মোর্শেদের দরবারে মুরিদের করণীয়
ইমাম ড. আরসাম কুদরত এ খোদা
মহান রাব্বুল আলামিন মানবজাতির মুক্তি ও কল্যাণের জন্য যুগে যুগে তাঁর বন্ধুদেরকে জগতের বুকে প্রেরণ করে থাকেন, তাঁদেরকে মোর্শেদ বলে। ‘মোর্শেদ’ আরবি শব্দ, যার অর্থ পথ প্রদর্শক। মোর্শেদ ঐ মহান ব্যক্তি, যিনি গভীর সাধনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ্ ও হযরত রাসুল (সা.)-কে পেয়েছেন এবং মানুষকে আল্লাহ্ ও হযরত রাসুল (সা.)-এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে সক্ষম। আমাদের এই উপমহাদেশে কোনো নবি-রাসুল ধর্ম প্রচার করতে আসেননি। আমরা ধর্ম পেয়েছি অলী-আল্লাহ্গণের মাধ্যমে। তাঁদের সান্নিধ্যে গিয়ে মানুষ উত্তম চরিত্রের অধিকারী হয়েছেন। তাই আজও মানুষ মোর্শেদ বা পথ প্রদর্শকরূপে আগত অলী-আল্লাহ্গণের পথ অনুসরণ করে মহান আল্লাহ্ ও হযরত রাসুল (সা.)-এর নৈকট্য লাভ করছেন। এই দেশে অসংখ্য পির-মাশায়েখ রয়েছেন বটে, কিন্তু যিনি যুগের ইমাম তিনি তাওয়াজ্জোহ্ এত্তেহাদি ও অলৌকিক কারামতের অধিকারী।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, তাওয়াজ্জোহ্ অর্থ লক্ষ্য, নেকদৃষ্টি। এটি ৪ প্রকার। যথা- ১. তাওয়াজ্জোহ্ এন্কাছি, ২. তাওয়াজ্জোহ্ এলকায়ি, ৩. তাওয়াজ্জোহ্ এছলাহি ও ৪. তাওয়াজ্জোহ্ এত্তেহাদি।
অলী-আল্লাহ্গণের মধ্যে উল্লিখিত ৪ প্রকার তাওয়াজ্জোহ্ রয়েছে। সবচেয়ে শক্তিশালী হলো তাওয়াজ্জোহ্ এত্তেহাদি। মোজাদ্দেদ বা যুগের ইমাম এই তাওয়াজ্জোহ্ দিয়ে হেদায়েতের কাজ পরিচালনা করেন। মোকাম্মেল মোর্শেদ বা যুগের ইমাম ইচ্ছা করলে এই তাওয়াজ্জোহর মাধ্যমে একজন সাধারণ মানুষকেও অলী-আল্লাহ্ বানিয়ে দিতে পারেন।
বর্তমান যুগের এই ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ পৃথিবীর মানুষের কল্যাণ ও মুক্তির জন্য অলৌকিক ক্ষমতা ও তাওয়াজ্জোহ্ এত্তেহাদি নিয়ে যে মহামানব আগমন করেছেন, তিনি হলেন মহান সংস্কারক সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজান। তিনি একদিকে যেমন আল্লাহর প্রিয় বন্ধু, অপরদিকে হযরত রাসুল (সা.)-এর সিরাজাম মুনিরার ধারক ও বাহক। সূফী সম্রাট হুজুর কেবলার সান্নিধ্যে এসে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ ক্বালবে আল্লাহর জ্বিকির জারি করে আত্মশুদ্ধি লাভ করত আশেকে রাসুলে পরিণত হচ্ছেন এবং পার্থিব যাবতীয় বিপদ-আপদ, বালা-মছিবত থেকে পরিত্রাণ পাচ্ছেন। আমাদের সমাজের এক শ্রেণির লোকের ধারণা মোর্শেদের কোনো প্রয়োজন নেই। নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদি ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করলেই আল্লাহ্কে পাওয়া যাবে। তাদের এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
এই প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ বলেন, “আল্লাহ্ যাকে গোমরাহ করেন, আপনি কখনো তার জন্য কোনো (মোর্শেদ) পথ প্রদর্শনকারী অভিভাবক পাবেন না।” (সূরা কাহাফ : আয়াত-১৭)
এই আয়াতের মধ্যে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, মোর্শেদের সান্নিধ্য ব্যতীত মানুষের মুক্তির কোনো সম্ভাবনা নেই। একজন ব্যক্তিকে মোর্শেদের সান্নিধ্যে পাওয়ার পর সাধনায় আত্মনিয়োগ করতে হয়। সাধনার পূর্ণতা লাভের জন্য মুরিদকে বেশ কিছু বিধি-বিধান পালন করতে হয়। লক্ষ্যস্থলে পৌঁছতে হলে বিশ্বাস, আদব, সাহস এবং মহব্বত থাকা একজন মুরিদের জন্য অপরিহার্য। মোর্শেদের প্রতি প্রগাঢ় বিশ্বাস থাকতে হবে যে, মোর্শেদ আল্লাহর মহান বন্ধু এবং তাঁর মাধ্যমেই আল্লাহ্ এবং হযরত রাসুল (সা.)-এর দিদার লাভ ও মঞ্জিলে মকছুদে পৌঁছতে সক্ষম হবো। মোর্শেদের প্রতি বিশ্বাসের বিন্দুমাত্র ঘাটতি হলে লক্ষ্যস্থলে পৌঁছা যাবে না। মোর্শেদের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপিত হলে তখনই মোর্শেদের প্রতি সৃষ্টি হয় মহব্বত ও প্রেম, যা সাধনার পথে উন্নতির সোপান। মোর্শেদের প্রতি এরূপ প্রেম ও মহব্বত থাকতে হবে যেন মোর্শেদের সান্নিধ্য লাভের জন্য মন সর্বদা ব্যাকুল থাকে। তাহলে ঐ মুরিদের প্রতি মোর্শেদের রূহানি দৃষ্টি থাকে। ফলে মুরিদ যে কোনো বিপদ-আপদে মোর্শেদকে স্মরণ করা মাত্রই তাঁর সাহায্য ও দয়া পেয়ে থাকে।
মোর্শেদের দরবারে সর্বদাই মুরিদকে আদব রক্ষা করে চলতে হয়। আদব হচ্ছে ভদ্রতা, নম্রতা, শালীনতা, হৃদ্যতা- এক কথায় পরিশীলিত আচরণ। আদব রক্ষাকারী মুরিদ মোর্শেদের নেকদৃষ্টির মাধ্যমে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত ও বরকত লাভ করতে সক্ষম হয়।
হযরত জালাল উদ্দিন রুমি (রহ.) বলেন, “বেয়াদব আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত।” মুরিদের মনে এরূপ সাহস থাকতে হবে যে, মোর্শেদের পক্ষ থেকে দেওয়া ওয়াজিফা ও নির্দেশনাবলি আমল করে মুরিদ গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে সক্ষম হবে। এই গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর জন্য মুরিদকে নিয়মিত মোরাকাবা করতে হয়। সাধনার পথে মোরাকাবারত অবস্থায় মুরিদ আধ্যাত্মিক জগতের অনেক কিছু দেখতে পায়। অনেক সময় রহস্য জগতের বিষয়গুলো অবলোকন করে মুরিদ ভয় পেয়ে মোরাকাবায় খেয়াল ছেড়ে দেয়। এছাড়া মুরিদ মোরাকাবারত অবস্থায় নিজের আত্মার বিভিন্ন ছুরত দেখে ভয় পেয়ে যায়। সেসময় সাহসের সাথে মোরাকাবা চালিয়ে যেতে পারলে তখন মোর্শেদের অপার দয়ায় ক্বালবের দ্বার খুলে গেলে আপন ক্বালবের নাফসির মোকামে দয়াময় প্রভুর নুরময় সত্তাকে মুরিদ দেখার সৌভাগ্য লাভ করে, তখন দয়াময় প্রভুর কদম পাকে হাজির হয়ে নিজেকে প্রভুর দাস হতে হয়। দাস যখন মহান মালিকের কদমে হাজির হয়ে আপন মোর্শেদের অসিলা ধরে নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, তখন দয়াময় প্রভু দয়া করে তাকে ক্ষমা করে দেন। তবে তরিকা পালনের ক্ষেত্রে নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে হয়। এছাড়া পারিবারিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা এবং এক শ্রেণির অলী-আল্লাহ্ বিদ্বেষী কিতাবধারী আলেমদের কুমন্ত্রণা ও কুপরামর্শ সাহসিকতার সাথে মোকাবিলা করতে হবে। অন্যথায়, সাহসের অভাবে মুরিদ তরিকতের পূর্ণতা লাভ থেকে বঞ্চিত হবে।
মোর্শেদের দেওয়া ওয়াজিফা আমল ও দরবার শরিফে গোলামির ফলে মুরিদের ওপর মোর্শেদের দয়ার দৃষ্টি পতিত হয়। তখন মুরিদ আধ্যাত্মিক জগতের অনেক ভেদ ও রহস্য সম্পর্কে অবগত হয়ে থাকে। এভাবে মুরিদ যখন সাধনার স্তরগুলো পর্যায়ক্রমে অতিক্রম করতে থাকে, তখন কোনো কোনো মুরিদের মধ্যে এরূপ ভাবের উদয় হয় যে, সে কামালিয়াত অর্জন করেছে। তার মধ্যে ‘পির’ হওয়ার খায়েশ জন্মে। তখন সে পির সেজে মানুষকে তার অনুসারী করতে চায়। মুরিদকে মনে রাখতে হবে যে, মুরিদ সর্বদাই মোর্শেদের আলো দ্বারা আলোকিত। মুরিদের নিজস্ব কোনো আলো নেই। সুতরাং মুরিদ যদি ঐরূপ ধারণা পোষণ করে, তাহলে সে নিশ্চিত বেইমান হয়ে যাবে। মুরিদের সর্বদা এরূপ আজিজি থাকতে হবে যে, মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত যেন মোর্শেদের গোলাম হয়ে গোলামি করে জীবন অতিবাহিত করতে পারে। এরূপ মনোভাব সম্পন্ন মুরিদ মোর্শেদের নেকদৃষ্টি লাভ করতে সক্ষম হয় এবং আপদ-বিপদে মোর্শেদের অলৌকিক সাহায্য পেয়ে থাকে।
মুরিদকে ‘তরিকা’ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। ‘তরিকা’ শব্দের অর্থ হচ্ছে পথ বা রাস্তা। এলমে তাসাউফের ভাষায় আল্লাহ্ ও হযরত রাসুল (সা.)-এর নির্দেশিত পথকে তরিকা বলে। একজন ব্যক্তি মোকাম্মেল মোর্শেদের সান্নিধ্যে গিয়ে তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী নামাজ-রোজা, মোরাকাবা-মোশাহেদা করে আল্লাহর নৈকট্য লাভের পথকেই তরিকা বলে। অন্ধকার থেকে আলোর রাস্তার পথ বা পদ্ধতি তথা তরিকা যুগের মানুষকে মূলত আত্মিকভাবে প্রতিপালন করতে হয়। ধর্মের বাহ্যিক ক্রিয়াকলাপ অন্তরের প্রেরণায় একাগ্রতার সাথে না করলে সঠিকভাবে ধর্ম পালন করা যায় না। তাছাড়া আত্মিক পরিশুদ্ধিতার জন্য ফায়েজ হাসিলের মাধ্যমে যে সাধনা, তা সম্পূর্ণরূপে আত্মার সাহায্যে পালন করতে হয়। ইসলামের প্রকৃত শান্তি আত্মিক সাধনার মাধ্যমে বাস্তবে অর্জন করতে হয়। আর এজন্য অলী-আল্লাহ্গণের সান্নিধ্যে গিয়ে তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে হৃদয়ে ইমানের বীজ ধারণ অত্যাবশ্যক। সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেব্লাজান পবিত্র কুরআনের আলোকে তরিকার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, “তরিকা হচ্ছে সিরাতুল মুস্তাকিম অর্থাৎ- সরল সঠিক পথ। যে পথে সাধনা করলে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন এবং রাহমাতুল্লিল আলামিনের পরিচয় ও দিদার লাভ করা যায়, উহাই মূলত তরিকা।”
মুরিদ কর্তৃক মোর্শেদের দরবারে যে কোনো ধরনের গোলামিই তরিকার অন্তর্ভূক্ত। এই পৃথিবীতে অসংখ্য তরিকার উদ্ভব ঘটেছে। সূফী দর্শন নামক গ্রন্থে ২৮০টি বিশিষ্ট তরিকার উল্লেখ রয়েছে। তবে বিশ্বময় মানুষের কাছে ৫টি বিখ্যাত তরিকার প্রচার লক্ষ্য করা যায়। বড়পির হযরত মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের জিলানি (রহ.) কর্তৃক প্রণীত তরিকাকে তাঁর নামানুসারে কাদেরিয়া তরিকা বলা হয়। হযরত খাজা মঈনউদ্দিন চিশতি (রহ.)-এর তরিকাকে চিশতিয়া তরিকা, হযরত খাজা বাহাউদ্দিন নক্সবন্দি (রহ.) প্রণিত তরিকাকে নক্সবন্দিয়া তরিকা এবং হযরত শেখ আহমদ সিরহিন্দি মোজাদ্দেদ আল ফেসানি (রহ.) প্রণিত তরিকাকে মোজাদ্দেদিয়া তরিকা বলা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন তরিকার প্রচলন রয়েছে। আমাদের এই বাংলাদেশে হযরত ইমাম সৈয়দ আবুল ফজল সুলতান আহমদ (রহ.) প্রবর্তিত তরিকা ‘সুলতানিয়া- মোজাদ্দেদিয়া তরিকা’ নামে পরিচিত।
নবুয়ত যুগের পর কিয়ামত পর্যন্ত বেলায়েতের যুগ চলতে থাকবে। এই সময়ে এক একজন যুগশ্রেষ্ঠ অলী-আল্লাহ্ মানুষের নাজাত ও মুক্তির জন্য পবিত্র কুরআন ও হাসিদের আলোকে যে সহজ পথে প্রদর্শন করে থাকেন, উহাই তরিকা। মানুষ তরিকা পালন করে অর্থাৎ অলী-আল্লাহর দেখানো পথ পরিচালিত হয়ে সহজে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারে। যে অলী-আল্লাহ্ ঐ তরিকা বা পথের সন্ধান দিয়ে থাকেন, তাঁকে ঐ তরিকার ইমাম বলা হয়। প্রত্যেক যুগে একজন ইমাম থাকেন। তাঁর প্রদর্শিত তরিকা অবলম্বন করেই সবচেয়ে সহজে মুক্তি লাভ করা যায়। নবুয়তের যুগে একই সঙ্গে একাধিক নবির অনুসারী হওয়ার বিধান ছিল না। বেলায়েতের যুগেও তেমনি একই সঙ্গে একাধিক তরিকার সবক নেয়ার বিধান নেই। প্রত্যেক যুগে আল্লাহর মনোনীত এমন একজন মহামানব থাকেন, যিনি হেদায়েতের দায়িত্ব পালন করেন অর্থাৎ মানুষকে হেদায়েত দান করে থাকেন। হাদি শ্রেণির অলী-আল্লাহ্গণ তাঁর পরিচালনাধীন হেদায়েতের কাজ চালিয়ে থাকেন।
মহান আল্লাহ্র অপার দয়ায় ইমাম সৈয়দ আবুল ফজল সুলতান আহমদ (রহ.)-এর নামে ‘সুলতানিয়া-মোজাদ্দেদিয়া তরিকা’ প্রচার করার পরে তাঁরই সুযোগ্য উত্তরসূরি মহান সংস্কারক সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজান তরিকতের কঠোর সাধনা করে কামালিয়াতের সর্বোচ্চ মর্যাদায় আসীন হন। তাই আল্লাহর প্রিয় হাবিব হযরত রাসুল (সা.) ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দের ৫ এপ্রিল, সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজানকে ‘মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী’ খেতাবে ভূষিত করেন। তখন থেকেই সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজান তাঁর মোর্শেদের প্রবর্তিত সুলতানিয়া-মোজাদ্দেদিয়া তরিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেননি। তাছাড়া তিনি ইসলামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের যে সংস্কার সাধন করেছেন, তা সত্ত্বেও তিনি তাঁর স্বনামে কোনো তরিকা প্রবর্তন না করে বরং বিশ্বনবি হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রচারিত মোহাম্মদী ইসলাম প্রচার করে যাচ্ছেন সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজান।
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের সান্নিধ্যে এসে এবং তাঁর সুমহান শিক্ষা গ্রহণ করার পর মুরিদকে কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। যেমন- মুরিদের তরিকত জগতে সাধনা ও আমলের পথে আমিত্ব, অহংকার ও ঐশ্বর্য যেন বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। মুরিদ যখন মোর্শেদের পক্ষ থেকে বিশেষ দয়া ও আল্লাহ্র রহমত পেতে থাকে, তখন তার মধ্যে আমিত্ব সৃষ্টি হতে পারে। এই আমিত্ব থেকে জন্ম হয় অহংকারের, যা তরিকতের উন্নতির পথকে ব্যাহত করে।
অন্যদিকে মুরিদ যখন ধন-সম্পদ, যশ-খ্যাতি এক কথায় ঐশ্বর্যশালী হয়, তখনও তার ভিতর আমিত্ব সৃষ্টি হতে পারে। এই থেকে পরিত্রাণ পাওয়া আবশ্যক। পরিত্রাণের উপায় হচ্ছে- মোর্শেদের দরবারে গোলামি করা। প্রত্যেক মুরিদকে মোর্শেদের পক্ষ থেকে দেওয়া ওয়াজিফার আমলগুলো নিয়মিত পালন করা অত্যাবশ্যক। আল্লাহ্ প্রাপ্তির পথে অগ্রগতির শ্রেষ্ঠ উপায় হচ্ছে মোরাকাবা। দোজাহানের বাদশাহ হযরত রাসুল (সা.) সুদীর্ঘ ১৫ বছর হেরাগুহায় মোরাকাবার মাধ্যমে সেই অসীম সত্তা মহান রাব্বুল আলামিনের পরিচয় পেয়েছেন। উল্লেখ্য যে, পৃথিবীতে ১ লক্ষ ২৪ হাজার নবি-রাসুল আগমন করেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই একই পদ্ধতিতে অর্থাৎ- মোরাকাবার মাধ্যমেই মহান প্রভুর সন্ধান লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন। এই থেকেই স্পষ্ট বুঝা যায়, মোরাকাবার মাধ্যমে নিজ আমিত্ব দূর করে স্রষ্টার নৈকট্য লাভ করা সম্ভব। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে- “এক ঘন্টা মোরাকাবা করা ৬০ বছরের নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম।”
সকল ইবাদতের ক্ষেত্রেই মোরাকাবার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। যেমন-একাগ্রচিত্তে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে, মিলাদ পাঠের ক্ষেত্রে, রোজা পালনের ক্ষেত্রে, হজ পালনের ক্ষেত্রেও মোরাকাবার গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়া মানুষের মধ্যে যে ষড়রিপু যথা- কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য রয়েছ, এই ষড়রিপু থেকে আত্মাকে পবিত্র করতে হলে মোরাকাবার প্রয়োজন। কেননা, মুরিদ যখন মোরাকাবায় বসে খেয়ালের সাথে মোর্শেদের কদম মোবারক জড়িয়ে ধরে কাকুতি-মিনতি করতে থাকে, তখন মোর্শেদের পক্ষ থেকে মুরিদের হৃদয়ে ফায়েজ বর্ষিত হয়। ফলে ষড়রিপুর দোষ-ত্রুটি ও কু-প্রভাব ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হতে থাকে।
মোর্শেদের পক্ষ থেকে দেওয়া মোহাম্মদী ইসলামের মিলাদ শরিফ নিয়মিত পাঠ করা একান্ত জরুরি। কেননা, মিলাদ পাঠে হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রেম, ভালোবাসা হৃদয়ে সৃষ্টি হয় এবং হযরত রাসুল (সা.)-এর দিদার লাভ করার সৌভাগ্য অর্জন হয়। এছাড়া মিলাদের মাধ্যমে রোগ-শোক, বালা-মছিবত, পারিবারিক অশান্তি দূর হয় এবং আয়-রোজগারে বরকত হয়। হযরত রাসুল (সা.)-এর শাফায়াত নছিব হয়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার পর একজন শিক্ষার্থীকে নিয়মিত ক্লাসে যেতে হয় এবং শিক্ষকের আলোচনা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করতে হয়। মোর্শেদের দরবার হচ্ছে মহান আল্লাহ্ এবং হযরত রাসুল (সা.)-এর নৈকট্য লাভের আধ্যাত্মিক তথা তাসাউফের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাই যতটুকু বেশি সম্ভব মোর্শেদের সান্নিধ্যে এসে তাঁর মহামূল্যবান বাণী মোবারক শ্রবণ করা সাধনার পথে উন্নতির জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এই প্রসঙ্গে বিখ্যাত সুফি সাধক হযরত জালাল উদ্দিন রুমি (রহ.) বলেন, “এক মুহূর্ত কোনো অলী-আল্লাহ্র সহবতে থাকা একশত বছরের অহংকার মুক্ত ইবাদতের চেয়ে উত্তম।”
মূলত একজন মুরিদের পাপ মোচনের সর্বোত্তম পন্থা হচ্ছে আপন মোর্শেদের সহবতে থাকা। জনৈক সাধক বলেন-“মোর্শেদের নেক দৃষ্টিতে (তাওয়াজ্জোহ্তে) যত পাপ ঝরে, বান্দার কি সাধ্য আছে তত পাপ করে।” জেনে রাখা দরকার- জন্মদাতা পিতা তার সন্তানকে যতটুকু ভালোবাসেন, আত্মার পিতা তথা আপন মোর্শেদ মুরিদ সন্তানকে আপন পিতার চেয়েও বহুগুণ বেশি ভালোবাসেন। জন্মদাতা পিতা মুমূর্ষূ সন্তানের শয্যা পাশে বসে অশ্রু বিসর্জন দিতে পারে বটে, কিন্তু সন্তানের আরোগ্যের জন্য তার করণীয় কিছুই থাকে না। পক্ষান্তরে আত্মার পিতা বা মোর্শেদ ঐ মুমূর্ষূ অবস্থা থেকে অলৌকিকভাবে তাঁর মুরিদ সন্তানকে সুস্থ করে তুলতে থাকেন। তাহলে সেই মোর্শেদের প্রতি মুরিদের ভালোবাসা কেমন হওয়া উচিত? মুরিদের আত্মার পিতা হলেন মোর্শেদ।
মুরিদ হচ্ছে মোর্শেদের রূহানি সন্তান। তাই প্রত্যেক মুরিদ সন্তান একে অপরের ভাইতুল্য। মুরিদ সন্তানদের মধ্যে পারস্পরিক স্নেহ-মমতা ভালোবাসা, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্ব সুলভ মনোভাব বজায় থাকলে মোর্শেদের সন্তুষ্টি লাভ করা সম্ভব। এক কথায়- সবাই এক সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মোর্শেদের সুহান শিক্ষা ও আদর্শ মানুষের কাছে প্রচার করলে মোর্শেদের নেকদৃষ্টির বদৌলতে মুরিদের ভাগ্য সুপসন্ন হয়। বর্তমানে বিশ্বের শতাধিক দেশের মানুষ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সূফী সম্রাট কর্তৃক প্রচারিত মোহাম্মদী ইসলামের শিক্ষা গ্রহণ করে আশেকে রাসুল হওয়ার দুর্লভ সুযোগ লাভ করেছেন। সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজান তরিকার সীমারেখা অতিক্রম করে হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রবর্তিত মোহাম্মদী ইসলাম প্রচার করেছেন। এই মোহাম্মদী ইসলামই নাজাত বা মুক্তির একমাত্র সহজ পথ।
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের একজন নালায়েক গোলাম হওয়ার সুযোগ আল্লাহ্ আমাদেরকে দান করেছেন, এজন্য তাঁর দরবারে জানাই লাখো শুকরিয়া। আমাদেরকে স্মরণ রাখতে হবে যে, পৃথিবীতে যত নবি-রাসুল এসেছেন, সকলের ধর্মই ছিল ইসলাম। ঈসায়ি ইসলাম, মুসায়ি ইসলাম এবং ইব্রাহিমি ইসলাম এই জগতে বিরাজমান ছিল। আমরা অনুসরণ করি হযরত মুহাম্মদ (সা.) প্রবর্তিত মোহাম্মদী ইসলামের। এই ইসলামই সমাজের মানুষকে শান্তি দিতে সক্ষম। বিশ্বনবির পরে তাঁর সাহাবিগণও মোহাম্মদী ইসলামের আদর্শ তথা বায়েতের ইসলাম ৩০ বছর পর্যন্ত টিকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু দুরাচারী এজিদ ৬১ হিজরিতে হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)-কে কারবালার প্রান্তরে নির্মমভাবে শহিদ করে যে ইসলাম চালু করেছে, উহাই মূলত এজিদি ইসলাম। মোহাম্মদী ইসলাম হচ্ছে শান্তির ধর্ম। এতে অশান্তি ও হানাহানির কোনো স্থান নেই। হযরত রাসুল (সা.)-এর আদর্শ তথা প্রেম, প্রীতি, সৌহার্দ্য, মহব্বত, ভ্রাতৃত্ব ও ত্যাগের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা সম্ভব। সুতরাং একথা নিশ্চিত করে বলা যায় যে, ইসলামে সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই।
হযরত রাসুল (সা.) বলেছেন, “মুসলমান ঐ ব্যক্তি যার হাত এবং জবান (মুখ) দ্বারা অন্য মুসলমান নিরাপদে থাকে।”
এটাই হচ্ছে মোহাম্মদী ইসলামের শিক্ষা। সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান এই আদর্শ তথা মোহাম্মদী ইসলাম প্রচার করে যাচ্ছেন। তাঁর অসংখ্য মুরিদ সন্তান সাধনার মাধ্যমে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর দিদার পেয়ে আশেকে রাসুলে পরিণত হচ্ছেন। সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান তাঁর ভক্ত অনুসারীদেরকে ক্বালবে আল্লাহর জ্বিকির জারির সবক দিয়ে ওয়াজিফার আমল করার জন্য নির্দেশ দিয়ে থাকেন। এই ওয়াজিফা এমনই বরকতপূর্ণ যে, আশেকে রাসুলেরা তা আমল করে নামাজে হুজুরি বা একাগ্রতা অর্জন করেছেন এবং বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন। গভীর সাধনার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি অর্জন করারও সৌভাগ্য লাভ করছেন।
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের কাছে লতিফায়ে ক্বালবে সবক নেওয়ার পর থেকে শুরু হয় নফসের সাথে জিহাদ। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘‘সবচেয়ে উত্তম জিহাদ হচ্ছে নফসের সাথে জিহাদ করা।’’ সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের শিক্ষা গ্রহণ করে একজন মানুষ সত্যিকারের মুজাহিদ (যিনি নফসের সাথে যুদ্ধ করে জয়ী হন তিনিই প্রকৃত মুজাহিদ) পরিণত হতে সক্ষম হন। জেনে রাখা দরকার যে, মসজিদে বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা অথবা অন্য কোনো উপায়ে ক্ষমতা দখল করার কূট কৌশলকে জিহাদ বলে না। ইসলাম এই ধরনের কর্মকাণ্ডের সম্পূর্ণ বিরোধী। যারা এমন কাজ করছে, তারা নিজেরা যেমন অশান্তির আগুনে জ্বলছে, অপরদিকে তাদের কর্মকাণ্ডে গোটা বিশ্বের মানুষ মুসলমানদেরকে সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করছে। আসলে ইসলাম শান্তির। এতে সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই। তবে যে ইসলাম সমাজে শান্তি আনয়নে সক্ষম, তা হচ্ছে মোহাম্মদী ইসলাম, যা অলী-আল্লাহ্গণ শিক্ষা দিয়ে থাকেন। মোহাম্মদী ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে ব্যক্তি শুদ্ধির মাধ্যমে সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। সাধনার মাধ্যমে নিজের আমিত্বকে বিসর্জন দিয়ে আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া এবং আল্লাহ্তে আত্মসমর্পণ করা। তাসাউফ সাধনার মাধ্যমে পরকালের পরম শান্তি লাভের জন্য পাথেয় সংগ্রহ করা। সমাজের মানুষকে যে কোনো রকমের অনিষ্ট হতে রক্ষা করা। নিজে সৎ ও নিষ্ঠাবান হওয়া এবং মানুষকে সৎ হওয়ার উপদেশ দেওয়া। মোহাম্মদী ইসলামের শিক্ষা গ্রহণের সাথে সাথে একজন আশেকে রাসুলের কর্তব্য হচ্ছে নিয়মিত ওয়াজিফা আমল করা। মোর্শেদের প্রচারিত আদর্শ তথা মোহাম্মদী ইসলাম প্রচারের কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখা। এক কথায়, সাধ্যানুযায়ী নিজের জান ও মাল দিয়ে মোহাম্মদী ইসলাম প্রচারের কাজে সহায়তা করা। মোর্শেদের লিখিত এবং দরবার শরিফ হতে প্রকাশিত সকল কিতাবাদি অধ্যয়ন করা। দরবার শরিফের সাথে সর্বদা যোগাযোগ রক্ষা করা এবং সকল অনুষ্ঠানে যোগদান ও গোলামি করা। যেহেতু মোর্শেদ আমাদেরকে আদর্শ চরিত্রবান হওয়ার শিক্ষা দিয়ে থাকেন, তাই সকল কাজে আমাদেরকে সৎ ও নিষ্ঠাবান হতে হবে। কিতাবে বর্ণিত রয়েছে- “মিথ্যা হচ্ছে সকল পাপের জননী।” তাই আমাদেরকে সর্বাবস্থায় মিথ্যা পরিহার করে সত্যবাদী হতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে- “স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন।” অনুরূপভাবে, মোর্শেদের কদমে এসে সেই কদম পাকে থেকে গোলামির মাধ্যমে নিজের জীবন পরিচালিত করা আরও বেশি কঠিন। তবে সেই কঠিন কাজটিও অত্যন্ত সহজ হবে, যদি আপন মোর্শেদের নির্দেশিত মত ও পথে নিজেকে পরিচালিত করা যায়। আশেকে রাসুলদের সর্বদা মনে রাখতে হবে- আমাদের সৃষ্টিকর্তা এক, আমাদের রাসুল এক এবং মোর্শেদও এক। এই পথ পরিক্রমায় নিজের জীবন অতিবাহিত করতে পারলে আমরা মহান রাব্বুল আলামিন, রাহমাতুল্লিল আলামিন ও আপন মোর্শেদের সন্তুষ্টি অর্জন করতে সক্ষম হবো।
[লেখক: পরিচালক, সমন্বয়ক ও সমস্যার ফয়সালাকারী; দেওয়ানবাগ শরীফ; সহকারী অধ্যাপক, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।]
23 Comments
মারহাবা ইয়া কুদরতে খুদা
মারহাবা ইয়া সকল সমস্যার ফয়সালাকারী।
আমিন
আমিন
হে দয়াময় খোদা আপনার দয়া ভিক্ষা চাই।
হে দয়াময় মাওলা আপনার দয়া ভিক্ষা চাই
মহান মোর্শেদের নূরের কদম মোবারকে জানায় লক্ষ কোটি শুক্রিয়া,,,,
আমিন
আমিন
আলহামদুলিল্লাহ
মহা মূল্যবান আলোচনা
আলহামদুলিল্লাহ্। হেআল্লাহ্ তোমার লাক্ষ কোটি সুকরিয়া যানায় দেওয়ানবাগীর মত এমন একজন মহামানব পাঠাছেন। আমিন।
সুবহানআল্লাহ
সুবহানআল্লাহ ❤
Subhan Alla.
আপনার এই মহামূল্যবান লেখা সমস্ত আশেকে রাসূলদের জন্য শিক্ষ্যণীয়। মহান মালিক দয়া করে আামাদেরকে কবুল করে নিন। আমিন।
মহান মালিকের কদমে অশেষ শুকরিয়া জানাই দয়াল মেজো হুজুরের এই মহামূল্যবান লেখা পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
শুকরিয়া মহান রাব্বুল আলামিনের কদম মোবারকে।
মাশাল্লাহ
আলহামদুলিল্লাহ, শুকরিয়া মহান মালিকের কদম মোবারকে। তার দয়ায় পত্রিকাটি অনলাইনের মাধ্যমে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। দয়াল মেজো হুজুরের এই মহান উদ্যোগের কারণে আজ দূর প্রবাসে থেকেও মাসিক আত্মার বানী পড়তে পারছি।
আমিন
মহান মোর্শেদের নেক দৃষ্টি ছাড়া কোন কিছুই আমাদের পক্ষে সম্ভব না। মহান মোর্শেদের নিকট ফরিয়াদ আমরা যেন দরবারের সকল আদব রক্ষা করে চলতে পারি এবং আমল করতে পারি।
🙏🙏🙏 Amin 🙏🙏🙏
ওগো দয়াময় যেন অাপনার ইচ্ছা অনুযায়ি মহান মোর্শেদের গুলামি করতে পারি সেই তফিক্ষ দান করুন, আমিন !
আমরা মহান মোর্শেদের নির্দেশে আল্লাহ্ ও রাসুলের পথে চলতে চাই । আমিন ।