সূফী সম্রাটের উসিলায় মহান আল্লাহ্র দয়ায় ব্লাড ক্যান্সার থেকে আরোগ্য লাভ – শাহরিয়ার মাহমুদ চৌধুরী
নবুয়তের যুগে নবি-রাসুলগণের মাধ্যমে যে সকল অলৌকিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল তাকে মু‘জিঝা বলা হয়। অন্যদিকে বেলায়েতের যুগে আউলিয়ায়ে কেরামের মাধ্যমে সংঘটিত ঘটনাকে ‘কারামত’ বলা হয়। মহান সংস্কারক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজানের কাছে এসে অসংখ্য আশেকে রাসুল বিভিন্ন ধরনের বিপদ-আপদ বালা-মুছিবতে পড়ে প্রতিনিয়ত মহান মোর্শেদের উসিলায় আল্লাহ্র দয়া ও সাহায্য লাভ করেছেন। তেমনি একটি অলৌকিক ঘটনা বর্ণনা করা হলো-
ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার বাসিন্দা মোছাম্মাৎ ঝুমা আক্তার। তিনি মহান সংস্কারক সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজানের একজন ভক্ত অনুসারী। কিছুদিন পূর্বে তার বড়ো ভাই হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তখন আশপাশের লোকজন দৌড়ে আসে তার কাছে। এসে তার মাথায় পানি ঢালতে থাকে। কিছু সময় পর তার জ্ঞান ফিরে আসে। এর কিছু দিন পর থেকেই তার শরীর কালো হতে থাকে। একটা সময় পুরো শরীরই কালো হয়ে যায় এবং তিনি ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়েন। এর মধ্যেই একদিন তার শরীর থেকে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তাকে দ্রæত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এবং তার রক্তসহ অন্যান্য যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে তাদের জানান যে, রোগীর অবস্থা খুব খারাপ। রোগী যা যা খেতে চান, তাই যেন খাওয়ানো হয়। রোগীর সমস্ত ইচ্ছা যেন তারা পূরণ করেন। এই রোগী আর বেশি দিন বাঁচবে না। কারণ তাকে মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রমণ করেছে। পরীক্ষার রিপোর্টে তার বøাড ক্যান্সার ধরা পড়েছে।
ডাক্তারের কাছ থেকে যখন তারা একথা শুনলেন, তখন ঝুমা আক্তার ও তার পরিবারের লোকজনের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। তার বাবা মা কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন। আদরের সন্তানের এত অল্প বয়সে জগত থেকে চলে যাওয়ার কথা শুনে মনকে কোনো কিছু দিয়ে সান্ত্বনা দিতে পারছেন না। যে সন্তানকে এত আদর যত্ন, ভালোবাসা দিয়ে বড়ো করে তুলেছেন, যাকে নিয়ে কতইনা স্বপ্ন দেখেছেন, সেই সন্তানই ঢলে পড়বে মৃত্যুর কোলে, তা যেন কিছুতেই মানতে পারছেন না। এই মুমূর্ষু অবস্থায় কী করে তাকে মৃত্যুর কোল থেকে ফেরানো যায়? কে তাকে ফিরাবে? এমন নানান প্রশ্নও তাদের মনে ঘোরপাক খেতে থাকে। অবশেষে, কোনো উপায়ন্তর না দেখে ছুটে যান মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজানের সান্নিধ্যে। ঝুমা আক্তারের বাবা তার ছেলের সমস্যার কথা জানান এবং অঝোর নয়নে কাঁদতে থাকেন। দয়াল মোর্শেদ তার কথা শুনে তাকে একটা মানত করতে বলেন ও তার ছেলেকে আত্মার বাণী চুবানো পানি পান করাতে বলেন এবং নিয়মিত তরিকার আমল করতে বলেন। অতঃপর তিনি সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসেন বাড়িতে এবং সূফী সম্রাটের নিদের্শনা অনুযায়ী নিয়ম পালন করতে থাকেন। এভাবে এক সপ্তাহ পালন করার পর রোগিকে নিয়ে আবার তারা যান ডাক্তারের কাছে পরীক্ষা করানোর জন্য।
পরীক্ষা করার পর রিপোর্ট হাতে পেয়ে ডাক্তার অবাক। তার ক্যান্সার প্রায় আশি শতাংশ ভালো হয়ে গেছে। একথা শুনে তাদের মনে আশার প্রদীপ জ্বলতে শুরু করেছে। তারা ডাক্তারের কাছ থেকে বাড়িতে চলে এসে দ্বিগুণ উৎসাহে সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের নির্দেশনা পালন করতে থাকেন। এভাবে কিছু দিন পর তারা দেখেন রোগীর শরীরের কালোভাব দূর হয়ে গেছে এবং রোগীর কথা বার্তা ও চলাফেরা সম্পূর্ণ একজন সুস্থ মানুষের মতো। তারা আবার গেলেন ডাক্তারের কাছে পরীক্ষা করার জন্য। ডাক্তার রিপোর্ট দেখে বলেন, “ইটস এ মিরাকেল।” তিনি আশপাশের অন্য ডাক্তারদের ডেকে এনে বর্তমান এবং পূর্ববর্তী সমস্ত রিপোর্ট দেখান। সকল ডাক্তারই রিপোর্ট দেখে অবাক। কীভাবে এত দ্রুত ব্লাড ক্যান্সারের একজন রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান, যার কিনা বাঁচারই কোনো কথা নয়, সে আবার পুরোপুরি সুস্থ। ডাক্তাররা বলেন, এই রোগীর উপর আল্লাহ্র দয়া আছে, যার কারণে সে সুস্থ হয়ে উঠছে। পরে তারা খুশি মনে বাড়ি চলে আসে।
অতঃপর ছুটে আসেন মহান মোর্শেদের দরবারে। তারা সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, মানত আদায় করেন এবং ঘটনাটি বর্ণনা করেন। এরকম একজন দুইজন নয়, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের কাছে এসে নানাবিধ বিপদ-আপদ থেকে উদ্ধার পেয়েছেন। মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে ফরিয়াদ, তিনি যেন তাঁর এই মহান বন্ধুর পরিচয় জগদ্বাসীকে লাভ করার সুযোগ করে দেন। আমিন।
[ইসলাম বিষয়ক লেখক]