেন, হে লোকসকল! আমি তোমাদের নিকট ঐ বস্তু রেখে যাচ্ছি, যা আঁকড়ে ধরলে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবে না, আর তা হলো আল্লাহ্র কিতাব এবং আমার আহলে বাইত। (তিরমিযী শরীফ ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ২১৯)
হযরত জাবের (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন- আল্লাহর রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, আরাফাত দিবসে মহান আল্লাহ্ ফেরেশতাদের বলেন- “তোমরা আমার বান্দাদের দিকে দেখো তারা আমার নিকট আসছে এলোমেলো বেশে, ধুলোবালি গায়ে, ফরিয়াদ করতে করতে বহু দূর দূরান্ত থেকে, হে ফেরেশতাগণ! আমি তোমারেকে সাক্ষী রেখে বলছি আমি তাদেরকে মাফ করে দিলাম। তখন ফেরেশতারা বলেন, হে আমার প্রতিপালক অমুককে তো বড় গুনাহগার বলা হয়, আর উমুক পুরুষ ও উমুক স্ত্রীকেও গুনাহগার বলা হয়। হযরত রাসুল (সা.) বলেন- তখন আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, আমি তাদেরকেও মাফ করে দিলাম। অতঃপর আল্লাহ্র রাসুল (সা.) এরশাদ করেন- আরাফাতের দিবসে এতসংখ্যক লোককে আল্লাহ্ মুক্তি দেন, যা আর কোনো দিন দেন না।”
(শরহে সুন্নাহ কিতাবের সূত্রে মেশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ২২৯)
মহামানবগণের বাণী মোবারক
কোরবানি হচ্ছে- মানুষের আত্মা থেকে পশু প্রবৃত্তিকে দূর করে আল্লাহর প্রেম হাসিল করা।
-সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মা. আ.)
ধনীদের উপর হজ পালনের বিধান রাখার উদ্দেশ্য হলো তাদেরকে ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার ট্রেনিং বা অনুশীলন করার একটি ব্যবস্থা তৈরি করা।
-সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মা. আ.)
মারেফাতের দৃষ্টিকোণ থেকে আপন ক্বালবে আল্লাহর দিদার লাভ করা এবং তাঁর আনুগত্য স্বীকার করার মাধ্যমে হাকিকতে হজ পালন হয়ে থাকে।
-সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মা. আ.)
এ কাবায় হযরত ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ্ বসবাস করতেন, আর অলী-আল্লাহর দিল কাবায় মহান প্রভু আল্লাহ্ বসবাস করেন।
-হযরত জালালউদ্দিন রুমী (রহ.)
আল্লাহর অলীকে ভালোবাসা আকবরি হজের চেয়েও অধিক ফজিলতপূর্ণ, লক্ষ কাবার চেয়েও আল্লাহর অলীর এক দিলের মর্তবা অনেক বেশি।
-হযরত জালালউদ্দিন রুমী (রহ.)
কিছু লোক আছে যারা পুরস্কারের আশায় আল্লাহর ইবাদত করে। নিশ্চয় এটা ব্যবসায়ীদের ইবাদত। আবার কিছু লোক ভয়ে আল্লাহর ইবাদত করে, এটা দাসদের ইবাদত। এরপরও কিছু লোক কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য আল্লাহর ইবাদত করে এটা স্বাধীন মানুষের ইবাদত।
-হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু
যদি কেবলমাত্র কিতাবি বিদ্যার দ্বারা রিপু দূর বা দমন হতো এবং আত্মশুদ্ধি হতো, তাহলে হাফেজ, কারী, মৌলভী ও মাওলানা সাহেবরা কঠিন কঠিন পাপের কাজ করতো না।
-ইমাম সৈয়দ আবুল ফজল সুলতান আহমদ (রহ.)