হজ ও কোরবানির হাকিকত এবং তা সঠিকভাবে পালনের পদ্ধতি
মহান সংস্কারক, মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী, যুগের ইমাম সূফী সম্রাট
হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজান
মহাবিশ্বের মহান মালিক আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন মানবজাতিকে শান্তি ও মুক্তির পথে আনার লক্ষ্যে এ পৃথিবীতে এক লক্ষ চব্বিশ হাজার নবি ও রাসুল প্রেরণ করেছেন। নবুয়তের এ সিলসিলা হযরত আদম (আ.)-এর মাধ্যমে শুরু হয় এবং সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল, কুল-কায়েনাতের রহমত হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। হযরত রাসুল (সা.)-এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ্ ইসলাম ধর্মকে পরিপূর্ণ করেন। কালেমা, নামাজ, যাকাত, রোজা ও হজ এ পঞ্চ স্তম্ভের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর রেখে যাওয়া শান্তি ও মুক্তির ধর্ম মোহাম্মদী ইসলাম।
আরবি ‘হাজ্জুন’ শব্দ থেকে হজ শব্দের উৎপত্তি। হজ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো- সংকল্পবদ্ধ হওয়া। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে ইহরামের সাথে জিলহজ মাসের ৯ তারিখে কতগুলো নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদনপূর্বক পবিত্র বাইতুল্লাহ শরীফ জিয়ারত করে আরাফার ময়দানে সমবেত হওয়া এবং হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর রেখে যাওয়া জীবনদর্শন মোহাম্মদী ইসলামের বিধান অনুযায়ী নিজেকে পরিচালিত করার সংকল্প করাকে হজ বলা হয়।
কুল-কায়েনাতের রহমত হযরত রাসুল (সা.) ১০ম হিজরিতে বিদায় হজ পালন করেন। এ হজের সময় তিনি ৯ই জিলহজ তারিখে তাঁর সব অনুসারীদের আরাফার ময়দানে হাজির করে বিদায় হজের বাণী মোবারক প্রদান করেন। বিদায় হজের এ বাণীতে হযরত রাসুল (সা.) সোয়া লক্ষ সাহাবির সামনে এ বিষয়টি সুস্পষ্ট করেন যে, মুসলিম উম্মাহ তাঁর ওফাতের পর কিভাবে চলবে, কার অনুসরণ করবে। এ প্রসঙ্গে হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, বিদায় হজের দিন আমি দেখেছি আল্লাহ্র রাসুল (সা.) কাসওয়া নামক উটের পৃষ্ঠে উপবিষ্ট অবস্থায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। তাঁঁকে তখন আমি বলতে শুনেছি- “হে লোকসকল! আমি তোমাদের মাঝে এমন জিনিস রেখে যাচ্ছি, যা আঁকড়ে ধরলে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। আর তা হলো- আল্লাহর কিতাব (কুরআন) এবং আমার আহলে বাইত।” (তিরমিজী শরীফ ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ২১৯; ই.ফা.বা. কর্তৃক অনূদিত তিরমিজী শরীফ ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৩২)
বিদায় হজের বাণী মোবারকের শেষ পর্যায়ে আল্লাহর রাসুল (সা.) উপস্থিত সোয়া লক্ষ সাহাবায়ে কেরামের নিকট জানতে চান, তিনি তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব অর্থাৎ নবুয়ত ও রিসালাতের মহান বাণী তাদের নিকট পৌঁছে দিতে পেরেছেন কী? তখন সবাই তাঁর দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পাদন করেছেন বলে স্বীকার করেন। এ সময় উপস্থিত সোয়া লক্ষ সাহাবায়ে কেরামের এ স্বীকারোক্তির ব্যাপারে হযরত রাসুল (সা.) মহান আল্লাহ্কে সাক্ষী করেন। আর তখনই আল্লাহর কাছ থেকে হযরত রাসুল (সা.)-এর ক্বালবে এ সুসংবাদ নাজিল হয়- “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্মকে পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নেয়ামত পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য ধর্ম হিসেবে পছন্দ করলাম।” (সূরা আল মায়িদাহ ৫ : আয়াত ৩)
পরিশেষে আল্লাহর রাসুল (সা.) উপস্থিত সকলকে মোহাম্মদী ইসলামের মর্মবাণী যারা অনুপস্থিত রয়েছে, তাদের কাছে পৌঁছে দিতে নির্দেশনা দেন।
সামর্থ্যবান মুসলমানদের উপর জীবনে একবার হজ করা ফরজ। এ প্রসঙ্গে মহাগ্রন্থ আল কুরআনে বর্ণিত হয়েছে- “নিশ্চয় সর্বপ্রথম যে ঘর মানুষের জন্য স্থাপিত হয়েছিল, তা তো সে ঘর যা মক্কায় অবস্থিত, যা বরকতময় এবং বিশ্বাসীদের জন্য হিদায়েত। এতে রয়েছে অনেক প্রকাশ্য নিদর্শন, ‘মাকামে ইব্রাহীম’ তার অন্যতম। যে কেউ এ ঘরে প্রবেশ করে সে নিরাপদ হয়ে যায়। মানুষের মধ্যে তার উপর আল্লাহর জন্য এ ঘরে হজ করা ফরজ, যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে।” (সূরা আলে ইমরান ৩ : আয়াত ৯৬ ও ৯৭)
এ প্রসঙ্গে হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন- “আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদিগকে উদ্দেশ্য করে ভাষণ দিচ্ছেলেন। তিনি বললেন- হে লোকসকল! তোমাদের প্রতি হজ ফরজ করা হয়েছে, সুতরাং তোমরা হজ পালন করবে। এ সময় এক ব্যক্তি প্রশ্ন করল- হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! হজ কি প্রত্যেক বছরই পালন করতে হবে? রাসুল (সা.) নিশ্চুপ রইলেন। লোকটি এভাবে তিনবার জিজ্ঞেস করল। অতঃপর আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন- আমি যদি হ্যাঁ বলি, তাহলে প্রত্যেক বছরই তোমাদের উপর হজ করা ফরজ হয়ে যাবে। অথচ তোমরা প্রত্যেক বছর হজ পালন করতে ব্যর্থ হয়ে পড়বে। তিনি আরো বলেন- আমি যা ব্যক্ত করতে চাই না, তা তোমরা ব্যক্ত করার ব্যর্থ চেষ্টা করবে না। তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা তাদের নবির নিকট অসংলগ্ন প্রশ্ন করার ফলে তারা ধ্বংস হয়েছে। আমি যা নির্দেশ দেই, তা সাধ্যমত পালন করো এবং আমি যা নিষেধ করি তা থেকে বিরত থাক।” (তাফসীরে ইবনে কাছীর)
মূলে হযরত রাসুল (সা.) হলেন ধর্মের আসল। তাঁকে ভালোবাসার নাম যেমন ইমান, তেমনি তাঁর আদেশ-নিষেধ বিনা বাক্য ব্যয়ে মেনে চলাই মুমিনের কাজ। পবিত্র হজ মুসলিম উম্মাহকে প্রতি বছর এ বার্তাই স্মরণ করিয়ে দেয়। পূর্বেই উল্লেখ করেছি- এ হজ জীবনে একবার কেবলমাত্র সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্যে ফরজ বা অবশ্য পালনীয়। অর্থাৎ মক্কাতুল মুর্কারমায় গিয়ে হজ পালন করার মতো যার শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে, তার জন্য জীবনে অন্তত একবার হজ করা ফরজ। আর মোহাম্মদী ইসলামে সামর্থ্যবান ধনীদের উপর হজ ফরজ করেছে এজন্য যে, ধনীদের সাধারণত পার্থিব বিষয়ে অধিক আসক্তি থাকে। ফলে ধর্ম পালনের ব্যাপারে তাদের মাঝে কিছুটা উদাসীনতা দেখা যায়। কিন্তু হজের আহকামগুলো পালনের মাধ্যমে তারা দৈহিক ও মানসিক প্রশিক্ষণ লাভ করে তাদের মনকে ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করার এক সুবর্ণ সুযোগ লাভ করেন।
যেমন : ইহরাম বাঁধার সময় সেলাই বিহীন দুই খণ্ড সাদা কাপড় পরিধান করে খালি মাথা ও খালি পা হওয়ার মাধ্যমে হাজিদের হৃদয়ে মৃত্যুচিন্তা উদয় হয়। ইহরাম অবস্থায় সকল প্রকার কামনা-বাসনা পরিত্যাগ করে একমাত্র আল্লাহর ধ্যানে তাঁরই স্মরণে থাকতে হয়। এজন্য আল্লাহর রাসুল (সা.) এরশাদ করেন- তোমরা মৃত্যুর পূর্বেই মৃত্যুবরণ করো অর্থাৎ- মৃতবৎ আচরণ বা পার্থিব সকল আসক্তি মুক্ত হও। প্রকৃতপক্ষে ইহরাম হলো মৃতবৎ আচরণের প্রশিক্ষণ। মৃত ব্যক্তি জীব হত্যা করতে পারে না। ইহরাম অবস্থায় প্রাণী হত্যা নিষিদ্ধ। কেউ তা করে বসলে তার জীব প্রবৃত্তিকে মৃতবৎ করার ব্যর্থতা প্রমাণিত হয়। তাই এর কাফফারা হিসেবে অন্য একটি হালাল জীব কোরবানি দিতে হয়।
এমনিভাবে মহান আল্লাহ্ হজের মধ্যে নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ জানিয়ে দিয়েছেন। মহান আল্লাহ্ বলেন- “হজের আছে কয়েকটি সুবিদিত মাস। এসব মাসে যে কেউ হজ করা স্থির করবে, তার জন্য হজের সময়ে স্ত্রী সহবাস, অন্যায় আচরণ ও ঝগড়া-বিবাদ করা বৈধ নয়। আর তোমরা যা কিছু উত্তম কাজ করো, আল্লাহ্ তা জানেন। আর তোমরা পাথেয় হিসেবে সাথে নিও। তবে সর্বোত্তম পাথেয় হলো খোদা ভীতি বা তাকওয়া। হে জ্ঞানবানরা! তোমরা আমাকেই ভয় করো।” (সূরা আল বাকারাহ ২ : আয়াত ১৯৭) কাবাঘর অর্থাৎ বাইতুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ করার সময় মন আল্লাহর প্রতি আকৃষ্ট হয়। মহান আল্লাহ্র নির্দেশে মুসলিম জাতির আদি পিতা হযরত ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ্ (আ.) স্বীয় পুত্র হযরত ইসমাঈল যবিহুল্লাহ্ (আ.)-কে সাথে নিয়ে কাবাঘর নির্মাণ করেন। অতঃপর মহান আল্লাহ্ তাঁর বন্ধু হযরত ইব্রাহীম (আ.)-কে নির্দেশ করেন- তুমি মানুষের মধ্যে হজের ঘোষণা করে দাও, তারা তোমার কাছে আসবে। অর্থাৎ তোমার মাধ্যমে তারা আল্লাহ্র কাছে হাজিরা দেবে যে, লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক। অতঃপর হজের এ বাৎসরিক সম্মেলনে এসে যার যার নজর-মানত আদায় করবে। বিষয়টি মহান আল্লাহ্ ওহির বাণী আল কুরআনে নিজ জবানে সুস্পষ্ট করেছেন। আল্লাহ্ বলেন- “যখন আমি ইব্রাহীম (আ.)-কে কাবাগৃহের স্থান নির্ধারণ করে বলেছিলাম যে, আমার সাথে কোনো কিছু শরিক করো না এবং আমার গৃহকে পবিত্র রেখ তাওয়াফকারীদের জন্য, নামাজে দণ্ডায়মান লোকদের জন্য, রুকুকারী ও সিজদাকারীদের জন্য এবং মানুষের মধ্যে হজের জন্য ঘোষণা করে দাও, তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং সবধরনের দুর্বল উটের পিঠে সওয়ার হয়ে (অর্থাৎ দূরত্বের কারণে উটগুলো দুর্বল হয়ে পড়েবে) তারা আসবে দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে, যাতে তারা উপস্থিত হতে পারে তাদের কল্যাণময় স্থানে এবং তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করবে নির্দিষ্ট দিনগুলোতে সেসব চতুষ্পদ জন্তু যবেহ করার সময়, যা তাদেরকে তিনি রিজিক হিসেবে দান করেছেন। অতঃপর তোমরা তা থেকে খাও এবং বিপন্ন, অভাবগ্রস্থকেও খাওয়াও। তারপর তারা যেন দূর করে ফেলে নিজেদের শরীরের অপরিচ্ছন্নতা এবং নিজেদের মানত পূর্ণ করে ও প্রাচীন কাবাগৃহের তাওয়াফ করে।” (সূরা আল হাজ্জ ২২: আয়াত ২৬ থেকে ২৯)
বর্ণিত আছে, কাবাঘর নির্মাণের কাজ সুসম্পন্ন হলে মহান আল্লাহ্ হযরত ইব্রাহীম (আ.)-কে বললেন- হে ইব্রাহীম! যে ঘর নির্মাণের জন্য আমি তোমাকে আদেশ করেছি, সেই ঘরের জিয়ারতের উদ্দেশ্যে তুমি সকল মানুষকে আহ্বান করো। হযরত ইব্রাহীম (আ.) আল্লাহর নিকট আরজ করলেন- হে আমার প্রতিপালক! আমি কি উপায়ে সকল মানুষকে হজের জন্য আহ্বান করব? অথচ আমার শব্দ তো সকল মানুষের নিকট পৌঁছবে না। তখন আল্লাহ্ তায়ালা তাকে বললেন- তুমি আহ্বান করো, সকল মানুষকে পৌঁছানোর দায়িত্ব আমার। অতঃপর হযরত ইব্রাহীম (আ.) ‘মাকামে ইব্রাহীম’-এ দণ্ডায়মান হলেন। কেউ কেউ বলেন- হাজরে আসওয়াদের উপর দণ্ডায়মান হলেন এবং কারো মতে সাফা পর্বতের উপর এবং কেউ কেউ বলেন- আবু কুবাইস নামক পাহাড়ের উপরে তিনি দণ্ডায়মান হলেন। অতঃপর তিনি ঘোষণা করলেন, হে লোকসকল! তোমাদের প্রতিপালক একটি ঘর বানিয়েছেন, তোমরা এ ঘরে এসে হজ পালন করো। বর্ণিত আছে, হযরত ইব্রাহীম (আ.) যখন সকল মানুষকে হজের আহ্বান করলেন, তখন সকল পাহাড়-পর্বত নিচু হয়ে গেল এবং তাঁর শব্দ পৃথিবীর সর্বপ্রান্তে সমানভাবে পৌঁছে গেল। যারা মাতৃগর্ভে ছিল, যারা পিতার পৃষ্ঠদেশে ছিল, সকলেই এ আহ্বান শুনতে পেলো। এমনকি পাথর, মাটি ও বৃক্ষরাজী তাঁর আহ্বান সুস্পষ্টভাবে শুনতে পেল। কিয়ামত পর্যন্ত যত লোক হজ করবে, সকলেই তার আহ্বানের জবাবে বলে উঠল- ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাবাইক’।
এজন্য হজ সম্পাদনকারী মূলত হযরত ইব্রাহীম (আ.)-এর ঐ আহ্বানে সাড়া দিয়ে আজো বাইতুল্লাহ শরীফ জিয়ারতের সময়ে বলে থাকেন- ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’। সুতরাং হজের মূল শিক্ষা বা হাকিকত হচ্ছে- মহান আল্লাহ ও তাঁর বন্ধুর আহ্বানে সাড়া দেওয়া এবং তাঁদের নির্দেশিত পথে পরিচালিত হওয়ার প্রতিজ্ঞা করা।
মূলে হজের প্রতিটি ক্রিয়া-কর্ম হাজি সাহেবকে এ শিক্ষা প্রদান করে যে, আল্লাহর প্রেরিত নবি, রাসুল ও তাঁর প্রিয় বন্ধুদের ভালোবেসে, তাঁদের জীবনাদর্শ অনুসরণের মধ্য দিয়ে আল্লাহ্কে লাভ করা। অর্থাৎ নিজেকে পবিত্র করে আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া।
যেমন আরাফাতের ময়দানে গিয়ে মানবজাতির আদি পিতা হযরত আদম (আ.)-এর গুনাহ মাফের ঘটনা স্মরণ করে নিজের জীবনের গুনাহর জন্যে মনে অনুতাপ-অনুশোচনা সৃষ্টি করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা-প্রার্থনা করার শিক্ষা এখানে নিহিত রয়েছে। দেখা গেছে, আল্লাহর হুকুম অমান্য করে নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল আস্বাদন করার অপরাধে হযরত আদম (আ.) বিবি হাওয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কৃত অপরাধের জন্য ৩৬০ মতান্তরে ৩৯০ বছর আল্লাহ্র দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরিশেষে হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর অসিলায় আল্লাহ্ তাঁর গুনাহ মাফ করে দেন। হযরত আদম (আ.) আরাফাতের ময়দানে তাঁর গুনাহ মাফের সুসংবাদপ্রাপ্ত হন এবং দীর্ঘদিনের বিরহের আগুনে পুড়ে অবশেষে আরাফাতের ময়দানেই তিনি বিবি হাওয়ার সাথে মিলিত হন।
এমনিভাবে সাফা-মারওয়া পর্বত সাঈ করার সময় হযরত বিবি হাজেরা (আ.) ও শিশু হযরত ইসমাঈল (আ.)-এর স্মৃতি মনে পড়ে, তাঁদের প্রতি ভক্তি শ্রদ্ধায় মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে। আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণের জীবনে সংঘটিত ঘটনাকে স্মরণ করে তাঁদের প্রতি আমাদের অন্তরে মহব্বত জাগ্রত হয়, তাঁদের আচার-আচরণকে অনুসরণ করে তাঁদের প্রতি আমাদের আনুগত্য প্রকাশ পায়। হযরত ইব্রাহীম (আ.) কাবাঘর নির্মাণ করে নিজে সেখানে অবস্থান করতেন। তাঁর প্রতি সম্মান ও আনুগত্য প্রকাশ করে তাঁর অনুসারীরা কাবাঘর তাওয়াফ করতেন।
অতঃপর হযরত ইব্রাহীম (আ.) থেকেই হজের রীতিনীতি মোহাম্মদী ইসলামে অন্তর্ভুক্ত হয়। এজন্য উম্মতে মোহাম্মদী হযরত রাসুল (সা.)-এর সুন্নত অনুসরণে হজের প্রতিটি আহকাম পালন করে থাকেন। দেখা যায়, হজ করতে গিয়ে হাজিগণ আজও কাবাঘর সাতবার তাওয়াফ করে থাকেন। এর প্রধান কারণ হযরত রাসুল (সা.)-এর আচরণ অনুসরণ করে আল্লাহর বন্ধুগণের প্রতি সম্মান ও আনুগত্য প্রদর্শন।
মিনায় গিয়ে হাজিগণকে কোরবানি করতে হয়। কোরবানি মূলত সুন্নতে ইব্রাহীম। কিন্তু হযরত রাসুল (সা.) যেহেতু কোরবানি করেছেন, হাজিগণ মিনায় গিয়ে কোরবানির মাধ্যমে স্বীয় নবি ও তাঁর পূর্বপুরুষ হযরত ইব্রাহীম (আ.) ও হযরত ইসমাঈল (আ.)-এর প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা ও আনুগত্য প্রকাশ করে থাকেন। পথে পাথরের নির্মিত ফলকে কাঁকর নিক্ষেপ করতে হয়। এ কাঁকর নিক্ষেপ করেছিলেন হযরত ইসমাঈল (আ.) শয়তানের উদ্দেশ্যে। কোরবানি হওয়ার জন্যে যখন তিনি পিতার সাথে মিনার দিকে যাচ্ছিলেন, তখন শয়তান তাঁকে ওয়াসওয়াসা দিয়েছিল। পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ.)-কে এ কথা জানালে পিতা তাঁকে পরামর্শ দিলেন, শয়তানের প্রতি কাঁকর নিক্ষেপ করতে। হযরত রাসুল (সা.) যেহেতু হযরত ইসমাঈল (আ.)-এর এই আচরণকে অনুসরণ করেছেন, আমরাও তাই হজ পালন করতে গিয়ে শয়তানের উদ্দেশ্যে কাঁকর নিক্ষেপ করি। এ কাজের উদ্দেশ্য হচ্ছে রাসুলের প্রতি সম্মান ও আনুগত্য প্রদর্শন করা। একই সাথে তাঁর আদর্শ অনুসরণের পথে নিজের নফ্স শয়তান যদি কখনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়, সে বাধাকে অতিক্রম করতে হবে- এ শিক্ষা লাভ করা। মদীনায় গিয়ে হযরত রাসুল (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারতের মাধ্যমে অন্তরে হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রতি গভীর প্রেম জাগ্রত হয়। বস্তুত ধনীদের উপর হজ পালনের বিধান রাখার উদ্দেশ্য হলো- তাদেরকে ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হবার প্রশিক্ষণ দেওয়া।
হাকিকতে হজ পালনের মাধ্যমে একজন ধনী মুসলমান ইসলাম ধর্মের আরকান-আহকামগুলো রীতিমতো পালন করে শান্তিময় জীবন যাপনের শিক্ষা লাভ করে থাকেন। মূলে নিজের চরিত্রকে মোহাম্মদী চরিত্রের ছাঁচে ঢেলে বাকী জীবন সে মোতাবেক চলার সংকল্প গ্রহণ করা হলো হজের আসল শিক্ষা। এ শিক্ষাকে জীবনে বাস্তবায়ন করতে হলে ধনীদেরকে হজ শেষে দেশে ফিরে এসে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উপায় অন্বেষণ করতে হবে। আর সে উপায় হলো- যুগের ইমাম, মোজাদ্দেদ ও আওলিয়ায়ে কেরামের সান্নিধ্য লাভ করা। কেননা নবুয়ত পরবর্তী বেলায়েতের যুগে আওলিয়ায়ে কেরাম হলেন হযরত রাসুল (সা.)-এর উত্তরসূরী, তাঁরই নুরে মোহাম্মদীর ধারক বাহক। তাঁদের অনুসরণের মাধ্যমে হজের মূল শিক্ষা নিজ চরিত্রে স্থায়ীরূপ দেওয়া সম্ভব।
প্রিয় পাঠক! এবার কোরবানির হাকিকত ও তা সঠিকভাবে পালনের পদ্ধতি প্রসঙ্গে আলোকপাত করব। কোরবানি হজের একটি অন্যতম অনুষঙ্গ। প্রতিবছর হজের এ অনুষঙ্গ আমলটির সঙ্গে একাত্ম ঘোষণা করে বিশ্বজুড়ে মুসলিম উম্মাহ কোরবানি করে থাকেন। এজন্য কোরবানি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে- “হে রাসুল (সা.)! আপনি বলুন, নিশ্চয় আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ জগতসমূহের প্রতিপালক একমাত্র আল্লাহর জন্য।” (সূলা আল আনআম ৬ : আয়াত ১৬২)
কোরবানি সুন্নতে ইব্রাহীম। হযরত ইব্রাহীম (আ.) স্বীয় পুত্র হযরত ইসমাঈল (আ.)-কে আল্লাহর নামে কোরবানি করে খলিলুল্লাহ্ উপাধি লাভ করেছেন। কোরবানির উদ্দেশ্য হচ্ছে- মানুষ আল্লাহর প্রেম অর্জনের মাধ্যমে ধর্মনিষ্ঠা ও তাকওয়া অর্জন করবে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ ওহির বাণী আল কুরআনে এরশাদ করেন- “আর আল্লাহর কাছে পৌঁছে না এগুলোর গোশত এবং না এগুলোর রক্ত, বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া। এভাবেই তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন, যেন তোমরা (এগুলো যবেহ করার সময়) আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো, যেহেতু তিনি তোমাদেরকে হিদায়েত দান করেছেন। সুতরাং সুসংবাদ দাও নেককারদেরকে।” (সূরা আল হাজ্জ ২২ : আয়াত ৩৭)
আরবি ‘কুরবুন’ শব্দ থেকে কোরবানি শব্দের উৎপত্তি- যার আভিধানিক অর্থ হলো- নৈকট্য লাভ করা। মানুষ যে কর্মের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে, মূলত এটিই তার জন্য কোরবানি।
কোরবানির ঐতিহাসিক ঘটনাটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, মুসলিম জাতির আদি পিতা হযরত ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ্ (আ.) আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক পুত্র ইসমাঈলের স্নেহ, মায়া-মমতা পরিত্যাগ করে প্রিয় সন্তানকে কোরবানি করার জন্য নির্জন মরু প্রান্তরে নিয়ে যান। আল্লাহর উপর পূর্ণ আত্মসমর্পণকারী হযরত ইসমাঈল (আ.) পিতার মুখে প্রভুর নির্দেশ শোনামাত্র কোরবানি হতে রাজি হয়ে যান। তারপর পিতাকে মিনতি করে জীবনের শেষ আবদার রেখে বললেন- পিতা! আপনি দয়া করে আমার তিনটি শর্ত মেনে নিন। স্নেহময় পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ.) তখন পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে বললেন- বাবা! তোমার শর্তগুলো কী বলো? পুত্র বললেন- আব্বাজান! প্রথমত: কোরবানি করার পূর্বে আমার হাত পা মজবুত করে বেঁধে নেবেন। কারণ গলাকাটা অবস্থায় নিজের অজ্ঞাতসারে হাত-পা ছুঁড়লে তা আপনার শরীর মোবারকে গিয়ে লাগতে পারে, কিংবা রক্তের ছিটা গিয়ে লাগতে পারে। আপনি আল্লাহর বন্ধু, এরূপ ঘটলে আপনার সাথে আমার বেয়াদবি হয়ে যাবে।
দ্বিতীয়ত: আপনি আপনার পবিত্র চোখ মোবারক কাপড় দিয়ে ভালো করে বেঁধে নেবেন। কেননা আমার অন্তিম অবস্থা দেখে স্নেহপরবশ হয়ে আল্লাহর নির্দেশ পালন করতে আপনাকে যেন দ্বিধাগ্রস্ত হতে না হয়।
তৃতীয়ত: আমি আপনাদের একমাত্র সন্তান, মায়ের চোখের মণি। যে মা আমাকে বুকে ধরে নির্জন মরুপ্রান্তরে নির্বাসিত জীবন যাপন করেছেন, শত দুঃখ-কষ্ট সহ্য করেও আমাকে লালন-পালন করেছেন, তিনি আমাকে অত্যন্ত ভালোবাসেন। আপনার কাছে আমার অনুরোধ, কোরবানি করার পর আমার রক্তমাখা জামা দুঃখিনী মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেবেন। যখন আমার কথা মনে পড়বে, তখন মা দুঃখিনী এ জামা বুকে জড়িয়ে তাঁর অন্তরের জ্বালা কিছুটা জুড়াতে পারবেন।
এ তিন শর্তে রাজি হয়ে পিতা যখন ছেলের গলায় ছুরি চালাচ্ছিলেন, তখন তিনি উচ্চারণ করছিলেন- আল্লাহু আকবার অর্থাৎ আল্লাহ্ মহান। কিন্তু ছুরি তো চলে না, অর্থাৎ গলা কাটে না। তবু তিনি ‘আল্লাহু আকবার’ বলে পুনরায় ছুরি চালালেন। তখন জিব্রাঈল বেহেশতি দুম্বা নিয়ে আসতে আসতে বলছিলেন- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার অর্থাৎ আল্লাহ্ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, আল্লাহ্ মহান। ছুরির নীচে শুয়ে হযরত ইসমাঈল (আ.) মুখে উচ্চারণ করেছিলেন- ওয়া লিল্লাহিল হামদ অর্থাৎ সকল প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য। এমন সময় কোরবানি হয়ে গেল। চোখ খুলে হযরত ইব্রাহীম (আ.) দেখলেন, দুম্বা কোরবানি হয়েছে, আর ছেলে ইসমাঈল (আ.) পাশেই দাঁড়ানো। হযরত ইব্রাহীম (আ.) ও হযরত ইসমাঈল (আ.)-এর নফ্সের জীব প্রবৃত্তি এভাবে আল্লাহর হুকুমে কোরবানি হয়ে গেল। আর তাঁরা উভয়ে আত্মসমর্পণের এ অগ্নি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আল্লাহ্র বন্ধু খেতাবে ভূষিত হলেন, আল্লাহ্র নৈকট্য অর্জনে সক্ষম হলেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেন- “হযরত ইব্রাহীম (আ.) বললেন- হে আমার প্রতিপালক! আমাকে একটি সুপুত্র দান করুন। অতঃপর আমি তাঁকে একটি ধৈর্যশীল পুত্রের সুসংবাদ দিলাম। তারপর সে যখন তাঁর পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হলো, তখন ইব্রাহীম (আ.) বললেন- হে বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে যবেহ করেছি; এখন তুমি বলো- তোমার মতামত কী? পুত্র বলল- হে আমার আব্বাজান! যা আদিষ্ট হয়েছেন, সেটি পূর্ণ করুন। ইনশাআল্লাহ্! আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন। অতঃপর যখন তাঁরা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করলেন এবং পিতা পুত্রকে কাত করে শায়িত করলেন, তখন আমি তাঁকে ডেকে বললাম, হে ইব্রাহীম! আপনিতো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখালেন। আমি এরূপেই খাঁটি বান্দাদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।” (সূরা আল সাফফাত ৩৭ : আয়াত ১০০ থেকে ১০৫)
এভাবেই হযরত ইব্রাহীম (আ.) স্বীয়পুত্র হযরত ইসমাঈল (আ.)-কে আল্লাহর নামে উৎসর্গ করে আল্লাহর কুরবিয়্যাত বা নৈকট্য হাসিল করে ‘খলিলুল্লাহ’ উপাধি লাভ করেছিলেন। হযরত ইসমাইল (আ.) আল্লাহর নির্দেশে পিতার ছুরির নীচে কোরবানি হওয়ার জন্য শায়িত হয়ে আত্মত্যাগের এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। ফলশ্রুতিতে তিনিও ‘যবিহুল্লাহ’ উপাধি লাভ করেন। এজন্য আল্লাহর ধর্মের অনুসারীদের নিকট আজ পিতা পুত্রের পরিচিতি হযরত ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ (আ.) এবং হযরত ইসমাঈল যবিহুল্লাহ (আ.) নামে খ্যাত রয়েছে। পিতা-পুত্রের সে মহান ত্যাগের স্মৃতি বহন করে আজো মুসলিম জাতির মধ্যে ‘সুন্নতে ইব্রাহীম’ হিসেবে কোরবানির রেওয়াজ চালু রয়েছে।
এ পশু কোরবানির মাধ্যমে আমরা আত্মসমর্পণের হুকুম লাভ করেছি। কিন্তু কোরবানির মূল উদ্দেশ্য থেকে আমাদের সমাজ অনেক দূরে সরে গেছে। সমাজে বাস্তবতার দিকে তাকালে দেখা যায়, বর্তমানে আমাদের অধিকাংশ মুসলমানই আমরা কোরবানি করি ৭ (সাত) নামে, কেউ বা নিজের নামে কেউবা পিতার নামে। এমনিভাবে সমাজের প্রচলিত রেওয়াজ অনুযায়ী কোরবানিদাতা ব্যক্তিগণ বলে থাকেন যে, আমি নিজ নামে অথবা পিতা বা মাতার নামে কোরবানি করছি। অথচ এভাবে বলা মারাত্মক ভুল। কেননা একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো নামে কোরবানি করা সম্পূর্ণ অবৈধ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ বলেন- “তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃতপ্রাণী, রক্ত, শূকরের মাংস, আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের নামে জবাই করা পশু।” (সূরা আল মায়িদাহ ৫ : আয়াত ৩) অথচ উম্মতে মোহাম্মদীর কর্তব্য ছিল কোরবানির ব্যাপারে মোহাম্মদী ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর উত্তম জীবনাদর্শ অনুসরণ করা। হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসুল (সা.) কোরবানি দেওয়ার সময় এভাবে নিয়ত করতেন- ‘হে আল্লাহ্! আপনি আমার পক্ষ থেকে, আমার পরিবার-পরিজনের পক্ষ থেকে এবং আমার উম্মতের পক্ষ থেকে কোরবানি কবুল করুন।’
সুতরাং কোরবানির হাকিকত তথা মূল উদ্দেশ্য অর্জন করতে হলে মহান আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর নির্দেশিত পথে কোরবানি করতে হবে। আর তা হলো- ব্যক্তির নামে নয়, বরং ব্যক্তির পক্ষ থেকে একমাত্র আল্লাহর নামে কোরবানি করতে হবে।
মহান আল্লাহ্ আমাদের সকলকে হজ ও কোরবানির হাকিকত উপলব্ধি করে তা সঠিকভাবে পালন করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
[লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ও স্বত্বাধিকারী; দেওয়ানবাগ শরীফ]