আল্লাহর দর্শন লাভ
অলৌকিক কারামত –
আশেকে রাসুল মামুনুর রশিদ, খুলনা জেলার অধিবাসী। তিনি তাঁর মহান মোর্শেদ, যুগের ইমাম সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর সহবত লাভ করার পর থেকেই তাঁর পবিত্র জবান মোবারক থেকে সর্বদা শুনে আসছেন যে, ‘দুনিয়াতে থেকেই মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনকে দেখা যায়। সৃষ্টির নিকৃষ্ট প্রাণী একটি কুকুর যদি তার মনিবকে দেখতে ও চিনতে পারে, আর আমরা মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হয়ে কেন আমাদের মনিব মহান সৃষ্টিকর্তাকেও চিনতে পারবো না?’ দয়াল বাবাজানের এই বাণী মোবারক শোনার পর থেকেই তিনি নিজেকে খুব হীন মনে করতে থাকেন এবং মহান প্রভুকে এক নজর দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েন।
২০০৬ সালের এক রাতে মোরাকাবা করতে করতে আশেকে রাসুল মামুনুর রশিদ ঘুমিয়ে পড়েন। স্বপ্নে দেখতে পান- তিনি একটি সুন্দর রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন। হাঁটতে হাঁটতে সুসজ্জিত এবং ফল-মূল পূর্ণ একটি বাগান দেখতে পেলেন। বাগানের এক পাশে ২০ থেকে ৩০ জন সুদর্শন যুবক কারো আহ্বানের জন্য প্রতীক্ষা করছিলেন। তিনি তাদের কাছে গেলেন এবং সালাম দিলেন। কিন্তু তারা তার সালামের কোনো জবাব দিলেন না। ইতোমধ্যে একটি গায়েবি আওয়াজ এলো, ‘আপনারা এদিকে আসুন।’ তিনি বিস্মিত হয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনাদের কে ডাকল? তারা তার প্রশ্নের উত্তর দিলেন, ‘আমাদের মহান প্রভু আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন।” এরপর তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। এই স্বপ্ন দেখার পর থেকে মহান রাব্বুল আলামিনকে দেখার ইচ্ছা তার আরো প্রবল হয়। এরপর থেকে প্রতি রাতেই শোয়ার সময় মহান মোর্শেদের কদম মোবারক ধরে দরূদ পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েন এবং দয়াল বাবাজানের দয়া ভিক্ষা চান।
এভাবে কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর এক রাতে স্বপ্নে দেখতে পেলেন- একটি বড়ো সুরম্য কক্ষে স্টেজের মতো একটু উঁচু স্থানে শ্বেত পাথরে নির্মিত কুরসি মোবারকে পশ্চিম দিকে মুখ করা অবস্থায় মহান রাব্বুল আলামিন সমাসীন আছেন। ঐ কক্ষে কুরসি মোবারক হতে ২০ হাত দূরবর্তী স্থানে মহান আল্লাহর দিকে মুখ করে রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত রাসুল (সা.) এবং হযরত রাসুল (সা.)-এর ডানপাশে তার মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজান দাঁড়িয়ে আছেন। আর তার মহান মোর্শেদের ডানপাশে অবিকল তারই সুরতে তার রূহকে দণ্ডায়মান দেখতে পেলেন। কক্ষের সর্বত্র পিনপতন নিস্তব্ধতা বিরাজ করছিল। তিনি আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনকে প্রত্যক্ষ করছিলেন এবং ভয়ে কাঁপছিলেন। তিনি দেখছিলেন, আল্লাহর দেহ মোবারক থেকে হালকা সোনালি নুরের আভা কক্ষের সর্বত্র বিচ্ছুরত হচ্ছিল। আল্লাহ্কে পুতঃপবিত্র দাড়ি গোঁফবিহীন যুবকের ন্যায় দেখা যাচ্ছিল। আল্লাহর হস্ত মোবারকদ্বয় কুরসি মোবারকের হাতলে সোজাসোজি রাখা ছিল এবং কদম মোবারকদ্বয় সোজা পশ্চিমমুখী রাখা ছিল। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন ঐ কুরসি মোবারকে বসে মানুষের বিচারকার্য পরিচালনা করছিলেন। ইতোমধ্যে মহান আল্লাহ্ চোখের ইশারা করলে তিনজন ফেরেশতা তার রূহকে বিচারের জন্য নির্ধারিত স্থানে হাজির করেন। তার রূহ হাঁটু গেড়ে বসে নতশিরে বিচারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। এমন অবস্থায় তার রূহ ভীত হয়ে কাঁপতে থাকে। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন তার রূহের বিচার করার পূর্বে দয়াল রাসুল (সা.)-এর দিকে তাকালেন। হযরত রাসুল (সা.) তখন তার মোর্শেদ সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের দিকে তার রূহের সুপারিশের জন্য তাকালেন। তার রূহ তখন কাঁদছিল এবং আপন মোর্শেদের কাছে করুণা ভিক্ষা করছিল। তখন মহান মোর্শেদের দয়া হলো এবং মোর্শেদ কেবলাজান দয়াল রাসুল (সা.)-এর কাছে তার রূহের মুক্তির জন্য সুপারিশ করলেন। নবিজি মহান মোর্শেদের সুপারিশ গ্রহণ করলেন এবং তার রূহের মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলেন। দয়াময় খোদা তা কবুল করলেন এবং ফেরেশতাদেরকে তার রূহ নিয়ে যেতে হুকুম করলেন। তখন ফেরেশতারা তার রূহকে নিয়ে গেলেন। এমতাবস্থায় তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘুম ভাঙ্গার পর পর তার সমস্ত শরীর কাঁপতে থাকে। মহান রাব্বুল আলামিনের দিদার লাভ করে তিনি একদম হতবিহ্বল হয়ে পড়েন।
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের সুমহান শিক্ষা ও আদর্শ গ্রহণ করে নিয়মিত মোহাম্মদী ইসলামের ওয়াজিফা আমলের মাধ্যমে বহু আশেকে রাসুল স্বপ্ন ও মোরাকাবায় মহান রাব্বুল আলামিন এবং তাঁর বন্ধু রাহমাতুল্লিল আলামিনের দিদার লাভ করে ধন্য হয়েছেন। মহান আল্লাহ্ আমাদের সকলকে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে পরিচালিত হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।