Cancel Preloader

সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলাজান।

সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের ৭১তম শুভ জন্মবার্ষিকী উদযাপন


ড. মুহাম্মদ নাছিরউদ্দীন (সোহেল)
আমার মহান মোর্শেদ মহান সংস্কারক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর ৭১তম শুভ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানটি গত ১৬ ডিসেম্বর, বুধবার ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও মহাধুমধামের সাথে উদযাপন করা হয়। মহান মোর্শেদের জন্মদিনের অনুষ্ঠানটি দেশ ও বিদেশের মোর্শেদ প্রেমিক আশেকে রাসুলেরা বিগত বছরগুলোর তুলনায় এই বছর ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে উদযাপন করেন। এই উদযাপনের মাত্র ১২ দিন পর অর্থাৎ গত ২৮ ডিসেম্বর, সোমবার সকাল ৬টা ৪৮ মিনিটে জগৎশ্রেষ্ঠ এই মহামানব আমাদের সকলকে শোক সাগরে ভাসিয়ে ওফাৎ লাভ করেন। কখনো ভাবিনি মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের ৭১তম শুভ জন্মদিন অনুষ্ঠানটির উদযাপনের বিস্তারিত বিবরণ, তাঁর ওফাতের পরে লিখতে হবে। এই লেখাটি লিখতে গিয়ে হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে উঠছে, দুচোখ দিয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু ঝরছে। যে মহামানবের নুরানিময় চেহারা মোবারক দেখে নিজের হৃদয়ে শান্তির ফল্গুধারা বয়ে যেত, যাঁর এক পলকের দৃষ্টিতে হৃদয়ের সকল পাপ ঝড়ে যেতো, আজ সেই মহামানব জাহেরিয়াতে নেই। কিন্তু মুরিদের মোর্শেদ কখনো মৃত্যুবরণ করেন না। আমার প্রাণপ্রিয় মোর্শেদ বাবা দেওয়ানবাগী আমার হৃদয়পটে চিরঞ্জীব হয়ে আছেন এবং থাকবেন চিরকাল। হযরত রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, “আল্লাহর অলীগণ মৃত্যুবরণ করেন না, বরং তাঁরা এক ঘর থেকে অন্য ঘরে স্থানান্তরিত হন মাত্র।” (তাফসীরে কাবীর ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৮৮১)
মহাগ্রন্থ আল কুরআনে এরশাদ হয়েছে, “তাঁর প্রতি শান্তি, যেদিন সে জন্মগ্রহণ করেন, যেদিন সে ওফাৎ লাভ করেন এবং যেদিন সে পুনরুত্থিত হবেন।” (সূরা মারইয়াম ১৯: আয়াত ১৫) এই আয়াতের মাধ্যমে সুস্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, অলী-আল্লাহ্গণের শুভ জন্ম ও ওফাৎ উভয়ই যথাযথ মর্যাদার সাথে উদযাপন করলে মানবজাতি অবরিত শান্তি ও কল্যাণ লাভ করবে। আমার মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের ৭১তম শুভ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানটি উদযাপনের বিস্তারিত বিবরণ নিম্নে উপস্থাপন করা হলো-
গত ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০ইং আমার মহান মোর্শেদ মহান সংস্কারক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর ৭১তম শুভ জন্মবার্ষিকী ছিল। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মোর্শেদ প্রেমিকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে মহান মোর্শেদের শুভ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানটি ১৪ ডিসেম্বরের পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় ছুটির দিন ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে উদযাপন করা হয়। এছাড়া ১৯৮৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর রহমতের সময় মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান ‘মোজাদ্দেদ’ তথা সংস্কারকের সুমহান দায়িত্ব লাভ করেন। শুধু তাই নয়, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেও ১৬ ডিসেম্বর তারিখটি সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের জন্য তাৎপর্যমণ্ডিত একটি দিন। সার্বিক দিক বিবেচনা করে দেশ ও বিদেশের লক্ষ লক্ষ মোর্শেদ প্রেমিকদের সাথে নিয়ে ১৬ ডিসেম্বর অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এই বছর সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের শুভ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানটি স্মরণকালের সর্বাপেক্ষা মহাধুমধামের সাথে উদযাপিত হয়।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বাবে রহমত, দেওয়ানবাগ শরীফে সকাল ৯টায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন আশেকে রাসুল হযরত আমিরুল ইসলাম। এরপর মেজো সাহেবজাদা ড. আরসাম কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুরের সঞ্চালনায় বাবে রহমত, দেওয়ানবাগ শরীফ-সহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত সর্বমোট ১১টি দরবার শরীফের প্রতিনিধিরা দরবারগুলোতে কীভাবে মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের শুভ জন্মদিন উদযাপন করছেন, তা বিস্তারিত অভিহিত করেন। মূলত যে সাহেবজাদা যে আঞ্চলিক দরবার শরীফের পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন, তাঁর সার্বিক তত্ত্বাবধানে সেই দরবারগুলোতে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের শুভ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়। আঞ্চলিক দরবার শরীফের প্রতিনিধিদের নিকট থেকে জানা যায় যে, সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের শুভ জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তারা দরবার শরীফকে নতুন সাজে সজ্জিত করেছেন। এছাড়া উপস্থিত আশেকে রাসুলদের জন্য বিশেষ তাবারুকের আয়োজন করেন এবং রকমারি পিঠা, ফলমূল, নানা ধরনের সুস্বাধু খাবারেরও আয়োজন করা হয়। মহান মোর্শেদের শুভ জন্মদিনের অনাবিল আনন্দ পরিবারের সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে তারা নিজেরা নতুন জামা পরিধান করেছেন এবং পরিবারের সবাইকে নতুন জামা কিনে দিয়েছেন। এমনকি তারা গরিব ও দুঃখি মানুষের মাঝেও খাবার বিতরণ করেছেন। বিভিন্ন এলাকার মোর্শেদ প্রেমিকেরা পশু জবাই করেছেন এবং এলাকাবাসীর মাঝে বাজার মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে মাংস বিতরণ করেছেন। এছাড়া ঢাকার প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলের আরামবাগস্থ বাবে রহমতে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান অবস্থান করতেন বিধায় বাবে রহমত, দেওয়ানবাগ শরীফে নানা রকমের ফুল দিয়ে এবং বিভিন্ন রঙের লাইট দিয়ে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। বাবে রহমত ভবনের গলি থেকে শুরু করে আরাবাগস্থ কুতুবুল আকতাবের গলি-সহ আরামবাগের শেষ মাথা এবং রতন মেটাল ভবন পর্যন্ত সম্পূর্ণ রাস্তা একটানা ৩ দিন পর্যন্ত আলোকসজ্জায় সজ্জিত থাকে। বাবে রহমতের নীচ তলায়, সেজো সাহেবজাদা ইমাম ড. সৈয়দ এ.এফ.এম. ফজল-এ-খোদা (মা. আ.)-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে উপস্থিত আশেকে রাসুলদের জন্য রকমারি পিঠা, বিভিন্ন রকমের মিষ্টান্ন, কেক, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ঝালমুড়ি, কফি, চা-সহ নানাবিধ সুস্বাধু খাবারের আয়োজন করা হয়। সারাদিনব্যাপী এই আয়োজন চলতে থাকে।
বিভিন্ন দরবার শরীফের প্রতিনিধিগণ যারা অভিমত ব্যক্ত করেন, তারা হলেন- বাবে মাগফিরাত, চট্টগ্রাম থেকে আশেকে রাসুল ইউসুফ হোসেন; বাবে নিয়ামত, চুয়াডাঙ্গা থেকে আশেকে রাসুল আবদুল হাই সিদ্দিকী; বাবে নূর, রাজশাহী থেকে আশেকে রাসুল আলী আক্কাস খান; বাবে নাজাত, রংপুর থেকে আশেকে রাসুল আনিছুর রহমান চৌধুরী; বাবে জান্নাতুল মাওয়া, গাজীপুর থেকে আশেকে রাসুল হযরত তরিকুল ইসলাম; বাবে ফেরদৌস, মগবাজার, ঢাকা থেকে আমি [আশেকে রাসুল ড. মুহাম্মদ নাছিরউদ্দীন (সোহেল)]; বাবে বরকত, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ থেকে আশেকে রাসুল অ্যাডভোকেট নূরুজ্জামান; বাবে জান্নাত, নারায়ণগঞ্জ থেকে আশেকে রাসুল ড. সৈয়দ মেহেদী হাসান; বাবে মদীনা, কমলাপুর, ঢাকা থেকে আশেকে রাসুল অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান মিয়া; বাবে মোর্শেদ, আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আশেকে রাসুল এমদাদ হোসেন এবং রাজধানীর বাবে রহমত, দেওয়ানবাগ শরীফ থেকে আশেকে রাসুল হযরত এমরান হোসাইন মাজহারী।
আঞ্চলিক দরবার শরীফের প্রতিনিধিদের আলোচনা পর্ব শেষ হওয়ার পর বিশ্বের ২৬টি দেশের ২৯ জন প্রতিনিধি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ড. আরসাম কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুরের সাথে সরাসরি সংযুক্ত হন এবং তারা কীভাবে মহান মোর্শেদের শুভ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপন করছেন, সেই বিষয়ে তাদের অভিমত ব্যক্ত করেন। তাদের বক্তব্য থেকে জানা যায় যে, ইতঃপূর্বে এতোটা আনন্দ ও উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে কখনোই মহান মোর্শেদের শুভ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপনের তাদের সুযোগ হয়নি। কেননা বহির্বিশ্বের সকল আশেকে রাসুলের পক্ষে বাংলাদেশে এসে জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার সুযোগ থাকে না। কিন্তু এবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুভ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান হওয়ায় তাদের সকলের অংশগ্রহণের সুযোগ হয়েছে। ফলে এবার তাদের আনন্দের মাত্রা পূর্বাপেক্ষা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বহির্বিশ্বের প্রতিনিধিরা আরো জানান যে, মহান মোর্শেদের শুভ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের জন্য তারা তাদের বাড়ি আলোকসজ্জায় সজ্জিত করেছেন, নতুন জামা পরিধান করেছেন এবং বাসায় উন্নত মানের খাবার রান্না করেছেন। বহির্বিশ্বে যে সকল দেশের প্রতিনিধিরা অভিমত প্রকাশ করেছন, সেই দেশগুলো হচ্ছে- সৌদি আরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, কাতার, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, লেবানন, মালদ্বীপ, ওমান, সাইপ্রাস, সাউথ আফ্রিকা, সুইডেন, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, জার্মানি, স্পেন, হাঙ্গেরি, পর্তুগাল, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।
বহির্বিশ্বের মোর্শেদ প্রেমিকদের আলোচনা পর্বটি শেষ হওয়ার পর সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের সম্মানিত সাহেবজাদা যথাক্রমে কনিষ্ঠ সাহেবজাদা ইমাম ড. সৈয়দ এ এফ এম মঞ্জুর-এ-খোদা (মা. আ.), বড়ো সাহেবজাদা ইমাম ড. সৈয়দ এ এফ এম নূর-এ-খোদা আল আজহারী (মা. আ.) ও মেজো সাহেবজাদা ইমাম ড. আরসাম কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর এই দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরে মূল্যবান আলোচনা করেন। সাহেবজাদা হুজুরগণের আলোচনার পর্ব শেষে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানকে বিশেষ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান তাঁর মহামূল্যবান বক্তব্যে বলেন, “মহান রাব্বুল আলামিনের দয়ায় আজকে আমি আপনাদের অনুষ্ঠান দেখে মনে শান্তি পেয়েছি, আপনারা হযরত রাসুল (সা.)-এর ধর্ম সারা বিশ্বে তুলে ধরতে পারবেন। আমার জানা ছিল না যে, বহির্বিশ্বে এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এতগুলো দরবার ও খানকা শরীফ থেকে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর আদর্শ তুলে ধরা হচ্ছে। আমরা আগে অনুষ্ঠান করতাম আঞ্চলিক ভিত্তিক, কিন্তু আপনারা প্রমাণ করে দিলেন সারা বিশ্বের আশেকে রাসুলদের সাথে নিয়ে আমরা একই দিনে অনুষ্ঠান উদযাপন করতে পারি। আনন্দ মানুষের মন থেকে আসে। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের মাঝে আনন্দ দেখতে পেয়েছি।” আলোচনার এক পর্যায়ে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান বলেন, “আমার ৭১ বছর হয়ে গেছে, কখন যে পয়গাম আসে মহান আল্লাহ্ই ভালো জানেন।” এছাড়াও সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান মোহাম্মদী ইসলামের বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। তিনি তাঁর মহামূল্যবান বাণী মোবারক শেষে আখেরি মুনাজাত পরিচালনা করেন।
এবার সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের শুভ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানটি দেওয়ানবাগ শরীফের বিভিন্ন আঞ্চলিক দরবার শরীফ, দেশ ও বহির্বিশ্বের খানকাহ শরীফ ও জাকের মজলিসগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাজার হাজার আশেকে রাসুল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন। শুধু তাই নয়, হাজার হাজার আশেকে রাসুল পরিবার তাদের বাড়িতে বসে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন-সহ মহান মোর্শেদের শুভ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করেন।
উল্লেখ্য যে, ১৬ ডিসেম্বর শুভ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের আলোচনায় সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান আল্লাহ্ তায়ালার সাথে মহামিলনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু মোর্শেদ প্রেমিক আশেকে রাসুলগণ ভাবতে পারেননি এই ইঙ্গিতের মাত্র ১২ দিন পর সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান ওফাৎ লাভ করবেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করে কমলাপুরস্থ বাবে মদীনা, দেওয়ানবাগ শরীফে রওজাস্থ করা হয়। জগৎশ্রেষ্ঠ এই মহামানব বেলায়েতের যুগের একজন সফল অলী-আল্লাহ্। তিনি কারবালার প্রান্তরে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া হেরাগুহা থেকে উৎসারিত হযরত রাসুল (সা.)-এর চির শান্তির ধর্ম মোহাম্মদী ইসলামকে জগতের বুকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি ধর্মের প্রায় শতাধিক সংস্কার করেছেন। তাঁর বহু সংস্কার রাষ্ট্রীয়ভাবে গৃহীত হয়েছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত হয়েছে। তিনি মানুষকে আত্মশুদ্ধি, দিল জিন্দা, নামাজে হুজুরির শিক্ষা দিতেন, এই শিক্ষাগুলো পবিত্র কুরআনে বর্ণিত ২৭ জন নবি-রাসুলও তাঁদের স্বজাতির নিকট দিয়েছেন। এছাড়া তিনি যেহেতু মোহাম্মদী ইসলাম প্রচার করতেন, তাই একজন মানুষ যেন মোহাম্মদী ইসলামের প্রবর্তক হযরত রাসুল (সা.)-কে ভালোবেসে তাঁর ‘আশেক’ হতে পারে সেই শিক্ষাও প্রদান করতেন। তাঁর শিক্ষা গ্রহণ করে মানুষ একদিকে ‘আশেকে রাসুল’ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন, অন্যদিকে স্বপ্ন, মোরাকাবা ও মিলাদে হযরত রাসুল (সা.)-এর দিদার লাভ করে নিজেদের জীবনকে ধন্য করেছেন। জগৎশ্রেষ্ঠ এই মহামানবের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ অলৌকিক কারামত সংঘটিত হয়েছে। তাঁর সুমহান শিক্ষা, আদর্শ, সংস্কার, অলৌকিক কারামত, ধর্মীয় ও মানবতাবাদী দর্শনে মুগ্ধ হয়ে বিশ্বের শতাধিক দেশের ৩ কোটিরও বেশি মানুষ তাঁর ভক্ত মুরিদ সন্তানে পরিণত হয়েছেন। তাঁর সহবতে এসে লক্ষ লক্ষ মানুষ আপদ, বিপদ, বালা মুসিবত থেকে পরিত্রাণ পেয়েছেন। আল্লাহর প্রিয় বন্ধু বীর মুক্তিযোদ্ধা সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর ভালোবাসা।
পরিশেষে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের কদম মোবারকে লাখো কোটি কদমবুসি পেশ করছি। আমিন।
[লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, দি পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ]

সম্পর্কিত পোস্ট