সম্পাদকীয়
লক্ষ কোটি শোকরিয়া জ্ঞাপন করছি মহান রাব্বুল আলামিনের নুরের কদম মোবারকে, যাঁর অপার দয়ার বরকতে মোহাম্মদী ইসলামের মাসিক মুখপত্র ‘আত্মার বাণী’ সময়ের অগ্রযাত্রায় প্রকাশনার গৌরবোজ্জ্বল ৪০ বছরে পদার্পণ করেছে। ৩৯ বছর পূর্বে যে মহামানবের অক্লান্ত পরিশ্রম ও উদ্যোগে তাসাউফ জগতের এই অনবদ্য সাময়িকীটি প্রকাশিত হয়, তিনি হলেন- আমার মহান মোর্শেদ, মহান সংস্কারক, মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী, সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা
দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেব্লাজান। জগৎশ্রেষ্ঠ এই মহামানব তাঁর স্বীয় মোর্শেদ পিরানে পির দস্তগির, সুলতানুল মাশায়েখ, সুলতানিয়া মোজাদ্দেদিয়া তরিকার ইমাম সৈয়দ আবুল ফজল সুলতান আহমদ (রহ.)-এর দরবার শরীফ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই হযরত রাসুল (সা.)-এর চির শান্তির ধর্ম মোহাম্মদী ইসলাম বিশ^ময় প্রচারের উদ্দেশ্যে সময়োপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেন। তিনি তাঁর গৌরবদীপ্ত জীবনে সর্বদা এই ভাবনায় ব্যাকুল থাকেন যে, জগদ্বাসীর নিকট
কীভাবে মহান আল্লাহ্ ও তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধু হযরত রাসুল (সা.)-এর পরিচয় তুলে ধরা যায়। এই লক্ষ্যে তিনি তাঁর সাধনা জীবনে স্বীয় মোর্শেদের দরবারে থাকাকালীন ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে নিজে উদ্যোগী হয়ে ‘আত্মার বাণী’ সাময়িকীটি প্রকাশ করেন।
আজ থেকে ৩৯ বছর পূর্বে মুদ্রণশিল্প ততটা উন্নত ছিল না। এখনকার মতো কম্পিউটার, অফসেট মেশিন ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তিও ছিল না। লেটার প্রেসে ছাপা হতো, যা ছিল সময় সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য, অথচ সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের সম্পাদনায় মাত্র ১৮ দিনে মাসিক ‘আত্মার বাণী’ প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে ‘আত্মার বাণী’ নিয়মিত প্রকাশিত হতে থাকে। ‘আত্মার বাণী’ সাময়িকীটি নিজের স্বকীয়তা বজায় রেখে সগৌরবে ৩৯ বছর যাবৎ পাঠকের আত্মার খোরাক জোগিয়ে যাচ্ছে। মূলত সূফী সম্রাট
হুজুর কেব্লাজান হযরত রাসুল (সা.)-এর ধর্ম বিশ্বময় তুলে ধরার জন্য ৩৯ বছর পূর্বেই প্রিন্ট মিডিয়াকে বেছে নেন। এর পিছনে যৌক্তিক কারণ রয়েছে, কেননা হযরত রাসুল (সা.)-এর যুগে আল্লাহ্র রাসুল (সা.) ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে কাফের ও মুনাফিকদের দ্বারা প্রবল বাধার সম্মুখীন হন। কাফেরদের আক্রমণ প্রতিরোধ এবং মদীনা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য সেসময় হযরত রাসুল (সা.)-কে বাধ্য হয়ে যুদ্ধ করতে হয়। আর সেই যুদ্ধ হয়েছিল তরবারির মাধ্যমে, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বর্তমান
সমাজে এক শ্রেণির অলী-আল্লাহ্ বিদ্বেষী কিতাবধারী আলেম সেই যুগের মতো একই ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। তারা মহান আল্লাহ্র বন্ধুদের বিরুদ্ধাচরণ করে ধর্মের নামে নানা ফতোয়া দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে যাচ্ছে। কিন্তু এখনতো আর সেই যুগের মতো তরবারি দিয়ে মিথ্যাবাদী ও ফতোয়াবাজদের মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। ঐ সকল কিতাবধারী আলেমদের অলী-আল্লাহ্ বিদ্বেষী মনোভাব, পবিত্র কুরআন ও হাদিসের অপব্যাখ্যা, ধর্মের নামে কুসংস্কার ও ফতোয়া, এগুলো যে ভুল, তা
প্রমাণ করার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো প্রিন্ট মিডিয়া। এর মাধ্যমে যে কোনো বিষয় সহজেই মানুষের নিকট পৌঁছে দেওয়া যায়। তাই সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান তাঁর কলমকে এজিদি ইসলামের বিরুদ্ধে ‘যোদ্ধা’ হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
তিনি তাঁর বিদগ্ধ লেখনীর মাধ্যমে সমাজে প্রচলিত ভুলগুলো তুলে ধরেছেন এবং পবিত্র কুরআন ও মারফু হাদিসের আলোকে প্রবিষ্ট ভুলগুলো সংশোধন করে হযরত রাসুল (সা.)-এর শান্তির ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাঁর এই সুমহান প্রচেষ্টা বাস্তবায়নে ‘মাসিক আত্মার বাণী’ সাময়িকীটি ৩৯ বছর যাবৎ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এই আত্মার বাণী পত্রিকাটি এমনই এক নেয়ামতপূর্ণ পত্রিকা, যা মহান আল্লাহ্র রহমত ও বরকতে পরিপূর্ণ। এর চুবানো পানি পান করে অসংখ্য মোর্শেদ প্রেমিক কঠিন কঠিন রোগ থেকে পরিত্রাণ লাভ করেছে এবং বর্তমানেও করছে। মূলত এটি জগৎশ্রেষ্ঠ মহামানব সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের অন্যতম অলৌকিক কারামত। যেদিন থেকে তিনি নির্দেশ প্রদান করলেন যে, রোগ-শোক থেকে আরোগ্য লাভের জন্য ‘আত্মার বাণী’ চুবানো পানি পান করতে, সেদিন থেকেই এই আত্মার বাণীর চুবানো পানি রোগ থেকে পরিত্রাণের এক
মহাষৌধ হিসেবে কাজ করছে। এই জন্য তাঁর কদম মোবারকে জানাই লাখ শোকরিয়া।
আমার মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে আমাকে ‘আত্মার বাণী’ পত্রিকার সম্পাদনার গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেন। এই দায়িত্ব প্রদান করে তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, এটিকে যুগের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নব আঙ্গিকে প্রকাশ করার জন্য। মহান মোর্শেদের অপার দয়া নিয়ে আমার সম্পাদনায় ‘মাসিক আত্মার বাণী’, ডিসেম্বর- ২০১৯ সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে আমার সম্পাদনায় ধারাবাহিকভাবে ‘আত্মার বাণী’ প্রকাশিত হচ্ছে। মহান মোর্শেদের
নির্দেশ অনুযায়ী পূর্ববর্তী ও নতুন স্টাফদের সাথে নিয়ে আমি ‘আত্মার বাণী’ সাময়িকীটিকে সর্বোচ্চমানে পৌঁছানোর জন্য আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের নেক দৃষ্টির বদসবা ‘আত্মার বাণী’ উত্তরোত্তর সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাবে।
৪০ বছর পদার্পণে ‘আত্মার বাণী’ পত্রিকার সকল স্টাফ, লেখক, গ্রাহক, বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের জানাই আন্তরিক মোবারকবাদ। মহান মালিক আমাদের সকলের সহায় হোন, সকলের উপরে মোর্শেদ সত্য, তাঁর উপরে নেই। আমিন!