সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী বেলায়েতের শ্রেষ্ঠ অলী-আল্লাহ্
আশেকে রাসুল এস এ সুলতান
সৃষ্টির আদি হতে অদ্যাবধি মানুষকে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে হলে মহামানবগণের সান্নিধ্যে যেতে হয়। কারণ মহামানবগণের সাথে আল্লাহর যোগাযোগ থাকে, ফলে মহামানবগণ সাধারণ মানুষকে আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিয়ে সঠিক নিয়মে ধর্ম-কর্ম পালন করাতে সক্ষম হন। তাই সৃষ্টির আদি হতে হেদায়েতের ধারা মহামানবগণের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। হেদায়েতের এই চিরন্তন ধারা দুই ভাগে বিভক্ত, যথা- ১। নবুয়তের যুগ ২। বেলায়েতের যুগ। নবুয়তের যুগে নবি-রাসুলগণ আল্লাহ্ প্রদত্ত কিতাব ও হিকমত দ্বারা সাধারণ মানুষকে আল্লাহর মনোনীত পথে পরিচালিত করতেন।
হযরত আদম (আ.) হতে সর্বশেষ নবি হযরত মোহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত যত নবি-রাসুল আগমন করেছেন সবাই হলেন নবুয়তের যুগের হেদায়েতের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহামানব, মুক্তির কাণ্ডারি, তাঁরা মোজেজার অধিকারী ছিলেন। আমাদের রাসুল হযরত মোহাম্মদ (সা.) হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ নবি ও রাসুল। তিনি হলেন সকল নবি-রাসুলের ইমাম- ইমামুল মুরসালিন। হযরত রাসুল (সা.)-এর পূর্ববর্তী যত নবি-রাসুল আগমন করেছেন, সকলেই মানুষকে আল্লাহর পথে আহবান করেছেন এবং তাঁদের অনেকেই আসমানি কিতাবপ্রাপ্ত ছিলেন। তাঁদের অনেকের ধর্ম ও কিতাব আজও বিদ্যমান, তাই তাঁদের উপর ও তাঁদের কিতাবের উপর ইমান আনা আমাদের জন্য ফরজ এবং তাঁদের ধর্ম বাতিল হয়নি, ফলে তাঁদের অনুসারীরা যদি যথাযথভাবে তাঁদের ধর্ম পালন করে, তবে তারা মুক্তিপ্রাপ্ত হবে। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, “যারা (ইসলামে বিশ্বাস করে) ইমানদার হয়েছে, যারা ইহুদি এবং খ্রিষ্টান ও সাবেইন (অগ্নি উপাসক), যারা আল্লাহ্ ও শেষ দিবসে বিশ্বাস করে ও সৎ কাজ করে তাঁদের জন্য প্রতিদান আছে তাঁদের প্রতিপালকের কাছে; তাঁদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।” (সূরা বাকারা ২: আয়াত ৬২)
মুলত হযরত রাসুল (সা.) পূর্ববর্তী সকল নবি ও রাসুল মহান আল্লাহর মনোনীত ধর্ম ইসলাম প্রচার করেছেন, যা তাঁদের নামানুযায়ী প্রকাশ পেয়েছে, যেমন ইব্রাহীমি ইসলাম, মুসায়ি ইসলাম, ঈসায়ি ইসলাম। যদিও তারা তাঁদের ধর্ম প্রচার করেছেন, কিন্ত তা ছিল কওমভিত্তিক বা অঞ্চলভিত্তিক, যা কুরআনের ভাষায় বাতিল হয়নি এবং হবেও না। তাঁদের ধর্ম সর্বজনীন ও পরিপূর্ণতা প্রাপ্ত ছিল না। ইসলাম সর্বজনীন হয়েছে এবং সারা বিশ্বের মানুষের মুক্তির ধর্মরূপে পরিপূর্ণতা লাভ করেছে হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে, যা তাঁর নামানুসারে মোহাম্মদী ইসলামরূপে প্রকাশ পেয়েছে। এরশাদ হয়েছে, “আজ আমি তোমাদের ধর্মকে পরিপূর্ণ করে দিলাম; তাতে আমার নিয়ামত পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে একমাত্র ধর্ম হিসাবে মনোনীত করলাম।“ (সুরা আল মায়িদা ৫: আয়াত ৩) এ আয়াত দ্বারা প্রমাণ হয় পূর্ববর্তী নবিগণের ধর্ম বাতিল হয়নি বরং হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রচারিত মোহাম্মদী ইসলাম দ্বারা পরিপূর্ণতা প্রাপ্ত হয়েছে। তাই দেখা যায় অন্যান্য নবি-রাসুলগণের বিধি বিধান হযরত রাসুল (সা.)-এর ধর্মেও বিদ্যমান। যেমন বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম হযরত সুলায়মান (আ.)-এর বিপদ মুক্তির দোয়া, হযরত ইউনুস (আ.) পানির উপর চলার দোয়া, হযরত নুহ (আ.)-এর গুনাহ মাপের দোয়া, হযরত আদম (আ.)-এর আমলের কালাম। হজ, কোরবানি ও সুন্নতে খাৎনা হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর বিধান, রোজা ও নামাজের বিধান পূর্ববর্তী নবি-রাসুলগণের সময়ও ছিল। যেহেতু হযরত রাসুল (সা.) সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি ও রাসুল, আল্লাহর শ্রেষ্ঠ বন্ধু, তাই তাঁর মাধ্যমে ইসলাম পরিপূর্ণতা লাভ করে এবং তাঁর উপরই সর্বশেষ আসমানি কিতাব পবিত্র কুরআন নাজিল হয়েছে, যা মানব মুক্তির বিধান।
হযরত রাসুল (সা.)-সহ সকল নবি-রাসুল জগতের মানুষের কাছে মহান আল্লাহর পরিচয় তুলে ধরেছেন। হযরত রাসুল (সা.)-এর মাধ্যমে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন তাঁর নিজের সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা দিয়েছেন, যা পবিত্র কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহর জাত ও সিফাতের বর্ণনা কুরআন মজিদের বিভিন্ন আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে এবং তা হাদিস দ্বারা রাসুল (সা.) ব্যাখ্যা করেছেন। যা হযরত রাসুল (সা.)-এর সাহাবাগণ জানতেন ও মানতেন। কিন্তু কালের বিবর্তনে স্বধর্মীদের অজ্ঞতা ও বিধর্মীদের চক্রান্তের কারণে মহান আল্লাহর জাত ও সিফাতের বর্ণনা ভিন্নধারায় প্রবাহিত হয়। কিন্ত যারা আল্লাহ্ ও রাসুল (সা.)-এর প্রকৃত আশেক তাঁরা সঠিক ধারণা নিজ হৃদয়ে লালন করেছেন। হযরত রাসুল (সা.)-এর ওফাতের মধ্য দিয়ে নবুয়তের যুগের অবসান ঘটে এবং শুরু হয় বেলায়েত বা বন্ধুত্বের যুগ। হযরত রাসুল (সা)-এর ওফাতের পর মোহাম্মদী ইসলামের আদর্শ প্রচারের পাশাপাশি রাসুল (সা.)-এর আদর্শের বিরোধী আকিদারও প্রকাশ ঘটতে থাকে যার নজির ইসলামের তিন খলিফা শহিদ হওয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এছাড়াও অনেক জলিলুল কদর সাহাবিও আততায়ীদের দ্বারা শহিদ হন। মোহাম্মদী ইসলামের চূড়ান্ত সর্বনাশ ঘটে ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদতের মাধ্যমে। হযরত রাসুল (সা.)-এর মতাদর্শের বিরোধী আকিদা তথা এজিদি ইসলাম সমাজে স্থান করে নেয় এবং রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত রাসুল (সা.)-এর ধর্ম মোহাম্মদী ইসলাম বিবর্জিত সমাজ সৃষ্টি হয়। বনে জঙ্গলে লুকিয়ে সুফিয়ায়ে কেরাম রাসুলের ধর্ম পালন করতে থাকেন। এজন্য বিখ্যাত ঐতিহাসিক ইবনে খালদুন বলেছেন, “ইসলামের উদ্ভব হয়েছে মক্কায়, পূর্ণতা লাভ করেছে মদিনায়, রোগাক্রান্ত হয়েছে কুফায়, ইসলামের মৃত্যু হয়েছে কারবালায় এবং কবরস্থ হয় দামেস্কে।”
আসলে জগতময় যে ইসলাম ছিল, তা ছিল প্রাণহীন। প্রাণের ইসলাম রাসুলের ইসলাম, মোহাম্মদী ইসলাম আল্লাহর বন্ধু অলী-আল্লাহ্গণের দ্বারা প্রচারিত হতে থাকে। তাদের মাধ্যমে বেলায়েতের যুগে মোহাম্মদী ইসলাম প্রচারিত হয়। যেহেতু রাষ্ট্রীয়ভাবে ও সামাজিকভাবে হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রকৃত আদর্শ বিবর্জিত ইসলামের প্রাধান্য বেশি থাকায় অলী-আল্লাহ্দের সঠিক মান মর্যাদা সম্পর্কে ধারণা নেই।
অলী-আল্লাহ্গণ হলেন আল্লাহর বন্ধু। অলী আরবি শব্দ, যার অর্থ বন্ধু, আর অলী-আল্লাহ্ হচ্ছেন আল্লাহর বন্ধু। অলীর বহু বচন হচ্ছে আউলিয়া। আউলিয়ায়ে কেরাম হচ্ছেন মহান রাব্বুল আলামিনের একান্ত আপন। আল্লাহ্ পাক দয়া করে যাদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেন, শুধু তাঁরাই অলী-আল্লাহ্ হওয়ার যোগ্যতা ও মর্যাদা লাভ করেন, যা সাধারন মানুষের পক্ষে উপলব্ধি করা অত্যন্ত কঠিন। অলী-আল্লাহ্গণ আল্লাহর গুণে গুণী, আল্লাহর জ্ঞানে জ্ঞানী, আল্লাহর রঙে রঙ্গিন, আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হন। যেমন হাদিস শরীফে বণিত হয়েছে, “তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও। সুতরাং অলী-আল্লাহ্গণ আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হয়ে আল্লাহর গুণাবলি ধারণ করে আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করেন। মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন তাঁর অলীদের উপর সর্বদা সন্তুষ্ট থাকেন। তাই তিনি কুরআন পাকে এরশাদ করেছেন, “জেনে রেখো, নিশ্চয়ই আল্লাহর বন্ধুদের কোনো ভয় নেই এবং তাঁরা দুঃখিতও হবে না।” (সূরা ইউনুস ১০ : আয়াত ৬২)
সাধারণ মানুষ এলমুল ক্বালব সাধনার মাধ্যমে নিজের আমিত্বকে সম্পূর্ণরূপে বিসর্জন দিয়ে যখন আল্লাহর নুরে নিজেকে আলোকিত করতে সক্ষম হন, তখন প্রেমের টানে তাঁর সাথে আল্লাহ্ তায়ালা মিশে একাকার হয়ে যান। এ অবস্থাকে ফানাফিল্লাহ্ বলা হয় এবং এ অবস্থায় উপনীত হয়ে আল্লাহর প্রেমে একাকার হয়ে সাধারণ মানুষ আল্লাহর বন্ধুতে পরিণত হন। অলী-আল্লাহ্দের বিভিন্ন শ্রেণি রয়েছে। সাধারণত তিন শ্রেণির অলী-আল্লাহ্ রয়েছেন। যাঁরা হেদায়েতের দায়িত্ব পালন করেন, তাঁদেরকে হাদি শ্রেণির অলী-আল্লাহ্ বলা হয়। হাদি শ্রেণির অলী-আল্লাহ্দের প্রধান জামানার মোজাদ্দেদ হন, যারা সমকালীন সমস্ত আউলিয়ায়ে কেরামের বাদশাহ হন। তাঁকে যুগের ইমাম বলা হয়ে থাকে। যুগের ইমামগণকে সৃষ্টির প্রারম্ভে মহান আল্লাহ্ নির্ধারণ করে রেখেছেন, কোন জামানায় কোন যুগের ইমাম আগমন করবেন। যুগের ইমামগণের সিনা মোবারকে নুরে মোহাম্মদীর নুর বিরাজমান থাকে, যাঁদের রূহকে রূহে আজম বলা হয়। যার ফায়েজের সাহায্যে জগৎ পরিচালিত হয় এবং হেদায়েতের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তাই হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে, যে ব্যক্তি তার যুগের ইমামের পরিচয় লাভ করবে না, তার মৃত্যু হবে অন্ধকারে নিমজ্জিত।
অলী-আল্লাহ্গণ আসমানি কিতাব ও তাঁদের হিকমত এবং নবিদের অনুরূপ আধ্যাত্মিক ক্ষমতা তথা কারামতের দ্বারা সাধারণ মানুষকে আল্লাহর পথে পরিচালিত করেন। আউলিয়ায়ে কেরামের মর্যাদা মহান আল্লাহর কাছে সংরক্ষিত থাকে, যা জগতের মাঝে প্রকাশ পায় তাঁদের শিক্ষাদান পদ্ধতি ও এর ব্যপ্তি, সংস্কার এবং কারামত দ্বারা। যুগে যুগে বিভিন্ন অলী-আল্লাহ্গণ আগমন করেছেন, তাঁরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের শিক্ষা দিয়েছেন, আল্লাহ্কে পাওয়ার পথ বা তরিকা বাতলে দিয়েছেন যা তাঁদের নামানুসারে তরিকা হিসেবে প্রচার পেয়েছে। যেমন- বড় পির হযরত আব্দুল কাদের জিলানি (রহ.)-এর তরিকা কাদেরিয়া তরিকা, হযরত বাহাউদ্দিন নক্শবন্দ (রহ.)-এর তরিকা নক্শবন্দিয়া তরিকা, হযরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.)-এর তরিকা চিশতিয়া তরিকা, হযরত মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রহ.)-এর তরিকা মোজাদ্দেদিয়া তরিকা।
ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় আউলিয়ায়ে কেরাম দ্বারা প্রচারিত তরিকা তাঁদের অনুসারীরা পালন করে ধর্মের বাস্তবতা নিজেদের জীবনে উপলদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন। তাই তাঁদের অনুসারীদের মাঝে পাকপাঞ্জাতনের প্রতি ভালোবাসা আজও পরিলক্ষিত হয়। হযরত রাসুল (সা.)-এর ওফাতের পর মোহাম্মদী ইসলামের ভিতরে যে সমস্ত ভুল তথ্য ও ভুল ব্যাখ্যা জগতময় প্রকাশ পেয়েছে, ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদতের পর কখনোই তা জোরালো প্রতিবাদের সম্মুখীন হয়নি ফলে জগতময় মহান আল্লাহ্ ও হযরত রাসুল (সা.)-এর আদর্শ পরিপন্থি আকিদা প্রসার পেয়েছে এবং তা ধর্মের মূল আদর্শকে বিচ্যুত করেছে। তবে আউলিয়ায়ে কেরামের অনেকেই প্রকাশ করেছেন এক জ্যোতির্ময় মহামানবের আগমন ঘটবে, যাঁর দ্বারা হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রচারিত মোহাম্মদী ইসলাম আবারও জগতের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। মহান রাব্বুল আলামিনের অপার দয়ায় যিনি রাসুল (সা.)-এর মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবন ঘটাবেন, ধর্মের সকল ভ্রান্তি দূরীভূত করবেন, সকল নবি-রাসুলের প্রচারিত ধর্মকে সমাজে সঠিকভাবে তুলে ধরবেন এবং মহান আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলগণের সম্পর্কে যে ভুল ধারণা রয়েছে, তা সংস্কার করে মানুষের মাঝে তুলে ধরবেন। যিনি ইতিমধ্যেই সকল নবি-রাসুল ও তাঁদের ধর্মের মাহাত্ম্য সুচারুরূপে জগতে তুলে ধরেছেন। সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল হযরত মোহাম্মাদ (সা.) প্রচারিত মোহাম্মদী ইসলাম সমাজের মাঝে পুনরায় ফিরিয়ে এনেছেন এবং মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের জাত ও সিফাত সম্পর্কে নির্ভুল ধারণা জগতবাসীর কাছে তুলে ধরেছেন। সেই মহামানব আর কেউ নন, তিনি আমাদের মহান মোর্শেদ মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজান।
সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজানের শিক্ষা হযরত রাসুল (সা.)-এর অনুরূপ যা প্রমাণ করে তাঁর প্রচারিত ধর্ম আল্লাহ্ কর্তৃক মনোনীত ধর্ম মোহাম্মদী ইসলাম। তিনি নিজ নামে তরিকা প্রচার করেন না, তিনি হযরত রাসুল (সা.)-এর ধর্ম প্রচার করেন। তাঁর সুমহান শিক্ষা হচ্ছে- ১। আত্মশুদ্ধি লাভ করে আদর্শ চরিত্রের অধিকারী হওয়া। ২। আত্মার মাঝে আল্লাহর জিকির জারির মাধ্যমে ইমানের সাথে মৃত্যু বরণ করা। ৩। দুনিয়ার কল্পনামুক্ত হয়ে একাগ্রতার সাথে নামাজ আদায় করা এবং ৪। হযরত রাসুল (সা.)-এর মহব্বত হাসিলের মাধ্যমে আশেকে রাসুল হওয়া। মোহাম্মদী ইসলাম সমাজে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। মোহাম্মদী ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে তিনি হযরত রাসুল (সা.)-এর ধর্মের মাঝে যে সমস্ত অসঙ্গতি পর্যবেক্ষণ করেছেন, তা তিনি প্রতিনিয়ত দূর করে যাচ্ছেন। যার প্রমাণ সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের ধর্মের সংস্কারসমূহ। তিনি ধর্মের অসংখ্য সংস্কার করেছেন, যার অনেকগুলি রাষ্ট্রিয়ভাবে এবং সামাজিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি, খোলা ও সরলমনে তা চিন্তা করলে যে কোনো মানুষ বুঝতে সক্ষম হবেন, সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী কত উচ্চমর্যাদার অলী-আল্লাহ্।
সমাজে মানুষের মাঝে আল্লাহ্ ও নবি-রাসুল সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নেই। বরং মানুষ তাঁদের সম্পর্কে কাল্পনিক ধ্যান ধারণা পোষণ করে যা তাদের বিভ্রান্তির দিকে ঠেলে দেয়। ধর্মের সঠিক দিকনির্দেশনা না থাকার কারণে মানুষ এলমূল ক্বালবের জ্ঞান ছেড়ে দিয়ে মস্তিষ্ক নির্ভর কিতাবি জ্ঞানের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। ধর্মের মূল স্বাদ যা হৃদয় হতে উৎসারিত, তা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। মানুষ ধারণাই করতে পারে না যে, হৃদয় দ্বারা জ্ঞান অর্জন সম্ভব। সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজান মানুষকে হৃদয় ভিত্তিক জ্ঞান তথা এলমে তাসাউফের শিক্ষা দিয়ে থাকেন, যা অর্জন করে মানুষ মহান আল্লাহ্ ও হযরত রাসুল (সা.)-এর নৈকট্য লাভ ও তাঁদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে ধর্ম কর্ম পালন করতে সক্ষম হচ্ছেন। সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজান পবিত্র কুরআনের আলোকে সকল নবি-রাসুল ও তাঁদের প্রচারিত ধর্ম সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিয়েছেন। তিনি প্রমাণ করেছেন, কারও ধর্ম বাতিল হয়নি। তিনি তাঁদের মান মর্যাদা সমাজের মাঝে তুলে ধরেছেন। তাই হযরত ইব্রাহীম (আ.) সকল নবি-রাসুলের পক্ষ হতে তাঁকে আম্বিয়ায়ে কেরামের ধর্মের বেলায়েত প্রদান করেছেন।
মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী খেতাব, যে ঐশ্বরিক স্বপ্নের মাধ্যমে হযরত রাসুল (সা.), সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজান প্রদান করেছেন, তার বাস্তবিক প্রমাণসমুহ সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের ধর্মীয় সংস্কারগুলোতে স্পষ্টতই পরিলক্ষিত হচ্ছে। সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান জগতে প্রমাণ করে দিয়েছেন হযরত রাসুল (সা.) কখনোই গরিব ও অসহায় ছিলেন না, তিনি ছিলেন বাদশাহর বাদশাহ। ইহুদি নাসারাদের চক্রান্তমুলক অপপ্রচারের কারণে প্রচার হয়েছে যে, হযরত রাসুল (সা.) সত্তর তালি জামা পরতেন, না খেয়ে পেটে পাথর বাঁধতেন, ইহুদির বাগানে বালতি দিয়ে পানি তুলতেন। আরও বিভিন্ন রকম বানোয়াট গল্প; যা সাধারণ মানুষ সরল মনে বিশ্বাস করে, দোজাহানের বাদশাহ্ হযরত রাসুল (সা.)-কে খাটো করতো। কিন্তু মহান সংস্কারক সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজান প্রমাণ করে দিয়েছেন, হযরত রাসুল (সা.) গরিব ছিলেন না, তিনি ধনী ছিলেন। তিনি আল্লাহর শ্রেষ্ঠ বন্ধু এবং তাঁর জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট। তাঁর উপর জাকাত প্রদান, কোরবানি করার বিধান প্রযোজ্য ছিল, যা গরিব ব্যক্তির উপর ফরজ নয়। হযরত রাসুল (সা.)-কে গরিব ভাবা জঘন্যতম অন্যায়। হযরত রাসুল (সা.)-এর শানে সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়ে যে কিতাব প্রকাশ করেছেন, তাতে হযরত রাসুল (সা.)-এর শান মান মর্যাদা এত গভীর ও সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যা জগতের মাঝে ইতিপূর্বে কেউ তুলে ধরতে পারেননি।
সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজানের শ্রেষ্ঠ সংস্কার হচ্ছে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের পরিচয় সমন্ধে সঠিক ধারণা জগতের মানুষের কাছে তুলে ধরা। জগতময় মানুষ মনে করে আল্লাহ্ নিরাকার, কিন্তু তা কত বড় ভুল ও মিথ্যা ধারণা, তা সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী তাঁর প্রণীত ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ গ্রন্থে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। পবিত্র কুরআনের বাণী ও হযরত রাসুল (সা.)-এর মারফু হাদিস দ্বারা তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, মহান আল্লাহ্ মানুষের মতো রক্ত মাংসের দেহধারী নন, তাঁর নুরের রূপ আছে, তাঁকে নিরাকার ভাবা নাস্তিকতাবাদের নামান্তর। সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজান পবিত্র কুরআন ও হাদিস তন্ন তন্ন করে খুঁজে প্রমাণ করে দিয়েছেন, আল্লাহর আকার আছে তিনি নিরাকার নন। আল্লাহ্ যে আকার তাঁর অসংখ্য আয়াত পবিত্র কুরআনে আছে। কিন্তু আল্লাহ্ যে নিরাকার এর স্বপক্ষে কুরআনে একটি আয়াতও নেই। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের যে আকার রয়েছে, তা সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজানের পূর্বে কোনো অলী-আল্লাহ্ বিস্তারিতভাবে সুস্পষ্ট প্রমাণসহ তুলে ধরতে পারেননি।
স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে আল্লাহর আকার আছে, কিন্ত মানুষ আল্লাহ্কে নিরাকার বলে কেন? এর কারণ গভীরভাবে চিন্তা করা প্রয়োজন। মহান আল্লাহ্ দেখতে কেমন তা বুঝতে হলে আল্লাহর দিদার বা দর্শন লাভ করা প্রয়োজন। যিনি আল্লাহ্কে দেখেছেন তিনি অবশ্যই আল্লাহর বর্ণনা জানেন। সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজান আল্লাহ্কে দেখেছেন আর দেখেই তিনি আল্লাহর বর্ণনা দিয়েছেন। তাঁর জ্ঞানের পরিসীমা ও আধ্যাত্মিকতার পরিব্যপ্তি অনেক গভীর। তাই তিনি তাঁর তাফসীর শরীফে বর্ণনা করেছেন পবিত্র কুরআন ও হাদিসের স্পষ্ট বাণী মোবারক ও অকাট্য যুক্তিপূর্ণ ব্যাখ্যা, যা প্রমাণ করে আল্লাহর আকার আছে, তিনি নিরাকার নন। সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজান সাধারণ মানুষকে আহবান জানিয়েছেন আল্লাহর পরিচয় সঠিকভাবে জানার জন্য, মানুষ কিভাবে আল্লাহর দিদার লাভ করবে আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করে ধর্ম পালন করবে, সেই শিক্ষাই প্রতিনিয়ত তিনি মানুষকে দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর শিক্ষা হচ্ছে আত্মিক শিক্ষা যা আত্মিক বিশোধনের মাধ্যমে লাভ হয়।
প্রশ্ন জাগে- মানুষ কেন আল্লাহ্কে দেখে না বা দেখার জন্য সচেষ্ট হয় না? আল্লাহর ভাষায়, “আমি তো বহু জিন ইনসান সৃষ্টি করেছি, তাদের হৃদয় আছে কিন্ত তা দ্বারা তারা উপলদ্ধি করে না, তাদের চক্ষু আছে তা দ্বারা তারা দেখে না এবং কান আছে তা দ্বারা তারা শোনে না, তহারা পশুর ন্যায়, বরং তার চেয়েও অধিক নিকৃষ্ট, তারাই উদাসীন।” (সুরা আল আরাফ ৭ : আয়াত ১৭৯)
জাগতিকভাবে দেখা যায়, যে ব্যক্তির ইন্দ্রিয় অচল থাকে তাকে প্রতিবন্ধি বলা হয়। সে তার অচল ইন্দ্রিয় দ্বারা কোনো কিছু সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ করতে পারে না। অনুরূপভাবে উপরের আয়াতের মাধ্যমে বোঝা যায় আত্মিক ইন্দ্রিয় বন্ধ থাকার কারণে তাদের পক্ষে আল্লাহ্কে দেখা এবং তাঁর কথা শোনা সম্ভব নয়। তাই তারা যদি তাদের মস্তিষ্ক প্রসূত চিন্তা দ্বারা বলে আল্লাহ্ নিরাকার, তা প্রকৃতভাবে গ্রহণযোগ্য নয় এবং আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের কাছে তা অমার্জনীয় অপরাধ। তাই আল্লাহ্কে দেখতে হলে সকল মানুষের আত্মিক পঞ্চ ইন্দ্রিয় জাগ্রত করা একান্ত কর্তব্য। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন তাঁর নিজের রূপ ও গুণসমূহের যে বর্ণনা দিয়েছেন, তা সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজান তাঁর তাফসীরে উল্লেখ করেছেন। এর ব্যাখ্যায় তিনি মারফু হাদিস সন্নিবেশ করে জগতের মাঝে প্রমাণ করে দিয়েছেন, আল্লাহর আকার আছে, তিনি নিরাকার নন। যার ফলশ্রুতিতে সাধারণ মানুষ যাদের আত্মিক ইন্দ্রিয় জাগ্রত নয়, তারাও জানতে, বুঝতে ও মানতে পারছে মহান আল্লাহর আকার আছে।
সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী তাঁর তাফসীর গ্রন্থ ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’তে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের দ্বারা স্পষ্ট তুলে ধরেছেন মহান আল্লাহর রূপের কথা, আল্লাহর পবিত্র নুরময় সত্তা রয়েছে, তাঁর চেহারা মোবারক আছে। এরশাদ হয়েছে, “পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। সুতরাং তোমরা যেদিকে তাকাও সেদিকেই আল্লাহর চেহারা বিদ্যমান।” (সুরা আল বাকারাহ ২ : আয়াত ১১৫)
মহান আল্লাহর চোখ মোবারক আছে যা দ্বারা তিনি দেখেন, এরশাদ হয়েছে, “হে নূহ! আপনি আমার দুই চোখের সামনে নৌকা তৈরি করুন। যেভাবে তৈরি করতে আমি আপনাকে ওহি বা প্রত্যাদেশ করেছি।” (সূরা হুদ ১১ : আয়াত ৩৭)
আল্লাহর কর্ণ মোবারক আছে যা দ্বারা তিনি শোনেন, এরশাদ হয়েছে, “তোমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করো। আর জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সবকিছু শোনেন ও জানেন।” (সূরা আল বাকারাহ ২ : আয়াত ২৪৪)
মহান আল্লাহর জবান মোবারক আছে, যা দ্বারা তিনি কথা বলেন, তিনি হযরত রাসুল (সা.)-এর সাথে কথা বলেছেন। এরশাদ হয়েছে, “হে রাসুল! আপনি মানবমণ্ডলীকে বলে দিন, এটি [মুহাম্মাদ (সা.) ও কুরআন] আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত। অতএব এতে সকলে যেন আনন্দিত হয়।” (সূরা ইউনুস ১০ : আয়াত ৫৮)
আল্লাহ্ তায়ালার হাত মোবারক আছে, যা দ্বারা তিনি ধরেন। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, “আল্লাহ্ স্বীয় কব্জির মুষ্টি সংকুচিত করেন এবং প্রসারিত করেন। আর তাঁরই নিকট তোমরা ফিরে যাবে।” (সূরা আল বাকারাহ ২ : আয়াত ২৪৫)
আল্লাহর দেহ মোবারক আছে, এরশাদ হয়েছে, “আল্লাহ্ তোমাদেরকে তাঁর নিজের নফস (দেহ) সম্পর্কে সংবাদ দিচ্ছেন যে, তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি অতীব দয়ালু।” (সূরা আলে ইমরান ৩ : আয়াত ৩০)
আল্লাহর রূহ মোবারক আছে, এরশাদ হয়েছে, “আমরা ঈসা ইবনে মারিয়ামকে সুস্পষ্ট মুজিযা দান করেছি এবং তাঁকে পবিত্র রূহ মোবারক দ্বারা শক্তিশালী করেছি।” (সূরা আল বাকারাহ ২ : আয়াত ৮৭)
আল্লাহর পা মোবারক আছে, এরশাদ হয়েছে, “সেদিন (বিচার দিবসে) মহান আল্লাহ্ স্বীয় পায়ের গোছা উন্মুক্ত করবেন। অতঃপর হাশরবাসীকে আহবান করা হবে আল্লাহর কদম মোবারকে সিজদা করার জন্য।” (সূরা আল কালাম ৬৮ : আয়াত ৪২)
মহান সংস্কারক সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজান তাঁর তাফসীরে প্রকাশ করেছেন আল্লাহর গুণের কথা; আল্লাহর গুণবাচক নামসমুহের ব্যাখ্যা দিয়ে আল্লাহ্ কিভাবে রহমান, কিভাবে রাহিম, গাফফার, খালিক, মালিক, রাজ্জাক, রব, মুসাব্বির, কাহহার, ওয়াহাব, মুনতাকিম, কুদ্দুস, সালাম, মুমিন, মুহাইমিন, জব্বার, মুতাকাব্বির, খালিদ, আদল, মুকিত, জলিল, মাজিদ, সামাদ ইত্যাদি সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) অতি সুস্পষ্ট ও প্রাঞ্জল ভাষায় তুলে ধরেছেন। আল্লাহ্ তায়ালা নমুনা বিহীন সবকিছু সৃষ্টি করেছেন শুধু মানুষ ছাড়া, মানুষকে তিনি নিজরূপে সৃষ্টি করেছেন। হাদিসে বর্ণীত হয়েছে, “নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মানুষকে নিজ রূপে সৃষ্টি করেছেন।” (বোখারী শরীফ) তাই মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম হয়। সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেব্লাজানের তাফসীর পড়লে মানসপটে মহান রাব্বুল আলামিনের যে রূপ ও গুণের দৃশ্য প্রতিভাত হয়, তাতে খোদা প্রেমিকের হৃদয় আল্লাহর প্রেমের জোয়ারে মাতোয়ারা হয়ে যায়, সে তার মনের অজান্তে খোদার ধ্যানে মশগুল হয়ে যায়। কবির ভাষায়, “খোদার প্রেমের শরাব পিয়ে, বেহুঁশ হয়ে রই পড়ে।”
সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) তাঁর তাফসীরে আল্লাহর জাত ও সিফাতের যে বর্ণনা দিয়েছেন তা জগতের বুকে এত প্রাঞ্জল, সুস্পষ্ট ও সুশৃঙ্খলভাবে আর কেউ করতে পারেননি। মহান রাব্বুল আলামিন বেলায়েতের যুগে তাঁর শ্রেষ্ঠ বন্ধুর কর্মে অত্যাধিক সন্তুষ্ট, তাই তিনি পূর্ণিমার চাঁদে সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগীর চেহারা মোবারক দেখিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছেন, তিনি বেলায়েতের যুগের শ্রেষ্ঠ অলী-আল্লাহ্, যুগের ইমাম, আখেরি জামানার প্রতিশ্রুত মহামানব।
সুতরাং বর্তমান জামানায় আল্লাহ্কে পেতে হলে সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেব্লাজানের সান্নিধ্যে আসতে হবে। আমাদের বুলন্দ নসিব, আমরা সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.)-এর জামানায় জন্মগ্রহণ করেছি। আল্লাহ্ আমাদেরকে তাঁর মহান বন্ধু সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেব্লাজানের পরিচয় লাভ করে মৃত্যু অবধি তাঁর কদম মোবারকে থাকার তৌফিক দান করুন। আমিন।