মোহাম্মদী ইসলামের রূপরেখা
আশেকে রাসুল এস এ সুলতান
‘ইসলাম’ আরবি শব্দ, এর আভিধানিক অর্থ শান্তি। পৃথিবীময় যত ধর্ম আছে সব ধর্মই শান্তির কথা বলে, শান্তিই সকল ধর্মের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। সুতরাং পৃথিবীর সকল সত্য ধর্মই ইসলাম। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, “নিশ্চয় ইসলামই হচ্ছে আল্লাহর নিকট একমাত্র গ্রহণযোগ্য ধর্ম।” (সূরা আলে ইমরান ৩: আয়াত ১৯)
অন্যত্র এরশাদ হয়েছে, “আর কেউ ইসলাম (শান্তি) ছাড়া অন্য ধর্ম অনুসরণ করতে চাইলে তা কখনও গ্রহণ করা হবে না, আর এরূপ ব্যক্তিই হবে ক্ষতিগ্রস্তদের দলভুক্ত।” (সূরা আলে ইমরান ৩: আয়াত ৮৫)
সকল নবির ধর্মের নাম ইসলাম। যেমন- হযরত মুসা (আ.)-এর ধর্মের নাম মুসায়ি ইসলাম, হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর ধর্মের নাম ইব্রাহিমি ইসলাম। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, “তিনিই তোমাদের ধর্মে তোমাদের জন্যে কঠিন কোনো বিধান দেননি; এ ধর্ম তোমাদের পিতা ইব্রাহিমের ধর্মের অনুরূপ। আল্লাহ্ পূর্বে তোমাদের নামকরণ করেছেন- মুসলিম, আর এ কিতাবেও বলেছেন, যাতে রাসুল তোমাদের জন্য সাক্ষীস্বরূপ হয় এবং তোমরা সাক্ষীস্বরূপ হও মানবজাতির জন্য, সুতরাং তোমরা নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও, আল্লাহ্কে অবলম্বন করো। তিনিই তোমাদের অভিভাবক; এক মহানুভব অভিভাবক ও এক মহানুভব সাহায্যকারী।” (সূরা হজ্ব ২২: আয়াত ৭৮)
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, যখনই মানুষ শান্তির দূত মহামানবগণের আদর্শ পরিত্যাগ করে স্বেচ্ছাচারী হয়েছে, তখনই তারা চরিত্রহারা হয়ে আল্লাহর অভিভাবকত্ব হারিয়েছে এবং সমাজে অশান্তির লেলিহান শিখা জ্বলে উঠেছে। তখন একজন মহামানব তথা নবি অথবা রাসুল আগমন করেন ইসলামের আজ্ঞাবাহী হয়ে। তিনি আল্লাহ্কে পাওয়ার জ্ঞান এলমে তাসাউফ, জীবনবিধান ও ধর্মীয় রীতিনীতি পালনের জ্ঞান প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে, সমকালীন জামানার মানুষকে ইসলামের সুশীতল ছায়ার নীচে আশ্রয় নেওয়ার পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছেন। স্বভাবতই তাঁর প্রচারিত শান্তির ধর্ম বা ইসলামের নামকরণ হয়েছে তাঁর নামানুসারে। হযরত ঈসা (আ.)-এর পর যখন পৃথিবীতে অশান্তির ডামাডোল বেজে উঠে, আরব যখন আইয়্যামে জাহেলিয়াতের ঘোর অমানিশা যুগে পতিত হয় ঠিক তখনই শান্তির দূত রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শুভাগমন ঘটে। তিনি একাধারে সুদীর্ঘ ১৫ বৎসর নির্জন হেরা গুহায় মোরাকাবা বা ধ্যানরত থেকে আল্লাহ্কে পাওয়ার মহাবিজ্ঞান এলমে তাসাউফ ও পবিত্র কুরআন মানবজাতিকে উপহার দিলেন। তাঁর প্রবর্তিত এই শান্তির ধর্ম তথা ইসলামই হচ্ছে ‘মোহাম্মদী ইসলাম’, যা তাঁর নামানুসারে প্রবর্তিত হয়। বিদায় হজের সময় আয়াত নাজিল হয়, “আজ তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্ম পূর্ণ করলাম ও তোমাদের উপর আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম, আর ইসলামকে তোমাদের ধর্ম হিসাবে মনোনীত করলাম।” ( সুরা মায়িদাহ ৫: আয়াত ৩)
এ আয়াতের মাধ্যমে সকল নবি-রাসুলের প্রবর্তিত ইসলাম, মোহাম্মদী ইসলাম রূপে পরিপূর্ণতা প্রাপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কারবালায় ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদতের মাধ্যমে মোহাম্মদী ইসলামের আদর্শ তথা মোহাম্মদী ইসলাম জগত থেকে বিদায় নেয়। ইমামতের ধর্ম প্রেমের ধর্ম, ত্যাগের ধর্ম মোহাম্মদী ইসলামের পরিবর্তে সালতানাতের ধর্ম, এজিদি ইসলাম জগতব্যাপী প্রসার পায়। ফলে হযরত রাসুল (সা.)-এর আদর্শ নীরবে জগতে প্রকাশ পায়। কিন্তু হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রবর্তিত ধর্মের নাম যে মোহাম্মদী ইসলাম এবং তার স্বরূপ জগদ্বাসী বেমালুম ভুলে যায়, যদিওবা এই ধর্মের প্রণীত আইনসমূহ ‘মোহামেডান ল’ রূপে জগতব্যাপী পরিচিত। হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রচারিত ধর্ম মোহাম্মদী ইসলামকে জগতের বুকে পুনরায় তুলে ধরে এবং তা স্বমহিমায় প্রকাশ করে এর স্বরূপ পরিপূর্ণরূপে জগতের মাঝে তুলে ধরেন, বেলায়েতের শ্রেষ্ঠ অলী-আল্লাহ্ সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী ( রহঃ) হুজুর । তিনি স্বপ্নের মাধ্যমে হযরত রাসুল (সা.) কর্তৃক ‘মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী’ খেতাব লাভ করেন। সূফী সম্রাট হুজুর তাঁর প্রচারিত শিক্ষা, আদর্শ, কর্ম, সংস্কার ও প্রণীত কিতাবাদি দ্বারা মোহাম্মদী ইসলামকে পরিপূর্ণরূপে জগতের মাঝে তুলে ধরেছেন। শুধু তাই নয় ২০১৯ সালে পুনরায় মোহাম্মদী ইসলামকে চক্রান্তকারীদের চক্রান্তের বেড়াজাল হতে মুক্ত করে মানুষকে মোহাম্মদী ইসলামের আদর্শ আঁকড়িয়ে ধরে ইমানের সাথে টিকে থাকার ব্যাবস্থা পাকাপোক্ত করে দিয়েছেন। অবশেষে মোহাম্মদী ইসলামের দায়িত্ব সুযোগ্য নেতৃত্বের হাতে তুলে দিয়ে পরিপূর্ণভাবে তা জগতে প্রতিষ্ঠা ও প্রচার হওয়ার সুব্যবস্থা করে দিয়েছেন। মোহাম্মদ্দী ইসলামের প্রকৃতি ও স্বরূপ আজ জগতের মাঝে দিবালোকের ন্যায় পরিষ্কার।
আলোচ্য প্রবন্ধে মোহাম্মদী ইসলামের স্বরূপ সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করা হলো। মোহাম্মদী ইসলামের স্বরূপ আলোচনা করতে গিয়ে রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রবর্তিত মোহাম্মদী ইসলাম এবং যা পরবর্তীতে মহান সংস্কারক সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর দ্বারা পুনর্জীবনদান হয়েছে। এ দুয়ের মাঝে বৈশিষ্ট্যগত, আকিদাগত, শিক্ষাগত ও আদর্শগত সামঞ্জস্যের উপর আলোকপাত করা হলো।
মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবন দান করেছেন, তা হযরত রাসুল (সা.)-এর সময়কার মোহাম্মদী ইসলামের সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ। সূফী সম্রাট হুজুরের শিক্ষা হচ্ছে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হযরত রাসুল (সা.)-এর শিক্ষার অনুরূপ। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, “যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করেছে, আল্লাহ্র জ্বিকিরে নিজেকে নিমগ্ন রেখেছে এবং একাগ্রতার সাথে নামাজ আদায় করেছে সে সফলকাম হয়েছে।” (সুরা আল আ’লা ৮৭: আয়াত ১৪-১৫)
আত্মশুদ্ধি মোহাম্মদী ইসলামের শিক্ষার বুনিয়াদ। বর্বর আরবজাতি হযরত রাসুল (সা.)-এর সহবতে গিয়ে তাঁর রূহানি ফায়েজ লাভ করে ও মোরাকাবা করে নফসের পবিত্রতার মাধ্যমে নিজেদের পরিশুদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ঠিক তেমনি বর্তমান জামানায় পাপাচারী মানুষ নুরে মোহাম্মদীর ধারক ও বাহক সূফী সম্রাট হুজুরের সান্নিধ্যে গিয়ে তাঁর রূহানি ফায়েজ লাভ করে শান্তির চরিত্রের অধিকারী হয়ে, অন্তরে আল্লাহর জ্বিকির জারি, একাগ্রতার সাথে শিরকমুক্ত হয়ে নামাজ আদায় করে, শরিয়তের হুকুম আহকাম পালন করে থাকে। প্রতিনিয়ত মোরাকাবা, নিয়মিত হযরত রাসুল (সা.)-এর শানে দরূদ ও সালাম পেশ করে মিলাদ পড়ে হযরত রাসুল (সা.)-এর জামানার সাহাবিদের ন্যায় ‘আশেকে রাসুল’ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
সূফী সম্রাট হুজুরের মুরিদের ক্বালবে জ্বিকির থাকার ফলে তারা দুনিয়ার চিন্তা মুক্ত হয়ে নামাজ আদায় করতে সক্ষম হয়। সর্বাবস্থায় আল্লাহর স্মরণে থেকে উত্তম শ্রেণির রোজা রাখতে সক্ষম এবং কোরবানির হাকিকত বুঝে আল্লাহর নামে কোরবানি করে নিজের নফ্সের এসলাহ করার মাধ্যমে নিজেদের পশুর চরিত্রের অবসান ঘটিয়ে উত্তম মানব চরিত্র অর্জন করতে সক্ষম হয়। মহান সংস্কারক সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর প্রচারিত মোহাম্মদী ইসলাম পালন করে তাঁর মুরিদ সন্তানেরা মহান আল্লাহ্ ও হযরত রাসুল (সা.)-এর চরিত্র অর্জন করে অন্তরের চক্ষু ও কর্ণ খুলে আল্লাহ্ ও হযরত রাসুল (সা.)-এর সাথে যোগাযোগ করে ধর্ম-কর্ম করতে সক্ষম।
সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) সর্বদা মানুষকে আত্মশুদ্ধির উপর গুরুত্ব দিতেন। তিনি বলতেন, “সমাজ মানুষকে শুদ্ধ করতে পারে না, আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে ব্যক্তি শুদ্ধ হয়, আর ব্যক্তিশুদ্ধির মাধ্যমে সমাজ শুদ্ধ হয়।” তিনি হযরত রাসুল (সা.)-এর ন্যায় তাঁর অনুসারীদের প্রেমের ধর্ম শিক্ষা দিতেন। যা লাভ করে তাঁর অনুসারীরা মহান আল্লাহ্ ও হযরত রাসুল (সা.)-এর নৈকট্য লাভ করত সকল বাধাবিপত্তি, অপপ্রচার উপেক্ষা করে, কোনো প্রকার মিথ্যা ভ্রান্ত সংবাদে বিভ্রান্ত না হয়ে সত্য ন্যায়ের পথ সিরাতুল মুস্তাকিমে অবিচল থাকে। একই ধরনের শিক্ষা হযরত রাসুল (সা.)-এর সাহাবায়ে কেরাম-এর মাঝে ছিল।
মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত রাসুল (সা.)-এর ধর্ম মোহাম্মদী ইসলামে প্রবিষ্ট বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা দূর করে ধর্মের সংস্কার করে ধর্মকে যুগোপযোগী করেছেন।
তিনি তাঁর প্রণীত কালজয়ী বিখ্যাত তাফসীর ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ গ্রন্থে পবিত্র কুরআনের আয়াত ও মারফু হাদিস দ্বারা প্রমাণ করেছেন, মহান আল্লাহর আকার আছে, তিনি নিরাকার নন। তিনি মানুষের মতো রক্ত-মাংসের দেহধারী নন, তিনি নুরের। মহান আল্লাহ্র গুণবাচক নামসমুহের সঠিক বর্ণনা দিয়ে মানব জাতিকে আল্লাহ্ সম্বন্ধে সঠিক ধারণা দিয়েছেন। রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত রাসুল (সা.) গরিব ছিলেন না, বরং তিনি দোজাহানের বাদশাহ্ ছিলেন, মদীনার শাসনকর্তা ছিলেন। এই বিষয়টি সূফী সম্রাট হুজুর জাতির কাছে প্রমাণ করেছেন। হযরত রাসুল (সা.)-এর পিতা-মাতা উত্তম শ্রেণির মুমিন ছিলেন। সূফী সম্রাট এই বিষয়গুলো পবিত্র কুরআন ও হাদিস এবং ইতিহাস দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণ করেছেন। এভাবে তিনি ধর্মে প্রবিষ্ট যুগযুগান্তরের ভুল ভ্রান্তি দূর করে ধর্মের সংস্কার করেছেন। তিনি প্রমাণ করেছেন পবিত্র আশুরা আল্লাহর অভিষেকের দিন, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.)-এর গুরুত্ব তুলে ধরে তা তিনি রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপনের ব্যবস্থা করেছেন। সারা বিশ্বে একই দিনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন সম্ভব, সেই সম্পর্কে জাতিকে সম্যক ধারণা দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনের আয়াত সংখ্যা যে ৬৬৬৬টি নয়, বরং তা ৬২৩৬টি তা প্রমাণ করে জাতির কাছে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি মাতৃভাষায় খুৎবা পাঠ প্রচলন করেছেন, যা বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সকল মুসলিম দেশেই এই খুৎবার প্রচলন চালু হয়েছে। এ দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে রবিবারের পরিবর্তে শুক্রবার ছুটির ব্যবস্থা তাঁর প্রস্তাবে বাংলাদেশ সরকার চালু করেছেন।
সূফী সম্রাট হুজুর আরো কিছু সংস্কার রয়েছে। যেমন- বান্দার নামে নয়, আল্লাহর নামে কোরবানি করতে হবে বলে জাতিকে শিরক হতে মুক্ত করেছেন। জমির রেজিস্ট্রি করতে আল্লাহ্কে প্রকৃত মালিক ঘোষণা দিয়ে জাতিকে শিরকের হাত থেকে মুক্ত করেছেন। তিনি রমজানে সাহরি ও ইফতারের বিজ্ঞানভিত্তিক সময় সরকারিভাবে বাস্তবায়ন করেছেন। তাছাড়া ইসলাম ধর্মের মৌলিক শিক্ষা, যথা- কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাতের প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করেছেন। অর্থাৎ- কীভাবে নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত আদায় করলে সত্যিকারভাবে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়, তিনি মানুষকে সেই শিক্ষা দিয়ে গেছেন। মহান আল্লাহ্ ও হযরত রাসুল (সা.)-এর সাথে যোগাযোগের পদ্ধতি এলমে তাসাউফ বা সুফিবাদ চর্চার গুরুত্ব জাতির কাছে তুলে ধরেছেন। তিনি মোহাম্মদী ইসলামের বিলুপ্তির কারণ সুস্পষ্টভাবে জাতির কাছে উপস্থাপন করেছেন। তিনি নবি-রাসুল ও অলী-আল্লাহ্গণের মাজার ও রওজা জিয়ারত সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণার অবসান ঘটিয়েছেন। তিনি ইসলামের বিভিন্ন ধরনের ফেরকা সমস্যার সমাধান করে কিতাব লিখেছেন। তাছাড়া পবিত্র রূহ যে মহান আল্লাহর আমানত, তা তিনি সুন্দরভাবে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন। তাঁর অসংখ্য সংস্কার রাষ্ট্রীয়ভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং ধর্ম সম্পর্কে মানুষের দীর্ঘদিনের ভুল ধারণার অবসান ঘটেছে।
মহান সংস্কারক সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুরের দর্শন, আদর্শ, শিক্ষা ও সংস্কারের মাধ্যমে তিনি মোহাম্মদী ইসলামের যে রূপরেখা ও স্বরূপ জাতির কাছে তুলে ধরেছেন, এর জন্য জাতি তাঁর প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকবে। যারা তাঁকে সঠিকভাবে চিনতে পেরেছে, তারা তাঁর শিক্ষা নিজ জীবনে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়ে প্রেমের ধর্ম মোহাম্মদী ইসলাম পালন করে নিজেদের আলোকিত মানুষ হিসাবে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি মোহাম্মদী ইসলামের যে স্বরূপ প্রকাশ করে গেছেন, তা কেয়ামত পর্যন্ত মানুষকে মুক্তির পথ দেখাবে। সত্যের সাথে মিথ্যার সংঘাত অবশ্যম্ভাবী, অতঃপর মিথ্যা ধ্বংস হয় এবং সত্যজয় লাভ করে। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, “বলো, সত্য এসে গেছে আর মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে, মিথ্যা তো বিলুপ্ত হওয়ারই।” (সূরা বনী ইসরাইল ১৭: আয়াত ৮১)
মহান আল্লাহ্ আমাদের মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহঃ) হুজুরের প্রচারিত মোহাম্মদী ইসলামের স্বরূপ বুঝে, তা নিজ জীবনে বাস্তবায়ন করে ইমানের সাথে মৃত্যুবরণ করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
[লেখক: প্রাবন্ধিক]