মোনাজাত
ড. আবদুল মান্নান মিয়া
জায়নামাজে বসে আল্লাহ্ উঠালাম দুহাত,
কবুল করো দয়াল আল্লাহ্ আমার মোনাজাত।
তুমি হলে মহান স্রষ্টা মালিক জগতের,
বিপদকালে সহায় তুমি মানুষ সকলের।
আমি অধম পাপী বান্দা অসীম গুনাহগার,
সূফী সম্রাটের অসিলা ধরে ক্ষমা চাই তোমার।
সকল সৃষ্টির পালনকর্তা মহান আল্লাহ্ তুমি,
কেমনে করি প্রশংসা তোমার অধম পাপী আমি।
রিজিক দাও আল্লাহ্ তুমি জগতের যত সৃষ্টি,
ফসল ফলাও জমিনে-বাগানে দিয়ে রোদ-বৃষ্টি।
এত অসীম ক্ষমতা তোমার, আমি যে নগণ্য অধম,
তবুও প্রশংসা করে, পেতে চাই তোমার নুরের কদম।
তুমি করেছ দয়া জগতের বুকে, বহু নবি-রাসুলকে,
সকল সৃষ্টিরাজি আজ ধন্য হয়েছে তোমার দয়াতে।
নবি সুলায়মান জগতের বাদশাহ্ কী সাধ্য তাঁর আছে?
সকল সৃষ্টির জন্য খাবার জোগালেন, তা খেয়ে নিলো এক মাছে।
এত খেয়েও পেট ভরলো না তার, আরো চাইলো খেতে,
নবি তখন সেজদায় গেলেন মাটিতে আসন পেতে।
আল্লাহ্ বলেন, ওগো সুলায়মান এবার মাথা তোলো,
সৃষ্টিজগতের প্রতিপালক আমি, কী চাই তোমার বলো?
নবি বললেন, ওগো প্রভূ! তুমি মহান অসীম দয়াময়,
নাই কিছু চাওয়ার আমার, আমি চাই শুধু তোমায়।
খাওয়ান আল্লাহ্ অগণিত মানুষ, কীটপতঙ্গ পশু পক্ষিকে,
বিপুল খাদ্য খায় হাতি, আরও বেশি খাওয়ান বিশাল তিমিকে।
সবার রিজিকদাতা মহান আল্লাহ্, তাতে নাই কোনো সন্দেহ,
এমন মহান প্রভূ তিনি, তাঁর সমকক্ষ আর নাইতো কেহ।
মহান স্রষ্টা পরম দয়ালু, নাইকো দয়ার শেষ তাঁর,
আমি অধম, ধরে মোর্শেদের কদম, ক্ষমা চাই দরবারে আল্লাহ্র।
প্রভুর দয়া এত অসীম, যা বলে শেষ করা নাহি যায়,
বান্দার প্রতি দয়ার হাত বাড়িয়ে আছেন প্রভু দয়াময়।
পাহাড় পরিমাণ গুনাহ করেও যদি কেউ করে অনুতাপ,
খালেছ নিয়তে করলে তওবা, আল্লাহ্ করেন মাফ।
বনি ইসরাইলের কোনো এক ব্যক্তি একশ’টি খুন করে,
অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমার লাগি চললো অলীর দরবারে।
মৃত্যু হলো পথিমধ্যে তার দরবারে পৌঁছার আগে,
ঐ বান্দার লাগি মহান আল্লাহ্র মনে প্রেমের বন্যা জাগে।
রাসুলের বাণী, আল্লাহ্র দয়া ও রহমতের নেইকো শেষ,
তাঁর কাছে চাইলে ক্ষমা তিনি মাফ করেন গুনাহ অশেষ।
সূফী সম্রাট বলেন, তওবা করে স্রষ্টার কাছে যেজন ক্ষমা চায়,
পরম দয়ালু আল্লাহ্র দয়া ও রহমত সে পাবে নিশ্চয়।
এমন মহান স্রষ্টার কথা বান্দা ভুলে কি যেতে পারে?
জীবনে মরণে সকল কর্মে যেন মোরা স্মরণ করি তাঁরে।
শেষে আল্লাহ্র কাছে দুহাত তুলে জানাই ফরিয়াদ,
সারাটি জীবন সুস্থ রেখো, মরণের পরে দিও নাজাত।