যাঁকে পেয়ে ধন্য জীবন
অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান মিয়া
(পর্ব-২৮)
পূর্ব প্রকাশিতের পর
বিজয়ী বীর সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী
এ পৃথিবীতে মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন যত নবি-রাসুল ও আওলিয়ায়ে কেরামকে পথ ভোলা মানুষদের হেদায়েতের জন্য প্রেরণ করেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন সমকালীন যুগের মানুষের চেয়ে অধিক সম্মানিত, উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন, বংশীয় মর্যাদায় শ্রেষ্ঠ, জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত, আচার-আচরণ ও সামাজিক কার্যকলাপে অতুলনীয় এবং চেহারা ও ভাষাগত দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ ও সালীন। এককথায় তাঁরা সকল বিষয়ে সমাজ, দেশ ও জাতির অন্যান্য সবার চেয়ে উত্তম ও শ্রেষ্ঠতম হিসেবে বিবেচিত ছিলেন। তাঁদের জীবন ছিল সংগ্রামী। কেননা, তাঁরা বিপথগামী মানুষদেরকে সৎপথ দেখিয়ে আল্লাহর একত্ববাদ ও বিধিবিধান তাদের কাছে তুলে ধরেছেন। এ সকল মহামানবের জীবন কেটেছে সত্য ও ন্যায়ের সংগ্রামে। তা সত্ত্বেও সমকালীন যুগের একশ্রেণির মানুষ তাঁদের বিরোধিতা করেছে।
সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজান ছিলেন একজন সংগ্রামী মহাপুরুষ এবং বিজয়ী বীর। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই নেতৃত্ব দিয়ে সহপাঠীদের কাছে একজন সফল ছাত্র নেতা হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। আবার মাতৃভূমিকে ভালোবাসতে গিয়ে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে বীরের মতো লড়াই করে, দেশকে শত্রুমুক্ত করে একজন দেশপ্রেমিক বীর হিসেবে সুপরিচিত হয়ে আছেন। এটা হলো সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর বাহ্যিক দিক। অপরদিকে তাঁর আধ্যাত্মিক দিক নিয়ে আলোচনা করলে দেখা যায়, তিনি একদিকে যেমন একজন মোজাদ্দেদ, অপরদিকে, তিনি সূফীদের সম্রাট এবং মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী হিসেবে জগতের বুকে সুপরিচিতি লাভ করে, আধ্যাত্মিক জগতের একজন বিজয়ী বীর হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন।
সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজানের অসংখ্য ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কার রয়েছে, যার অনেকগুলো সরকারিভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। সেদিক দিয়ে বিবেচনা করলে দেখা যায়, পূর্ব যুগের সকল মোজাদ্দেদ বা সংস্কারকের শীর্ষে সূফী সম্রাটের স্থান। কারণ, এত অধিক সংস্কার বিশ্বের আর কোনো অলী-আল্লাহ্ তথা সংস্কারক করেছেন বলে জানা যায় না। ভারতবর্ষে বিখ্যাত অলী হযরত শেখ আহমদ সেরহিন্দি মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রহ.) বাদশাহ আকবরের ‘দ্বিন-ই-ইলাহি’র মতো মিথ্যা ধর্মমতকে বাতিল করার জন্য সোচ্চার আন্দোলন করে বিজয়ী হয়েছেন। যার ফলে বাদশাহ আকবরের ‘দ্বিন-ই-ইলাহি’ নামক মনগড়া ধর্ম সম্পূর্ণ বাতিল হয়ে ইসলামের শিক্ষাই ভারতবর্ষে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। অবশ্য এ কাজ করতে গিয়ে তিনি বাদশাহ আকবরের রোষানলে পড়েন। বাদশাহ আকবর হযরত মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রহ.)-কে জেলে বন্দি করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হযরত মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রহ.)-এরই বিজয় হয়েছে। অপরদিকে, বড়ো পির হযরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.) আল্লাহ্কে যে দুনিয়াতে থেকেই দেখা যায়, তা প্রমাণ করতে গিয়ে, হযরত রাসুল (সা.) যে আল্লাহ্কে যুবকের আকৃতিতে দেখেছেন, তাঁর লিখিত ‘সিররুল আসরার’ নামক কিতাবে তা বর্ণনা করেছেন। বড়ো পিরের এই লেখা দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে যে, মানুষ আল্লাহ্কে দেখতে পারে। এই বক্তব্যের আরো বহুগুণ এগিয়ে গিয়ে সূফী সম্রাট জাতির কাছে ঘোষণা দিয়েছেন যে, মহান আল্লাহর আকার আছে, তিনি নিরাকার নন। এটা বলেই সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) ক্ষান্ত হননি, তিনি তাঁর লিখিত জগদ্বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ৮ খণ্ড প্রণয়ন করে পবিত্র কুরআন ও হাদিস দ্বারা প্রমাণ করেছেন যে, আল্লাহ্কে দেখা যায়, তিনি নিরাকার নন। তবে মহান আল্লাহ্ মানুষের মতো রক্ত মাংসের দেহধারী নন, তিনি নুরের। সূফী সম্রাটের আল্লাহ্ দর্শন সম্পর্কে এই অকাট্য দলিল আজ বিশ্বের বুকে গৌরবের সাথে গৃহীত হয়েছে। তাঁর এই বক্তব্য আজ পর্যন্ত কেউ খণ্ডন করতে পারেনি। সত্যের পথের একজন সংগ্রামী বীর হিসেবে সূফী সম্রাটের যে আন্দোলন ছিল, তা বাস্তবায়িত হয়েছে সফলভাবে। অবশ্য, সেজন্য এদেশের অসংখ্য আলেম ওলামা ঐক্যবদ্ধভাবে একযোগে বিরুদ্ধাচরণ ও আন্দোলন করে ব্যর্থ হয়ে রণে ভঙ্গ দিয়েছেন। আর আল্লাহর মহান বন্ধু, যুগের ইমাম সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজানই বিজয়ী বীরের মুকুট পরিধান করে, বিশ্বব্যাপী মোহাম্মদী ইসলাম প্রচার করেছেন। মহান আল্লাহর এই অকুতোভয় সৈনিক বীরত্বের সাথে সংগ্রাম করে সত্যিকারের একজন বিজয়ী বীর হিসেবে সুপরিচিত ও খ্যাতি অর্জন করেছেন।
বিশ্বনবি হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর প্রচারিত মোহাম্মদী ইসলামে নানা ধরনের কু-সংস্কার প্রবেশ করে প্রকৃত ইসলাম থেকে জাতি অনেক দূরে সরে পড়েছিল। সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজান সেই সকল কু-সংস্কার দূর করার জন্য যে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয়, এদেশের এক শ্রেণির এজিদপন্থি আলেম ঐক্যবদ্ধ হয়ে সূফী সম্রাটের বিরুদ্ধে সোচ্চার আন্দোলন শুরু করে দেয়। কিন্তু আল্লাহর মহান বন্ধু স্বার্থান্বেষী মহলের আন্দোলনকে বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করে একজন অকুতোভয় বীর সেনানীর ন্যায় কঠোরভাবে মোকাবেলা করেন। আল্লাহর অপার দয়ায় সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজান যা বলেছেন এবং যা লিখেছেন, আল্লাহর রহমতে তা কেউ খণ্ডন করতে পারেনি। তিনি যে আল্লাহ্কে দেখেছেন, সেই কারণে তাঁর বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা পর্যন্ত হয়েছে। কিন্তু সূফী সম্রাট প্রতিপক্ষের সকল প্রশ্নের জবাব দিয়ে বিচারকের সামনে ‘সূফী সম্রাটের জবানবন্দী’ নামে একটি লিখিত বক্তব্য তাঁর প্রতিনিধি অ্যাডভোকেটের মাধ্যমে কোর্টে উপস্থাপন করান। এতে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজানের বক্তব্য ও লেখনী বিষয়বস্তু যে সঠিক, তা প্রমাণিত হয়েছে। সুতরাং কোর্টে আইনের যুক্তি প্রমাণের মাধ্যমে তিনি একজন বিজয়ী বীর হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছেন। বিশ্বজাহানের স্রষ্টা আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের মহান বন্ধু, বিশ্বনবি হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর সুযোগ্য উত্তরসূরি, সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান মহান আল্লাহর জাত পাকের পরিচয় তুলে ধরে যে তাফসীর শরীফ প্রণয়ন করেছেন, তাতে তিনি পবিত্র কুরআন ও হাদিসের দ্বারা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন যে, আল্লাহ্ নুরের চেহারায় বিদ্যমান। মহান আল্লাহ্র জাত পাকের পরিচয় তুলে ধরে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ নামে যে তাফসীর লিখেছেন, তাঁর এই সাহসী ভূমিকার জন্য মহান স্রষ্টা আল্লাহ্ অত্যন্ত খুশি হয়ে, এই মহামানবকে পূর্ণিমার চাঁদে দেখিয়ে সম্মানিত করেছেন। পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ সূফী সম্রাটকে পূর্ণিমার চাঁদে দেখে তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। পূর্ণিমার চাঁদে দুনিয়ার কোনো মানুষকে দেখা যাওয়ার ঘটনা, এ পৃথিবীতে আর কখনো ঘটেনি। এ বিরল ঘটনা ঘটিয়ে আল্লাহ্ প্রমাণ করেছেন, সূফী সম্রাটই একমাত্র ব্যক্তি, যাঁর চেহারা মোবারক চাঁদে দেখিয়ে আল্লাহ্ তায়ালা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিলেন যে, হে দুনিয়ার মানুষ! তোমরা যদি আল্লাহ্র দিদার লাভ করে ধন্য হতে চাও; তবে আমার প্রিয় বন্ধু সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজানের সান্নিধ্যে যাও। কেননা, তিনিই আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু। তাঁর কাছে গিয়ে তরিকা শিক্ষা করলে, মহান আল্লাহ্ ও হযরত রাসুল (সা.)-এর দিদার লাভ করা যায়। আল্লাহর মহান বন্ধু সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেব্লাজান অত্যন্ত স্বাধীনচেতা, নির্ভিক এবং আত্মপ্রত্যয়ী মহামানব ছিলেন। তিনি সত্য বলতে যেমন কুণ্ঠিত হননি, তদ্রƒপ সত্য প্রচার করতেও বিন্দুমাত্র ভীত হননি। ‘আল্লাহ্ কোন পথে?’ নামক বিখ্যাত তাসাউফ গ্রন্থে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলার আল্লাহ্ দর্শনের কথা প্রকাশিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁর সহধর্মিণী, কুতুবুল আকতাব সৈয়দা হামিদা বেগম (রহ.) আল্লাহ্কে দেখেছেন বলেও প্রকাশিত হয়েছে। আর আল্লাহ্কে দেখার কারণে ১৯৯০ সালে সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান, তাঁর সহধর্মিণী এবং ভক্তবৃন্দসহ তাঁর মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ কোর্টে একটি মামলা হয়েছিল। তাছাড়া বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায়ও সূফী সম্রাটের আল্লাহ্ দর্শনের বিষয়টি নিয়ে ব্যাপকভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু আল্লাহর মহান বন্ধু, সত্যের অকুতোভয় বিজয়ী বীর, সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান (রহ.) এতে বিন্দুমাত্র বিচলিত হননি। আমি একবার বিষয়টি সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের সাথে আলোচনা করার সময় দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলছিলাম- বাবাজান! আপনার লেখা বইয়ে আল্লাহ্ দেখার বিষয়টি উপস্থাপিত না হলে এই মামলা হতো না। একথা শুনে আল্লাহর বিজয়ী বীর সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজান বললেন- মান্নান মিয়া! চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমি প্রকাশ্যে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলে দেবো যে, আমি আল্লাহ্কে দেখেছি। সত্যিই সাংবাদিকদের সামনে তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন যে, তিনি আল্লাহ্কে দেখেছেন। একথা বলার পরের দিন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় শিরোনাম করে লেখা হয়েছিল- ‘যিনি আল্লাহ্কে দেখেছেন বলে দাবী করেছেন’। ‘সংবাদ’ নামক ঐ দৈনিক পত্রিকাটিতে সূফী সম্রাটের ছবিসহ তিনি যে, আল্লাহ্কে দেখেছেন, তা ফলাও করে ছাপা হয়েছিল। আল্লাহ্ দর্শনের এ বিষয়টি নিয়ে অনেক লেখালেখির পর সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেব্লাজান ১৯৯৬ সালে রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্র মতিঝিল সংলগ্ন বাবে রহমত সম্মেলন চত্বরের তিন রাস্তার মোহনায় বিশাল মঞ্চে লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে এক পর্যায়ে বলেছিলেন- আমি আল্লাহ্কে দেখেছি। শুধু তাই নয়, আমি আল্লাহ্কে এমনভাবে চিনি, যেমন সন্তান তার পিতাকে চিনে। সূফী সম্রাটের বীরত্বপূর্ণ এই তেজোদীপ্ত বক্তব্য শুনে সেদিন সম্মেলনে যোগদানকারী বহু আলেম ওলামাসহ অগণিত মানুষ সম্পূর্ণ নীরব ও নিস্তব্দ হয়ে গিয়েছিলেন। ১৯৯৯ সালে সূফী সম্রাটের দরবার দেওয়ানবাগ শরীফে বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এর আগেই নারায়ণগঞ্জের একটি বিরোধী চক্র কোর্ট থেকে ইনজাংশন জারি করে দেওয়ানবাগের বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন বন্ধ করার অপচেষ্টা করে। পরেরদিন সূফী সম্রাটের নির্দেশে হাইকোর্টে এ ইনজাংশন বাতিলের জন্য মামলা দায়ের করা হয়। হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি সূফী সম্রাটের পক্ষে রায় দিয়ে ইনজাংশন বাতিল করে দেন। এই মামলা পরিচালনা করেন- ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, যিনি পরবর্তীতে আইনমন্ত্রী হয়েছিলেন এবং অ্যাডভোকেট এম আর হাসান, যিনি পরবর্তীতে হাইকোর্টের বিচারপতি হন। হাইকোর্টের রায়ে যখন বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন নিশ্চিত হয়ে যায়, তখন সম্মেলন বানচাল করার জন্য কুচক্রীমহল মরিয়া হয়ে ওঠে। তাদের সাথে যোগ দেন এদেশের বহু সংখ্যক আলেম নামধারী ব্যক্তি। শুধু তাই নয়, তৎকালীন আদমজী জুটমিলের শ্রমিক নেতার নেতৃত্বে বহুসংখ্যক শ্রমিকও সূফী সম্রাটের বিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। তাদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ এবং মহাসড়ক অবরোধের কারণে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এতে ১০ জন দুস্কৃতকারী নিহত হয়। এদিকে দেওয়ানবাগে বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন সকালে শুরু হয়। দুস্কৃতকারীরা রাস্তা অবরোধ করলে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে লোক সমাগম কম হয়। চরম বাধার মধ্যেও বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন সমাপ্ত করে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজান তাঁর পরিবারবর্গসহ ঢাকায় চলে আসেন। পরেরদিন পত্রিকায় ‘দুই পিরের লড়াই’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। এতটুকুই শেষ নয়, সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজানের পক্ষে বিপক্ষে লেখালেখি চলতে থাকে। দেওয়ানবাগ দরবার শরীফের সম্মেলনে গণ্ডগোল হওয়ার পরে শুক্রবারে বাবে রহমত দরবার শরীফে জুমার নামাজের বক্তব্য দিতে গিয়ে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজান অগণিত মানুষের সামনে অত্যন্ত দীপ্ত কণ্ঠে বক্তব্য প্রদান করেন। তাতে সূূফী সম্রাট বলেছিলেন- হুজুররা, আপনারা সকলে একত্রিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে লেগেছেন। বাংলা মায়ের এক সন্তান ১৯৮৩ সাল থেকে বিশ্বের অলীদের বাদশাহ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, আর আপনারা তাঁর বিরুদ্ধে লাগতে গেলেন। তবে আরো কেউ বাকী থাকলে একসাথে লাগেন, জঙ্গল একবারে পরিষ্কার করে দেই। আল্লাহর মহান বন্ধু এবং হযরত রাসূল (সা.)-এর সুযোগ্য উত্তরসূরি, সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলার সেদিনকার সেই তেজস্বী ভাষার বক্তব্য শুনে সর্বস্তরের শ্রোতারা যেন অভিভূত হয়ে যান। সেদিন সূফী সম্রাটের কণ্ঠস্বর এতটা তীব্র ছিল যে, তা না শুনলে বিশ্বাস করা যায় না। আসলে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কোনো সাধারণ মানুষ ছিলেন না, তিনি একজন উচ্চস্তরের অলী-আল্লাহ্ ছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি ছিলেন অলীদের বাদশাহ। তাই একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া কোনো মানুষকে তিনি বিন্দুমাত্রও তোয়াক্কা করেননি বলেই ১৯৯৯ সালে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান এত বিশাল ও ঐক্যবদ্ধ শত্রুর মোকাবেলা করতে বিন্দুমাত্র বিচলিত ও কুণ্ঠিত হননি। সেদিন সকলেই ভেবেছিলেন, নিঃসন্দেহে সূফী সম্র্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজান বর্তমান যুগের শ্রেষ্ঠ অলী-আল্লাহ্। তা না হলে এত বলিষ্ঠ কণ্ঠে তিনি শত্রুর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতে পারতেন না। সুতরাং সূফী সম্রাটের নির্ভিক চিত্তে বক্তব্য প্রদানই প্রমাণ করেছে যে, সত্যিই সূফী সম্রাট একজন বিজয়ী বীর।
[লেখক: সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল, জাতীয় আইন কলেজ, ঢাকা]