সম্পাদকীয়
আমার মহান মোর্শেদ দেওয়ানবাগ শরীফের প্রতিষ্ঠাতা মহান সংস্কারক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজানের ৭৪তম শুভ জন্মবার্ষিকী স্মরণে আগামী ২৩শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ইং, রোজ-শুক্রবার ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত ‘বাবে বরকত’ দেওয়ানবাগ শরীফে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন। এই সম্মেলনে জামে আম্বিয়া ও জামে আউলিয়া রুহানিতে উপস্থিত থাকেন। অবারিত ফায়েজ, বরকত ও রহমতে পরিপূর্ণ এই সম্মেলনে দেশ ও বিদেশের লক্ষ লক্ষ আশেকে রাসুল যোগদান করবেন।
বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন আশেকে রাসুলদের মিলন মেলা। আমার মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান ১৯৯৭ সালের ১৮ই ডিসেম্বর মুসলিম জাতির ইতিহাসে সর্বপ্রথম ‘বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন’-এর আয়োজন করেন। তিনি তাঁর মোর্শেদ ইমাম হুজুর (রহ.)-এর শুভ জন্মদিন স্মরণে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২৪ বছরে ২১টি বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.)-এর আয়োজন করেন। সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের ওফাতের পর আমি জগৎশ্রেষ্ঠ এই মহামানবের ৭৩তম শুভ জন্মদিন স্মরণে ২০২২ সালের ২৩শে ডিসেম্বর বাবে বরকত, দেওয়ানবাগ শরীফে বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনের আয়োজন করি, যেটি বাবা দেওয়ানবাগীর শুভ জন্মদিন উপলক্ষ্যে ‘প্রথম বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন’। বিশ্বের ৩০টি দেশ থেকে আশেকে রাসুলগণ এই মহতী সম্মেলনে যোগ দেন। দেওয়ানবাগ শরীফের ইতিহাসে সেটি ছিল সর্ববৃহৎ সম্মেলন। ধারণা করা হচ্ছে এই বছরের সম্মেলন ২০২২ সালের চেয়ে অনেক বেশি মুক্তিকামী মানুষের সমাগম হবে। ইতোমধ্যে দেশ ও বিদেশের রাসুল প্রেমিকগণ সম্মেলনকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য নানারকম উদ্যোগ গ্রহণ করছেন।
বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনের দাওয়াত সর্বস্তরের মানুষের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দেওয়ানবাগীর দল ওলামা মিশন বাংলাদেশের সদস্যবৃন্দ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মিলাদ মাহ্ফিলে অংশগ্রহণ করছেন। বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরাম মাহ্ফিলগুলোতে সম্মেলনের যোগদানের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলত উপস্থাপনপূর্বক আলোচনা করছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আশেকে রাসুলদের পক্ষ থেকে আয়োজিত মিলাদ মাহ্ফিলে প্রতিদিন অসংখ্য মুক্তিকামী মানুষ মোহাম্মদী ইসলামের ছবক নিচ্ছেন। এছাড়া সম্মেলনের প্রচারের জন্য রাসুল প্রেমিকেরা বিভিন্ন স্থানে পোস্টার, ফেস্টুন লাগাচ্ছেন এবং দেওয়াল লিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে মানুষকে অবহিত করছেন। অনলাইনের মাধ্যমেও সম্মেলনের দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের আশেকে রাসুলগণ বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনের আহ্বানের বার্তা সেই দেশের মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। সম্মেলন নিয়ে আশেকে রাসুলদের মাঝে স্বতঃস্ফূর্ততা সত্যিই প্রশংসার দাবীদার। দেশের বিভিন্ন এলাকার আশেকে রাসুলগণ প্রতিদিন বাবে বরকত দেওয়ানবাগ শরীফে গিয়ে সম্মেলনের গোলামি করছেন। গোলামির মাধ্যমে আমিত্ব, অহংকার বিসর্জন হয়। বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনে আশেকে রাসুলদের গোলামি করার জন্য একটি উপযুক্ত ক্ষেত্র।
আশেকে রাসুলগণের সম্মেলনে যোগদানের পূর্বে বেশ কিছু করণীয় রয়েছে। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় থাকে, এমন পোশাক পরিধান করবেন, পাঞ্জাবি হলে উত্তম, টুপি ও জায়নামাজ সাথে নিয়ে আসবেন। গাড়ি ছাড়ার সময় সম্মিলিতভাবে ফাতেহা শরীফ পাঠ করে মুনাজাত করবেন। বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন-এর একটি নির্দেশিকা আপনাদেরকে দেওয়া হবে, যেটির অপর পৃষ্ঠায় সম্মেলনের ম্যাপ থাকবে। গাড়ি ছাড়ার পর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি সবাইকে সম্মেলনের নির্দেশিকাটি পড়ে শোনাবেন এবং ম্যাপে প্রদর্শিত বিভিন্ন স্থানগুলো সবাইকে দেখিয়ে স্পষ্ট বুঝিয়ে দেবেন। গাড়ি চলাকালে মোহাম্মদী ইসলামের মিলাদ শরীফ পাঠ করবেন। বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনের অনুষ্ঠান চলাকালে আগত আশেকে রাসুল ও মেহমানদের সম্মেলন চত্বরে উপস্থিত থাকা ফজিলতপূর্ণ। সম্মেলন চত্বরে বসে আলোচনা শোনা ও দেখার সুবিধার্থে একাধিক বিশ্বার স্ক্রিন থাকবে।
বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন হলো মুরিদের আত্মার উন্নতির বার্ষিক পরীক্ষা। পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীরা যেমন বিভন্ন বিষয় পরীক্ষায় দিয়ে থাকে, তেমনি বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনও মুরিদরা বিভিন্ন গোলামিতে নিয়োজিত থাকেন, এটি তার জন্য ইমানি পরীক্ষা। সুতরাং এই সম্মেলনে যারা বিভিন্ন বিভাগে গোলামির দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন, প্রত্যেককে আদব, ভক্তি ও মহব্বতের সাথে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবেন। একাগ্রচিত্তে গোলামির মাধ্যমে মহান আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ করা সম্ভব।
পরিশেষে, মহান আল্লাহ্র দরবারে প্রার্থনা তিনি যেন দয়া করে আমাদেরকে বিশ্ব আশেকে (সা.) সম্মেলন সফলভাবে দায়িত্ব পালন করার তৌফিক ভিক্ষা দেন। আমিন।